গত নভেম্বরে ইরানে অন্ততপক্ষে ৩০৪ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছিল৷ মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সংশোধিত হিসাবে বলা হয়েছে, আহতের সংখ্যা ছিল হাজারের বেশি৷
বিজ্ঞাপন
এর আগে তাদের রিপোর্ট ছিল, গত নভেম্বরে ইরানে ২০৮ জন বিক্ষোভকারীকে মারা হয়েছিল। কিন্তু অ্যামনেস্টির সংশোধিত রিপোর্ট অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যাটা তিনশা ছাড়িয়ে গিয়েছে৷ ইরানে নিযুক্ত অ্যামেরিকার বিশেষ প্রতিনিধি তখন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে৷ তিনদিন ধরে বিক্ষোভকারীরাপ্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ইরানে৷
অ্যামনেস্টি তাদের রিপোর্টে বলেছে, তারা ভিডিও বিশ্লেষণ করে এবং লোকের সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। গত ১৫ থেকে ১৮ নভেম্বর রেভলিউশনারি গার্ড ও মিলিশিয়া কী ভয়ঙ্কর তাণ্ডব চালিয়েছে সেই তথ্য তাদের কাছে আছে। বেশির ভাগ মৃত্যু হয়েছে মাথায়, বুকে, গলায় গুলি করার ফলে। তাই বোঝা যাচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করার উদ্দেশ্য নিয়েই গুলি চালিয়েছিল। তারপর লোকে যাতে এই ঘটনা নিয়ে সোচ্চার না হয়, সে জন্য তারা ব্যাপক ধরপাকড় করে৷
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ''১৫ নভেম্বর দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হওয়ার পরেই হাজার হাজার প্রতিবাদকারীকে গ্রেফতার করা হয়৷ তার মধ্য়ে সাংবাদিক, মানবাধাকির কর্মী ও ছাত্ররাও ছিলেন। যাতে তাদের এই দমনের কথা লোকে জানতে না পারে, সে জন্যই এত লোককে গ্রেফতার করা হয়৷ কিছু লোককে হাসপাতাল থেকে ধরা হয়েছিল, আটক থাকা অবস্থায় তাদের চিকিযসার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি৷'' আমেরিকার ফের নিষেধাজ্ঞা জারির পর ইরানে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তারই প্রতিবাদে বিক্ষোভ হচ্ছিল৷
ইরাকে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত সাড়ে তিনশ নিহত
অক্টোবরের প্রথম দিন থেকে ইরাকের রাজধানী বাগদাদ ও দক্ষিণাঞ্চলীয় কয়েকটি শহরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়৷ এখন পর্যন্ত অন্তত সাড়ে তিনশ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে৷
ছবি: Reuters
বিক্ষোভের কারণ
২০০৩ সালে সুন্নি নেতা সাদ্দাম হুসেনের পতনের পর থেকে ইরাক শাসন করছেন শিয়া নেতৃবৃন্দ৷ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং সরকারের উপর ইরানের প্রভাবের অভিযোগ এনে অক্টোবরের ১ তারিখ বাগদাদে বিক্ষোভ শুরু হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Al-Rubaye
ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সংস্কার ও দুর্নীতি দূর করার অঙ্গীকার করেছিলেন৷ কিন্তু সেটি বাস্তবায়নে তাঁর তেমন আগ্রহ দেখতে না পেয়ে বিক্ষোভ বাগদাদ ছাড়িয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় কয়েকটি শহরেও ছড়িয়ে পড়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Al-Rubaye
হতাহত
প্রায় দুই মাসের এই বিক্ষোভে অন্তত সাড়ে তিনশ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে পুলিশ ও চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে৷ বৃহস্পতিবার ভোরে দক্ষিণাঞ্চলীয় নাসিরিয়া শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ২২ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে৷
ছবি: Reuters
ইরানি কনস্যুলেটে আগুন
ইরাকের বর্তমান সরকারের উপর ইরানের প্রভাবের অভিযোগে বুধবার সন্ধ্যায় নাজাফের ইরানি কনস্যুলেটে আগুন ধরিয়ে দেন (ছবি) বিক্ষোভকারীরা৷ তবে কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে যাওয়ায় কেউ আক্রান্ত হননি৷ বিক্ষোভকারীদের থামাতে পুলিশ গুলি চালালে একজন নিহত ও ৩৫ জন আহত হন৷ এই ঘটনার পর নাজাফে কারফিউ জারি করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters
ইরানের নিন্দা
কনস্যুলেটে আগুন লাগানোর ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ইরান৷ ইরাক সরকারের কাছ থেকে ‘দায়িত্বশীল, শক্ত ও কার্যকর’ প্রতিক্রিয়াও আশা করছে দেশটি৷
ছবি: Reuters
ক্রাইসিস সেল গঠন
বিক্ষোভ থামাতে সামরিক বাহিনী ও সাধারণ নাগরিকদের সমন্বয়ে একটি ক্রাইসিস সেল গঠন করা হয়েছে৷