টেক্সাস, অস্টিন, আরকানসাস, ওকলাহোমার অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। তীব্র তুষার ঝড় দেখেছে এই অঞ্চলগুলি। ক্যানাডা থেকে ফের একটি ঝড় আসার আশঙ্কা। আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, আগামী কিছুদিনের মধ্যে রেকর্ড শীত দেখতে পারে টেক্সাস। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যেতে পারে।
গত সপ্তাহে স্পেনের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে তুষার ঝড় ফিলোমেনা। যার জেরে তাপমাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা কমে গিয়েছে। উত্তরে বরফ। দক্ষিণে বন্যা।
ছবি: Meng Dingbo/Xinhua/picture alliance মাদ্রিদের একটি হাসপাতালের বাইরে এভাবেই বরফ জমে গিয়েছে রাস্তায়। হাসপাতালের দরজা খুলতে সাধারণ মানুষ হাত লাগিয়েছেন বরফ পরিষ্কারে।
মাদ্রিদের কেন্দ্রে সিটি সেন্টারের ছবি এখন এমন। বরফে ঢেকে রয়েছে চারদিক।
তুষার ঝড়ের পরে অন্তত দুইজন গৃহহীনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কয়েক ফুট বরফ রাস্তায়। তারই মধ্যে এভাবে মাথার গোঁজার জায়গা খুঁজে নিয়েছেন এক ফুটপাথবাসী।
কোনো স্কি রিসর্টের ছবি নয়, এটাই এখন মাদ্রিদ। গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষ স্কি করছেন শহরের রাজপথে।
তুষার ঝড়ের পর প্রায় ১৫০০ মানুষ রাস্তায় আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের রাস্তায় আটকে গিয়েছিল। প্রায় দুই দিন ধরে তাঁদের সকলকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ফিলোমেনার প্রভাবে কোথাও কোথাও এক মিটার পর্যন্ত তুষারপাত হয়েছিল। এখনো সে সমস্ত জায়গার অবস্থা এরকম। বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে বরফ পরিষ্কার করতে হচ্ছে।
মাদ্রিদ থেকে বুরগোজ যাওয়ার রেললাইনের ছবি। পুরু বরফের তলায় হারিয়ে গিয়েছে লাইন।
শুধু তুষারপাতই নয়, ঝড়ে প্রচুর গাছ ভেঙে গিয়েছে মাদ্রিদ শহরে। এখনো সমস্ত গাছ কেটে সরিয়ে দেওয়া যায়নি।
স্পেনে এখন লা লিগার খেলা চলছে। তুষারপাতের পরে সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। পরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এভাবেই মাঠের বরফ পরিষ্কার করা হয়।
তুষারপাতের পর গোটা স্পেন কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রশাসন চেষ্টা করছে জনজীবন স্বাভাবিক করতে। তারই মধ্যে বরফ নিয়ে খেলছে ছোটরা।
বস্তুত, গত দুইদিন ধরে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই। মার্কিন সংবাদপত্রের রিপোর্ট বলছে, সব মিলিয়ে তিন লাখ ৬০ হাজার গ্রাহকের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। এর মধ্যে শুধুমাত্র অস্টিনেই দেড় লাখ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই গত দুইদিন ধরে। বুধবার ঝড় শুরু হওয়ার পর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। ফলে বাড়িগুলিতে হিটার চালানো যাচ্ছে না। তীব্র ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। রাস্তাঘাটের অবস্থাও ভয়াবহ। এখনো পর্যন্ত ঠান্ডায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগহের ব্যবস্থা যথেষ্ট দ্রুত করা হচ্ছে না। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, প্রবল ঠান্ডায় বরফ সরিয়ে কাজ করতে সময় লাগছে। তবে শুক্রবারের মধ্যে অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ ফিরবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু আবহাওয়াবিদদের নতুন পূর্বাভাস চিন্তায় রেখেছে প্রশাসনকে। ফের তুষার ঝড় হলে বিদ্যুৎ সংযোগ নতুন করে বিচ্ছিন্ন হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। বাইডেন সরকার ইতিমধ্যেই টেক্সাসে অতিরিক্ত সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)
