অ্যামেরিকায় তিন লাখ ৮০ হাজার ভিডিও সরিয়ে দিল টিকটক। এক হাজার ৩০০ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ ঘোষণা করল। কারণ সেখান থেকে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছিল।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প নোটিস দিয়ে রেখেছেন টিকটক-কে। কোনো মার্কিন সংস্থা যদি তাঁদের কিনে নেয় তা হলে ঠিক আছে, না হলে আর কিছুদিন পরে অ্যামেরিকায় টিকটক নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। এই অবস্থায় টিকটক বিপুল পরিমাণ ভিডিও সরিয়ে দিল। বন্ধ করে দিল এক হাজার ৩০০ অ্যাকাউন্ট। কারণ ওই সব অ্যাকাউন্ট থেকে, ভিডিওর মাধ্যমে বর্ণবাদ ও ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছিল। একই কারণে ৬৪ হাজার কমেন্ট বা মতামতও মুছে দেয়া হয়েছে।
অ্যামেরিকায় টিকটকের প্রধান এরিক হান ব্লগ পোস্টে বলেছেন, ''আমাদের লক্ষ্য টিকটক থেকে ঘৃণা ও বিদ্বেষ দূর করা। হয়তো এখনো সব ঘৃণার পোস্ট মুছে দেয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু এর থেকে আমাদের দায়বদ্ধতার পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে।''
আর এই অ্যাপের মালিক বাইটড্যান্স বলেছে, ''যে সব পোস্টে জাতি ভিত্তিক মন্তব্য ছিল, দাসপ্রথা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ছিল, সে সবই মুছে দেয়া হয়েছে।''
সমান্তরাল সংস্কৃতির তারকারা
তাঁরা কেউ গান করেন৷ কেউ নাচ৷ কেউ বা বিউটি টিপস দিয়ে ব্লগ লেখেন৷ টিকটক, ভাইন, ইনস্টাতে তাঁদের কোটি কোটি ফলোয়ার৷ খুব কম বয়সে তাঁরা হয়ে উঠেছেন তারকা, সমান্তরাল সংস্কৃতির তারকা৷
ছবি: Getty Images/EIF & XQ
মজার তারকা
নিজেকে নিয়ে জোকস শেয়ার করতেন ভাইন-এ৷ আর বন্ধু ও পরিবারের লোকেদের প্র্যাংক করতেন৷ ভাইনে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ৮১ লাখ৷ টুইটারে ফলোয়ার এক কোটি ১৩ লাখ৷ ইনস্টাতে দুই কোটি ১০ লাখ৷ ক্যামেরন ডালাসকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি৷ অভিনয় করছেন৷ নেটফ্লিক্সে তাঁকে নিয়ে রিয়্যালিটি শো হচ্ছে 'চেসিং ক্যামেরন'৷
ছবি: Getty Images/J. McCarthy
এক নম্বরে
চার্লি ডামেলিও৷ বয়স মাত্র ১৬৷ টিকটকে ফলোয়ার সাত কোটি ৬৪ লাখ৷ এই মুহূর্তে তিনিই এক নম্বরে৷ গত বছর তিনি তাঁর প্রথম পোস্ট করেন৷ নাচের৷ কিছুদিনের মধ্যেই হইহই করে ফলোয়ারের সংখ্যা বাড়তে থাকে৷ ইনস্টাতেও তাঁর অনুগামী আড়াই কোটির বেশি৷ মাত্র এক বছরের মধ্যেই খ্যাতির চূড়োয়৷ নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে, তিনি এখন টিকটকের রানী৷ বোন ডিক্সি-রও ফলোয়ার প্রচুর৷ ছবিতে বোনের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তাঁকে৷
ছবি: Getty Images/EIF & XQ
অ্যাডিসনের কামাল
অ্যাডিসন রে৷ নাচ করেন৷ মাত্র ১৯ বছর বয়স৷ মূলস্রোত থেকে তিনি উঠে আসেননি৷ তিনি টিকটক তারকা৷ তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা পাঁচ কোটি ৩০ লাখ৷ সবকটি পোস্ট মিলিয়ে তিনি ৩১০ কোটি লাইক পেয়েছেন৷ এই অভাবনীয় জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি আছেন বর্তমানে টিকটক জনপ্রিয়তার তালিকায় দুই নম্বরে৷
ছবি: Getty Images
কিং সত্যিই রাজা
জ্যাক কিং-ই বা কম কী৷ তিনি ডিজিট্যালি সম্পাদিত ছয় সেকেন্ডের ভিডিও বানান, যা দেখে মনে হয় তিনি ম্যাজিক করছেন৷ নিজের ভিডিওকে তিনি বলেন 'হাতের ডিজিটাল ভোজবাজি'৷ টিকটকে সাড়ে চার কোটি ফলোয়ার৷ তারকাদের মধ্যে তাঁর বয়স সামান্য বেশি৷ ৩০ বছর
ছবি: Getty Images/AFP/L. O´Connor
ফিটনেস কুইন
তিনি পার্সোনাল ট্রেনার, লেখক, এবং উদ্যোগপতি৷ কেইলা ইটসিনেস মাত্র ২৯ বছরে বয়সেই টাইমসের সব চেয়ে প্রভাবশালী ৩০ জন নারীর তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন৷ তাঁর ফিটনেস ই বুক সিরিজ 'বিকিনি বডি গাইডস' এবং খাবার ও ওয়ার্কআউটের অ্যাপ 'ফিট উইথ কেইলা' জনপ্রিয়তার শিখরে৷ ফিটনেস ই বুক তো কয়েক মাসের মধ্যেই ১০ লাখ বার ডাউনলোড হয়েছিল৷
ছবি: Getty Images/M. Schipper
গানের সুরে
টিক টকে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা চার কোটি ১০ লাখ, ইনস্টাতে এক কোটি ৯৭ লাখ৷ সব সামাজিক মাধ্যম মিলিয়ে ৭ কোটি ৫৫ লাখ ফলোয়ার৷ লরেন গ্রে-র বয়স মাত্র ১৮৷ এর মধ্যেই সুরের দোলায় দুলিয়ে দিচ্ছেন কোটি কোটি মানুষকে৷ এক বছর ধরে তিনি ছিলেন টিকটকের সব চেয়ে জনপ্রিয় তারকা৷ এখন অবশ্য কিছুটা পিছনে চলে গেছেন৷ একাধিক পুরস্কার পেয়েছেন৷
ছবি: Getty Images/American Heart/M. Coppola
স্পেনসার এক্স
তিনিও গায়ক৷ বয়স ২৯ বছর৷ টিক টকের ফলোয়ার সংখ্যার নিরিখে সাত নম্বরে৷ প্রায় চার কোটি ফলোয়ার৷ তাঁর ইউ টিউব চ্যানেলে গান শোনা হয়েছে ৭ কোটি ৬০ লাখ বার৷ অ্যামেরিকার এই তারকা সমান্তরাল সংস্কৃতির বড় তারকা৷
ছবি: Getty Images for Mashup LA
প্রভাবশালী টিনএজার
বয়স মাত্র ১৯৷ হলে কী হয়, বেবি এরিয়ল টাইম ও ফোর্বসের সব চেয়ে প্রভাবশালী এন্টারটেইনারের তালিকায় নাম তুলে ফেলেছেন৷ তাঁরও খ্যাতি টিকটক, ইনস্টা, ইউ টিউবের কল্যাণে৷ গান করেন, অভিনয়ও৷ টিকটকে ফলোয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ৪৫ লাখ৷
ছবি: Getty Images/J. Kopaloff
খ্যাতির সঙ্গে অর্থও
এই তারকারা শুধু খ্যাতিই নয়, পাচ্ছেন প্রচুর অর্থও৷ মাস তিনেক আগের খবর, টিকটকের একেবারে শীর্ষে থাকা তারকারা প্রতিটি পোস্টের জন্য ৪০ থেকে ৪৮ হাজার ডলার পান৷ তাছাড়া আছে বিজ্ঞাপন, নানা অনুষ্ঠান, অন্য সামাজিক মাধ্যম থেকে বিপুল আয়৷ ফলে অল্প বয়সেই তাঁদের সমৃদ্ধির ভাড়ার উপচে পড়ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Turkia
9 ছবি1 | 9
টিকটক হলো ছোট ভিডিও ভিত্তিক অ্যাপ। সম্প্রতি অ্যামেরিকায় টিকটক নিয়ে খুব হইচই হচ্ছে। ট্রাম্প বলেছেন, টিকটক অ্যামেরিকার নিরাপত্তা, বিদেশ নীতি ও অর্থনীতিতে বিপদের কারণ। অভিযোগ, টিকটক অ্যামেরিকার লোকেদের সম্পর্কে তথ্য চীনা কর্তৃপক্ষকে দিয়ে দিচ্ছে। টিকটক অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সম্প্রতি সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা কখনই অ্যামেরিকার টিকটক ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে তথ্য চীন সরকারকে দেয়নি। ভবিষ্যতেও দেবে না। এই সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
অ্যামেরিকার সংস্থা মাইক্রোসফট এখন টিকটক কেনার জন্য কথাবার্তা চালাচ্ছে। ট্রাম্প তা অনুমোদনও করেছেন। তবে তিনি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। ট্রাম্প অবশ্য অভিযোগ করেছেন, টিকটক সরকারি কর্মীদের সম্পর্কে তথ্য চীনকে দিয়েছে এবং তারা কর্পোরেট চরবৃত্তির সঙ্গেও জড়িত। চীন এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।