যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যে বিবৃতি দিয়েছিল, তা প্রত্যাহার ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য তাদের ক্ষমা চাইতে বলেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ নয়ত তা হবে মুক্তিযুদ্ধের অপমান৷
বিজ্ঞাপন
[No title]
গত ২৭শে অক্টোবরে দেয়া সেই কড়া বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার ও আপিল প্রক্রিয়াকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যেসব মুক্তিযোদ্ধা ‘মানবতাবিরোধী' অপরাধ করেছেন, তাঁদেরও বিচারের আওতায় আনার দাবি করে৷ শুধু তাই নয়, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় স্থগিত করে স্বচ্ছ বিচারের আহ্বানও জানায় তারা৷
আপিলেও বহাল সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি
অনেকের জন্য গত কয়েকটি দিন ছিল অধীর আগ্রহ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষার৷ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়৷ মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে সাকা চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
৯টি অভিযোগ প্রমাণিত, চারটিতে মৃত্যুদণ্ড
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগও বহাল রেখেছে৷ এর আগে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের ২৩টি অভিযোগের মধ্যে ৯টি সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণিত হয়৷ ৯টির মধ্যে চারটি অপরাধের জন্যয় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় বিশেষ আদালত৷ তবে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন৷ বুধবার আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সেই চার অভিযোগ
যে চারটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো, চট্টগ্রামের কুন্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠিাতা অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহকে, রাউজানের সুলতানপুর গ্রামের তিনজনকে, রাউজানের ঊনসত্তরপাড়ায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে এবং চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজাফফর আহম্মদ ও তাঁর ছেলে শেখ আলমগীরকে হত্যা করা৷
ছবি: Farjana K. Godhuly/AFP/Getty Images
সাকা’র ছেলের দাবি
আপিলের রায় ঘোষণার পর সালাহদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী (মাঝে) বলেন, ‘‘আমার বাবা একজন নির্দোষ মানুষ৷ আশা করি, একদিন না একদিন প্রমাণ হবে যে তিনি নির্দোষ৷’’
ঢাকার শাহবাগে আপিলের রায় ঘোষণার আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী, সমর্থক এবং সাধারণ মানুষ৷ তাই ‘সাকার ফাঁসির আদেশ বহাল থাকছে’ – এই খবর পৌঁছানোর পর সেখানেও শুরু হয় আনন্দ৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
‘সাকা’র শাস্তি না হলে জাতি হতাশায় নিমজ্জিত হতো’
বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘‘সাকা চৌধুরীর ফাঁসির এই রায় প্রত্যাশিত ছিল৷ এ শাস্তি না হলে পুরো জাতি হতাশায় নিমজ্জিত হতো৷ এখন বাকি আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলেই রায় রাস্তবায়ন হবে৷’’ তিনি আরো জানান, ‘সাকা চৌধুরী একাত্তরে দেশে ছিলেন না’ – এমন বক্তব্য সর্বোচ্চ আদালত গ্রহণ করেনি৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
আইনজীবীর আশা
তবে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন যে, রায়ের কপি পেলে তাঁরা রিভিউ আবেদন করবন৷ তিনি বলেন, ‘‘যেসব অভিযোগে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে, আমরা আশা করি, রিভিউ-এর মাধ্যমে সেগুলো থেকে সাকা চৌধুরী খালাস পাবেন৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
7 ছবি1 | 7
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে পাঠানো প্রতিবাদে বলেছে, ‘বিবৃতির শেষাংশে অ্যামনেস্টি বলেছে যে, ১৯৭১ সনে স্বাধীনতাপন্থি বাহিনীও গুরুতর অপরাধ করেছিল৷ কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত কিংবা তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি৷' – এই বিবৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে৷ এ জন্য তাদের ক্ষমা চাইতে হবে৷
প্রতিবাদে আরো বলা হয়, ‘যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনাল দেশীয় আদালত হলেও ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অফ সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস (আইসিসিআরপি) এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম আইনের মান অনুসরণ করে চলেছে৷ তাছাড়া বিচারাধীন দু'টি মামলার বিষয়ে অ্যামনেস্টি বিবৃতি দিয়েছে৷ বিচারধীন বিষয় নিয়ে সরকার বিশেষ কোনো মন্তব্য করবে না৷'
[No title]
ওদিকে জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ সাতটি অভিযোগের মধ্যে চারটিতে এবং বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ২৩টি অভিযোগের মধ্যে ৯টিতে অভিযুক্ত হয়েছেন৷ বলা হয়, ‘বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিশ্বের একমাত্র আদালত যেখানে যুদ্ধাপরাধীদের আপিলের সুযোগ দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আইসিটি-র মৃত্যুদণ্ড কমানোরও নজির রয়েছে৷'
এ নিয়ে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের কথা বলে অ্যামনেস্টি যে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে, তার জন্য তাদের ক্ষমা চাইতেই হবে৷ তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে৷''
একাত্তরে ‘মিরপুরের কসাই’ খ্যাত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি বৃহস্পতিবার রাতে কার্যকর করা হয়েছে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলো৷ মোল্লার ফাঁসি নিয়ে তৈরি আমাদের বিশেষ ছবিঘর৷
ছবি: AP
অবশেষে ফাঁসি
৪৮ ঘণ্টা ধরে নানা নাটকীয় পরিস্থিতির পর ১২ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়৷ এর আগে মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ মুহূর্তে বিচারকের নির্দেশে তা স্থগিত হয়৷ মোল্লাকে এভাবে ফাঁসি না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, জার্মানি সহ অন্যান্যরা৷
ছবি: picture-alliance/AA
শেষ দেখা
বৃহস্পতিবার ফাঁসির রায় কার্যকরের কিছুক্ষণ আগে কাদের মোল্লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার পরিবারের সদস্যরা৷ এসময় জেলগেটে কাদের মোল্লার ছেলে হাসান জামিল বলেন, ‘‘ইসলামী আন্দোলন করার কারণেই আমার পিতাকে ফাঁসির দণ্ড দেয়া হয়েছে৷’’
ছবি: Reuters
গ্রেপ্তার, দম্ভোক্তি
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০০৮ সালে ঢাকার একটি থানায় দায়ের করা মামলায় ২০১০ সালের জুলাইয়ে গ্রেপ্তার হন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লা৷ পরবর্তীতে কারাগারে দাঁড়িয়ে তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘বাংলাদেশ হয়েছে বলে অনেকের মাতব্বরি বেড়ে গেছে৷’’
ছবি: Reuters
যত অভিযোগ
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মোট ৬টি অপরাধ বিবেচনায় নেয়া হয়৷ এগুলো হলো পল্লবি এলাকার গণহত্যা, কবি মেহেরুননিসা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তালিব হত্যা, কেরানীগঞ্জের ভাটার চর ও ভাওয়াল খানবাড়ি হত্যাকাণ্ড, আলুব্দি গণহত্যা এবং মিরপুরের হযরত আলি পরিবারে গণহত্যা৷ এর সঙ্গে লুটতরাজ, ধর্ষণ এবং ধ্বংসযজ্ঞের অভিযোগও আছে৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: Archiv Rowshan Jahan Shathi
প্রথমে যাবজ্জীবন, পরে মৃত্যুদণ্ড
ছয়টি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে কাদের মোল্লার অপরাধ প্রমাণিত হয়৷ এর প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে৷ সেসময় কাদের মোল্লা আদালত থেকে বের হওয়ার সময় ‘বিজয় চিহ্ন’ দেখান৷ এতে সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়৷ পরবর্তীতে আপিলের ভিত্তিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় সর্বোচ্চ আদালত৷
ছবি: Strdel/AFP/Getty Images
দাফন সম্পন্ন
বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর মাইক্রোবাসে করে কাদের মোল্লার মরদেহ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের করা হয়৷ বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম লিখেছে, ‘‘স্থানীয় সময় রাত ৪টার দিকে ফরিদুপরের আমিরাবাদ গ্রামে লাশ পৌঁছানোর পর জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়।’’
ছবি: Mustafiz Mamun
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া
কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সৃষ্টি হওয়া শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চে আবারো ভিড় করেছেন অসংখ্য মানুষ৷ মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর সেখানে উপস্থিত জনতা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে৷
ছবি: Reuters
‘‘জাতি আজ কলঙ্ক মুক্ত হলো’’
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার ডয়চে ভেলেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘জাতি আজ কলঙ্ক মুক্ত হলো৷ ৪২ বছর পরে হলেও একজন যুদ্ধাপরাধীর দণ্ড কার্যকর হলো৷’’ তিনি আশা করেন, সব যুদ্ধাপরাধীর দণ্ডই কার্যকর হবে৷
ছবি: privat
জার্মানির প্রতিক্রিয়া
এর আগে, বৃহস্পতিবার জার্মানির মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার মার্কুস ল্যোনিং এক বিবৃতিতে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না করতে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন৷ তিনি বলেছিলেন, জার্মানি নীতিগতভাবে মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না৷ তাই ফাঁসির পরিবর্তে কারাদণ্ড দেবার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি৷
ছবি: dapd
ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্ক
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০১০ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করে৷ তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিরোধী দল বিএনপি মনে করে, সরকার বিরোধী দলকে দুর্বল করতে এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করেছে৷ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এই ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
তাঁর কথায়, ‘‘অ্যামনেস্টি মানবাধিকার সংগঠন হিসেবে নিজেকে দাবি করলেও, ঐ বিবৃতির মাধ্যমে মানবাধিকারের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে৷ পক্ষ নিয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের৷ তারা চায় বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের কোনো বিচার না হোক৷ এই বিচার ভণ্ডুলের জন্য নেমেছে তারা৷ তাদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে গেছে এই বিবৃতির মাধ্যমে৷''
রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘‘অ্যামনেস্টির কথা মেনে নিলে ন্যুরেমব্যার্গ ট্রায়েলের যাঁরা আয়োজন করেছিলেন, তাঁদেরও বিচারের আওতায় আনতে হয়৷''
জেগে আছে প্রজন্ম চত্বর
মূল দাবি একটাই, ‘যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই’৷ এই দাবি নিয়ে পাঁচই ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগ চত্বরে অবস্থান করছে তরুণ প্রজন্ম৷ তাদের সমর্থন জানাচ্ছে সবশ্রেণির মানুষ৷ ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে বেশ কয়েকদিন৷ কিন্তু এক চুল নড়েনি তারা৷
ছবি: Reuters
লাগাতার আন্দোলন
শাহবাগে অবস্থান নেওয়া তরুণ প্রজন্ম গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি ধরে লাগাতার তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে৷ যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে অনড় তারা৷ ডয়চে ভেলের ওয়েবসাইটে নিয়মিত সেখানকার হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জাতীয় দলের আগমন
রবিবার প্রজন্ম চত্বরে এক টুকরো আনন্দের উপলক্ষ্য হয়ে এসেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা৷ আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল, শাহবাগে অবস্থান নেওয়া ব্লগার, তরুণ সমাজের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে আসছেন তাঁরা৷ রবিবার সেই খবরের সত্যতা প্রকাশ পেলো৷
ছবি: REUTERS
টুইটার লড়াই
হ্যাশট্যাগ #shahbag, কেউ কেউ ব্যবহার করছেন #shahbagh - আসলে শাহবাগের ইংরেজি বানান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে৷ উইকিপিডিয়া শেষের এইচটি বাদ দিলেও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সেটি ধরে রেখেছে৷ এই বিভ্রান্তি অবশ্য টুইটার লড়াইকে পেছনে ফেলেনি৷ বরং সমানতালে দু’টি হ্যাশটাগ দিয়েই জানানো হচ্ছে আন্দোলনের অগ্রগতি৷
ছবি: REUTERS
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ‘শোধরানোর’ চেষ্টা
শাহবাগের প্রতিবাদ কি যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে না ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে? বিবিসি ইংরেজি বিভাগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের শিরোনামে এই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল৷ টুইটারে আন্দোলনকারীদের অব্যাহত দাবির পর সেই শিরোনামে বদল এসেছে৷ ইসলামপন্থী বাদ দিয়ে যুদ্ধাপরাধ শব্দটি জোড়া হয়েছে সেখানে৷ এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আমারব্লগ৷
ছবি: amarblog.com
‘শাহবাগ সাইবার যুদ্ধ’
প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান করছেন ‘শাহবাগ সাইবার যুদ্ধ’ দলের অনেক সদস্য৷ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধীদের চরম শাস্তির দাবিকে আরো সোচ্চার করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা৷ পাশাপাশি প্রজন্ম চত্বরের সর্বশেষ পরিস্থিতিও ইন্টারনেটে তুলে ধরা হচ্ছে এদের মাধ্যমে৷
ছবি: REUTERS
‘আপনার সহায়তা প্রয়োজন’
ডয়চে ভেলের টুইটার পাতাতে আন্দোলনকারীদের কিছু বার্তা আমরা পেয়েছি৷ জিন্নাত গোনিম নামক ঢাকার এক বাসিন্দা টুইটারে লিখেছেন, ‘‘আমরা কোন রাজনৈতিক দল, ধর্ম বা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নই৷ আমরা বাংলাদেশি৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাচ্ছি, আমার মায়ের হত্যাকারীর, বোনের ধর্ষকের বিচার চাচ্ছি৷ আমাদের আপনার সহায়তা প্রয়োজন৷’’
ছবি: twitter.com
এই প্রজন্মের নারী মুক্তিসেনাদের লড়াই
গত কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে নিচ্ছেন লাকি আক্তার৷ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী আন্দোলন শুরুর দিন থেকে রয়েছেন শাহবাগে৷ তাঁর মতো আরো কয়েকজন নারী মুহুর্মুহু শ্লোগানে কাপিয়ে তুলছেন প্রজন্ম চত্বর৷ বিভিন্ন স্কুলকলেজের ছাত্রীরা মাঝেমাঝে হাজির হচ্ছেন আন্দোলনে৷
ছবি: REUTERS
‘ফাঁসির মঞ্চ’ প্রস্তুত
‘রাজাকারের ফাঁসি চাই’ - এই হচ্ছে প্রজন্ম চত্বরে আন্দোলনরতদের মূল দাবি৷ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করলে তা প্রত্যাখ্যান করে তরুণ প্রজন্ম৷ তারা চায় ফাঁসির আদেশ৷ শাহবাগে প্রতীকী ‘ফাঁসির মঞ্চ’ তৈরি করে যুদ্ধাপরাধীদের চরম শাস্তির অপেক্ষায় আছে ব্লগাররা৷
ছবি: Reuters
সপরিবারের শাহবাগে
শাহবাগে অনেকেই হাজির হচ্ছেন সপরিবারে৷ ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সাহিত্যিক, অধ্যাপক অনেকেই এসেছেন সপরিবারে৷ এই ছবিতে এক শিশুকে দেখা যাচ্ছে শাহবাগ চত্বরে, প্রতিবাদী ব্যানার মাথায় জড়িয়ে৷
ছবি: REUTERS
ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক
‘ট্র্যাইবুনালে কাদের মোল্লার প্রহসনের রায়ের বিরুদ্ধে মহাসমাবেশ’ - এই শিরোনামে পাঁচ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক৷ ব্লগারদের আহ্বানে সেদিন শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে সাধারণ মানুষ৷ এখন এই আন্দোলন আমজনতার৷
ছবি: REUTERS
10 ছবি1 | 10
আপনি কি অ্যামনেস্টিকে সমর্থন করেন? জানিয়ে দিন নীচের ঘরে৷