আকাশেই চালু থাকবে আইপ্যাড
২ নভেম্বর ২০১৩বিমানে উঠলেই ঘোষণা শুনতে হয়, মোবাইল টেলিফোন ব্যবহার করা একেবারেই চলবে না৷ বিমান ওড়া আর নামার সময় বাকি ডিভাইস-ও বন্ধ রাখতে হবে৷ দেখা যায় যাত্রীদের বিরক্ত মুখ৷ কোনো রকমে পকেট, ব্যাগ হাতড়ে ফোন খুঁজে বার করে বন্ধ করার জন্য হুড়াহুড়ি পড়ে যায়৷ মনে প্রশ্ন জাগে, আজকের এই যুগে সামান্য মোবাইল ফোন বা আইপ্যাড কি সত্যি এত বড় বিমানের কলকবজা বিগড়ে দেবার ক্ষমতা রাখে?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এফএএ এই কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করার উদ্যোগ নিচ্ছে৷ এই পরিকল্পনা কার্যকর হলে বিমানযাত্রীরা বেশ কিছু ডিভাইস পুরো ফ্লাইট জুড়েই ব্যবহার করতে পারবেন৷ না, মোবাইল ফোনে কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হচ্ছে না৷ তবে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা ই-রিডার ব্যবহার করা যাবে৷ তবে এই সব ডিভাইস রাখতে হবে ‘এয়ারপ্লেন মোড'-এ৷ অর্থাৎ কোনো মোবাইল পরিষেবার সঙ্গে সংযোগ থাকলে চলবে না৷
এফএএ-র কর্মকর্তা মাইকেল উয়ের্টা বলেন, বেশিরভাগ বাণিজ্যিক বিমান সংস্থার বিমানই ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে নির্গত রেডিও তরঙ্গের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না৷ তাই আগে থেকে ই-বুক বা ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করে বিমানে তা ব্যবহার করা নিরাপদ৷ গেমসও খেলা যেতে পারে৷ এমনকি ব্লু-টুথ সংযোগেও ক্ষতি নেই৷ সমস্যা নেই ওয়্যারলেস মাউস বা হেডফোন নিয়েও৷
অনেক বিমান সংস্থা বিমানের মধ্যেই ওয়াইফাই ইন্টারনেট পরিষেবা দিতে শুরু করেছে৷ ফলে মাশুলের বিনিময়ে ইন্টারনেট সংযোগও যাত্রীদের নাগালে চলে এসেছে৷
তাহলে মোবাইল ফোন কী দোষ করলো? সমস্যা হলো, মোবাইল ফোন সব সময়ে সিগন্যাল খুঁজে চলেছে৷ ছোট জায়গায় অসংখ্য ফোন এমন কাণ্ড করতে থাকলে বিমানের যন্ত্রপাতির উপর কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে এখনো সন্দেহ দূর হয়নি৷ তাছাড়া সিগন্যাল না পেলে ফোনের ব্যাটারি চার্জও তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যায়৷
তবে এমন পরিবর্তনের পেছনে শুধু যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য কাজ করছে না৷ বিমানে ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রবণতা ছড়িয়ে পড়লে কিছু সংস্থার বাণিজ্যিক সাফল্য হুহু করে বেড়ে যাবে৷ যেমন অ্যামেরিকার ‘গোগো ইনকর্পোরেটেড' নামের কোম্পানি অ্যামেরিকার প্রায় ৮০ শতাংশ বিমানে এই পরিষেবা দিয়ে থাকে৷ তাদের হিসেব অনুযায়ী ২০১৩ সালেই প্রায় সাড়ে দশ কোটি ঘণ্টা ‘নষ্ট' হবে৷ কারণ এই সময় বিমানে বসে যাত্রীরা ই-মেল ও ইন্টারনেট দেখার মতো কার্যকলাপ চালাতে পারছেন না৷ ২০১০ সালের তুলনায় যা প্রায় ১০৫ শতাংশ বেশি৷
অতএব আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে পারবে না৷ বিমান সংস্থা যাত্রীদের মনোরঞ্জনের যে ব্যবস্থা করে, তার উপর নির্ভর না করে নিজের ডিভাইস নিয়েই কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন যে কেউ৷ প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগের গতিও বাড়তে চলেছে৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স)