অ্যামনেস্টির বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা প্রসঙ্গে যে প্রশ্ন সামনে আসে সেটা হলো, রাষ্ট্রদ্রোহিতার প্রকৃত সংজ্ঞা কি? বাক-স্বাধীনতা কি তার সমার্থক? অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া মনে করে, সরকার রাষ্ট্রদ্রোহীতা আইনের অপব্যবহার করছে৷
বিজ্ঞাপন
গত শনিবার ব্যাঙ্গালুরুতে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া আয়োজিত ‘কাশ্মীরে মানবাধিকার লংঘন' শীর্ষক এক আলোচনাচক্রে উপস্থিত বক্তাদের মধ্যে মতভেদকে কেন্দ্র করে ‘আজাদ কাশ্মীর' ইত্যাদি ভারত-বিরোধী শ্লোগান দেওয়া হয়৷ তাতে বিজেপির বিক্ষুব্ধ ছাত্র শাখা পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করে৷
স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় শাখার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে মামলা দায়ের করায় অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া তার প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন শহরে তাদের সবকটি শাখা আপাতত নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রেখেছে৷ সংস্থাটির মতে, তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন৷ ব্যাঙ্গালুরুতে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া কাশ্মীরে মানবাধিকার সংক্রান্ত এক আলোচনাচক্রের আয়োজকমাত্র৷ সেখানে দেশবিরোধী শ্লোগান তোলার সঙ্গে সংস্থা বা তার কোনো কর্মী জড়িত নয়৷ শান্তিপূর্ণভাবে নিজের রাজনৈতিক মত প্রকাশ করাও বাক-স্বাধীনতার মধ্যেই পড়ে৷ উগ্র জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলির চাপে নিজস্ব মত প্রকাশের পরিসর ক্রমশই সীমিত হচ্ছে৷ গণতন্ত্রিক ভারতে এসব বড়ই বেমানান বলে মনে করে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ৷
কাশ্মীর সমস্যার সমাধান কি সম্ভব?
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সহিংসতা আবারো এই প্রশ্নকে উস্কে দিয়েছে৷ কি চায় কাশ্মীরের জনগণ? আর ভারত সরকার কি সেখানকার পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে? কাশ্মীরের বর্তমান সংকট নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images/AFP/T.Mustafa
সংঘর্ষের সূত্রপাত
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৮ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে কথিত সংঘর্ষে স্থানীয় হিজবুল মুজাহিদীন কমান্ডার বুরহান ওয়ানি নিহত হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে৷ বুরহান নিহত হওয়ার প্রতিবাদে হাজার হাজার ক্ষুব্ধ জনতা সড়কে নেমে নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর ইট পাটকেল ছুড়লে পাল্টা গুলি চলে তাদের ওপর৷ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৪০ এরও বেশি নিহত হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Yasin
কারফিউয়ে জনজীবন অচল
কাশ্মীরি নেতাদের বনধের ডাকে সমগ্র কাশ্মীর উপত্যকার জনজীবন স্তব্ধ হয়ে গেছে৷ কারফিউ জারি করেও নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছে না প্রতিবাদকারীদের৷ অন্যদিকে, খাবার ও ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে৷ মোবাইল ও ইন্টারনেট এবং ট্রেন সার্ভিস বন্ধ রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
আরো সেনা মোতায়েন
সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে চলতি সপ্তাহে ওই অঞ্চলে বাড়তি ৮শ’ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
নিহতদের বেশিরভাগই তরুণ
সাম্প্রতিক সহিংসতার নিহত ৪৪ জনের মধ্যে বেশিরভাগই বয়সে তরুণ৷ তাদের বয়স ১৬ থেকে ২৬ বছরের মধ্যে৷ আহতদের মধ্যে অনেক শিশু ও নারী রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে শতাধিক মানুষ
চিকিৎসকদের আশঙ্কা, কারফিউয়ের কারণে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং রক্তের অভাবে আরো অনেকের মৃত্যু হতে পারে৷ প্রায় শতাধিক মানুষের চোখে শটগানের গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছেন তারা৷ দ্রুত চিকিৎসা না হলে তারা দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন৷
ছবি: Reuters/D.Ismail
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক
কাশ্মীরে চলমান সহিংসতা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তান অভিযোগ করায় দু’পক্ষের সম্পর্ক আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে৷ পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ভারত সরকারের অস্বস্তি বেড়েছে৷ ইসলামাবাদে সার্কভুক্ত দেশগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ যাবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Press Information Bureau
চাপে মোদী সরকার
কাশ্মীর পরিস্থিতির কারণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী অভ্যন্তরীণ চাপের মুখেও পড়তে পারেন বলে সরকারের একাংশের আশঙ্কা৷ প্রশ্ন উঠতে পারে, মোদীর পাকিস্তান নীতি নিয়েও৷ নরেন্দ্র মোদী সরকারের শুরুটাই হয়েছিল পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির বার্তা দিয়ে৷ পাঠানকোট হামলার পর পরিস্থিতি বদলে যায়৷ আর কাশ্মীর ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিন্দায় চাপে পড়েছে মোদী সরকার৷
ছবি: DW/J. Akhtar
কাশ্মীর কার ভূখণ্ড?
ভারত ও পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রই কাশ্মীরকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে৷ দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে ওই অঞ্চলটি নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে আছে পরমাণু শক্তিধর এই দুই রাষ্ট্র৷ এই সময়ের মাঝে দুটি দেশই দুইবার বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
যে কারণে সহিংসতা
মুসলিম অধ্যুষিত ওই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী কাশ্মীরের স্বাধীনতার লক্ষ্যে অস্ত্র তুলে নেয়৷ এরপর থেকে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি এবং সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায়ই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কাশ্মীর পরিস্থিতি৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Tauseef
9 ছবি1 | 9
যেভাবে ঘটনার শুরু
কীভাবে এই ঘটনাক্রমের সূত্রপাত ? কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে যেসব পরিবার মানবাধিকার লংঘনের শিকার হয়েছে, তাদের ন্যায়বিচার নিয়ে এক আলোচনা চক্রের আয়োজন করে অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়া৷ ২০১৫ সালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টকে ভিত্তি করেই এই আলোচনাচক্র৷ তাতে কাশ্মীরে মানবাধিকার লংঘন সংক্রান্ত পুলিশ রিপোর্টের পাশাপাশি ছিল, ‘তথ্য জানার অধিকার' আইনে পাওয়া তথ্যাদি এবং কাশ্মীরের বিভিন্ন পরিবারের সাক্ষাত্কার৷ উপস্থিত বক্তাদের মধ্যে দুভাগ৷ একপক্ষ কাশ্মীরের স্বায়ত্ত্বশাসনের দিকে, অপরপক্ষ কাশ্মীরের হিন্দু পন্ডিত সম্প্রদায়, যাঁরা কাশ্মীরে তাঁদের ভিটে মাটি থেকে বিতাড়িত হয়েছে৷
কাশ্মীর ছেড়ে আসতে বাধ্য হওয়া হিন্দু পণ্ডিতরা আলোচনাচক্রে বিপরীত মত প্রকাশ করেন৷ উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে ওঠে যখন সেনাবাহিনীর বিশেষ অধিকার আইনের বলে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিরীহ পরিবারগুলি কিভাবে মানবাধিকার লংঘনের বলি হয় তার কাহিনী তোলা হয়৷ কাশ্মীরি পন্ডিত সমাজ তা খন্ডন করে বলেন, ‘‘ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গি দমনে অনেক সংযত এবং অনেক শৃংখলাপরায়ন৷'' তখন তুমুল হৈ হট্টগোলের মধ্যে কিছু লোক ‘আজাদ কাশ্মীর' ইত্যাদি ভারত বিরোধী শ্লোগান তোলে৷
বিজেপির ছাত্র ও যুব সংগঠন এবিভিপি ‘ভারত মাতা কী জয়' বলে পাল্টা শ্লোগান দেয় এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে পুলিশ তার ভিত্তিতেই অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে৷ কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন, বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্তের প্রয়োজন আছে৷
বাকস্বাধীনতা যেখানে যেমন
আপনার দেশে বাকস্বাধীনতা পরিস্থিতি কেমন? ডয়চে ভেলের দুই সাংবাদিক এই প্রশ্ন করেছিলেন সদ্য সমাপ্ত গ্লোবাল মিডিয়া ফোরামে আগত বিভিন্ন দেশের ব্লগার, সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্টদের৷
ছবি: DW/A. S. Brändlin
শাম্মী হক, অ্যাক্টিভিস্ট, বাংলাদেশ
‘‘বাংলাদেশের মানুষ তাদের মনের কথা বলতে পারেন না৷ সেখানে কোনো বাকস্বাধীনতা নেই এবং প্রতিদিন পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে৷ একজন সামাজিক অ্যাক্টিভিস্ট এবং ব্লগার হিসেবে আমি ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করি, যা ইসলামিস্টরা পছন্দ করেনা৷ তারা ইতোমধ্যে ছয় ব্লগারকে হত্যা করেছে৷ ফলে আমি দেশ ছাড়তে বাধ্য হই৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ভেনেজুয়েলা
‘‘বাকস্বাধীনতা হচ্ছে এমন এক ধারণা যার অস্তিত্ব আমার দেশে নেই৷ সাংবাদিকরা জরিমানা আর নিজের জীবনের উপর ঝুঁকি এড়াতে সরকারের সমালোচনা করতে চায়না৷ সরকারের সমালোচনা করলে সাংবাদিকদের বিচারের মুখোমুখি হতে হয়৷ এরকম পরিস্থিতির কারণে অনেক সাংবাদিক দেশ ছেড়ে চলে গেছেন৷ দেশটির আশি শতাংশ গণমাধ্যমের মালিক সরকার, তাই সাধারণ মানুষের মত প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
রোমান দবরোখটভ এবং একাতেরিনা কুজনেটসোভা, সাংবাদিক, রাশিয়া
রোমান: ‘‘রাশিয়ায় সরকার আপনাকে সেন্সর করবে৷ আমাদের ওয়েবসাইটটি ছোট এবং লাটভিয়ায় নিবন্ধিত৷ ফলে আমি সেন্সরশিপ এড়াতে পারছি৷ তা সত্ত্বেও সরকার মাঝে মাঝে আমাদের সার্ভারে হামলা চালায়৷’’ একাতেরিনা: ‘‘রাশিয়ায় বাকস্বাধীনতার কোনো অস্তিত্ব নেই৷ ইউরোপের মানুষ রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে স্বাধীন৷ আমি আশা করছি, রাশিয়ার পরিস্থিতিও বদলে যাবে৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, সিরিয়া
‘‘বেশ কয়েক বছর ধরেই সিরিয়ায় বাকস্বাধীনতার কোনো অস্তিত্ব নেই৷ এমনকি আসাদের শাসনামল সম্পর্কে অনুমতি ছাড়া মতামতও প্রকাশ করা যায়না৷ এটা নিষিদ্ধ৷ কেউ যদি সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাহলে খুন হতে পারে৷ আমি যদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনামূলক কিছু লিখি, তাহলে বেশিদিন বাঁচতে পারবো না৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
আয়েশা হাসান, সাংবাদিক, পাকিস্তান
‘‘পাকিস্তানে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা’ শব্দ দু’টি খুবই বিপজ্জনক৷ এগুলোর ব্যবহার আপনার ক্যারিয়ার বা জীবন শেষ করে দিতে পারে৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
রাবা বেন দউখান, রেডিও সাংবাদিক, টিউনিশিয়া
‘‘আমাদের অভ্যুত্থানের একমাত্র ফল হচ্ছে বাকস্বাধীনতা৷ আমরা এখন আমাদের সরকারের সমালোচনা করার ব্যাপারে স্বাধীন৷ এবং আমি যখন আমাদের অঞ্চলের অন্য দেশের বাসিন্দাদের বাকস্বাধীনতার কথা জিজ্ঞাসা করি, তখন একটা বড় ব্যবধান দেখতে পাই৷ আমাদের দেশে দুর্নীতিসহ নানা সমস্যা আছে সত্যি, তবে বাকস্বাধীনতা কোনো সমস্যা নয়৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
খুসাল আসেফি, রেডিও ম্যানেজার, আফগানিস্তান
‘‘বাকস্বাধীনতা আফগানিস্তানে একটি ‘সফট গান৷’ এটা হচ্ছে মানুষের মতামত, যা সম্পর্কে সরকার ভীত৷ এটা চ্যালেঞ্জিং হলেও আমাদের প্রতিবেশীদের তুলনায় আমাদের অবস্থা ভালো৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
সেলিম সেলিম, সাংবাদিক, ফিলিস্তিন
‘‘ফিলিস্তিনে সাংবাদিকদের খুব বেশি স্বাধীনতা নেই৷ একটা বড় সমস্যা হচ্ছে, সাংবাদিকরা মুক্তভাবে ঘোরাফেরা করতে পারে না৷ ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করছে৷ তারা যদি ফেসবুকে তাদের মতামত জানায়, তাহলেও সরকার গ্রেপ্তার করে৷ তবে সিরিয়া বা ইরাকের চেয়ে অবস্থা ভালো৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
অনন্য আজাদ, লেখক, বাংলাদেশ
‘‘আমাদের দেশে কোনো বাকস্বাধীনতা নেই৷ আপনি ইসলাম বা সরকারের সমালোচনা করে কিছু বলতে পারবেন না৷ ইসলামী মৌলবাদীরা ঘোষণা দিয়েছে, কেউ যদি ইসলামের সমালোচনা করে, তাহলে তাকে হত্যা করা হবে৷ আমি একজন সাংবাদিক এবং গত বছর আমাকে ইসলামিস্ট জঙ্গিরা হত্যার হুমকি দিয়েছে৷ ফলে আমাকে দেশ থেকে পালাতে হয়েছে৷’’
ছবি: DW/A. S. Brändlin
9 ছবি1 | 9
রাষ্ট্রদ্রোহিতার সংজ্ঞা নিয়ে রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজ দ্বিধাবিভক্ত৷ কংগ্রেস মনে করে, দেশবিরোধী শ্লোগান দিলেই তা রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনের এক্তিয়ারে পড়ে না৷ বিজেপি মনে করে, দেশের অখণ্ডতার দিকে আঙ্গুল তোলাটাও রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনের মধ্যেই পড়ে৷ উল্লেখ্য, দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে অনুরুপ শ্লোগান তোলার ঘটনায় পুলিশ জেএনইউ-এর ছাত্র নেতা কানাইয়া কুমার এবং অন্য কয়েকজনকে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছিল৷ সত্যিই তাঁরা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী কিনা তার চূড়ান্ত রায় আদালত এখনও দেননি৷ সুশীল সমাজের একাংশ মনে করেন, রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইনের ১২৪-এ ধারা ইচ্ছামত প্রয়োগ করে মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে, এক নৈরাজ্যের বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে৷ বাক-স্বাধীনতা আর রাষ্ট্রদ্রোহিতার মধ্যে যে ফারাক আছে আদালতকেই তা স্থির করতে হবে৷
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অ্যামনেস্টির ভারতীয় শাখার বিদেশি অনুদান সম্পর্কে কিছু সন্দেহ দেখা দেওয়ায় সে বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ সরকারের সন্দেহ, বিদেশি ডোনেশনের অপব্যবহার করা হচ্ছে৷ ভারতের সম্প্রীতি নষ্ট করে বিদেশে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হচ্ছে৷
এই প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রাক্তন ভারতীয় শীর্ষব্যক্তির মন্তব্যেও তার অনুরণন পাওয়া যায়৷ এই এনজিও নাকি মতাদর্শের দিক থেকে দেউলিয়া হয়ে গেছে৷ মানবাধিকারের চেয়ে জেহাদিদেরকেই বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে৷ অ্যামনেস্টির ইতিহাস বলছে, প্যালেস্টাইনে মানবাধিকার রক্ষার চেয়ে জেহাদি হামাসকেই সমর্থন করা হয়েছে বেশি, এমনটাই মনে করেন তিনি৷ মতাদর্শগত কারণেই তিনি ঐ সংস্থা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন তিনি৷