অ্যালাবামার ঘটনা। গুলিতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আহত অসংখ্য। কে, কেন গুলি চালিয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বিজ্ঞাপন
আবার গুলি চলল অ্যামেরিকায়। রোববার অ্যালাবামায় একটি জন্মদিনের পার্টিতে গুলি চলে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনায় এখনো পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। আহত অন্তত ২৮ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অ্যালাবামার রাজধানী থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। কে গুলি চালিয়েছে, কেন চালিয়েছে, এবিষয়ে পুলিশ এখনো পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি। বন্দুকধারী বেঁচে আছে কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে দিয়েছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের মুখপাত্র জেরেমি বারকেট জানিয়েছেন, ''সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে সামান্য অগ্রগতিও হয়েছে। নিহত এবং আহতদের পরিবার ন্যায়বিচার পাবেন, এটুকু বলতে পারি।'' পুলিশ প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি মিলেছে। তবে গোটা বিষয়টি বুঝতে আরো সময় লাগবে।
যারা আহত এবং নিহত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই তরুণ-তরুণী। স্থানীয় মানুষের দাবি, বন্দুকধারী এলাকার নাচের স্টুডিও-তে বন্দুক চালাতে চালাতে ঢুকেছিল। সাধারণত, ওই স্টুডিওতে ওই সময় নাচের মহড়া হয়। কিন্তু এদিন সেটি জন্মদিনের পার্টির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল। সম্ভবত বন্দুকধারী তা জানতো না।
যুক্তরাষ্ট্র : একদিকে বন্দুকধারীর হামলায় মৃত্যু, অন্যদিকে ‘অস্ত্রবাজদের’ সম্মেলন
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটে নিয়মিত৷ তাই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের দাবি ওঠে প্রায়ই৷তবে অবাধ অস্ত্র কেনা-বেচার পক্ষেও অনেকে সোচ্চার৷ সেরকম মানুষদের সংগঠন এনআরএ-র সম্মেলনে যোগ দিলেন ট্রাম্প৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
চার মাসে ১৫০ হামলার দেশে শিশুর হাতে অস্ত্র
২০২৩ সালের প্রথম চার মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ছোট-বড় মিলিয়ে কমপক্ষে ১৪৯টি বন্দুক হামলা হয়েছে৷ তবে অ্যালাবামায় গুলিতে অন্তত চারজন নিহত হওয়ায় সংখ্যাটা ১৫০-এ দাঁড়ালো৷ এমন পরিস্থিতিতেই বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন (এনআরএ)৷ সেখানে অস্ত্র হাতে ছয় বছরের শিশু হাডসন একার্ট৷
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
র্যাচেল জানে...
এনআরএ-র সম্মেলনে বন্দুক নেয়ার পর সাত বছর বয়সি র্যাচেলের হাত একটুও কাঁপেনি৷নির্ভয়ে, নিঃসঙ্কোচে গুলি চালানোর ভাণ করলো সে৷ যুক্তরাষ্ট্রে এ অবশ্য নতুন কিছু নয়৷ প্রতিদিনই দেশের কোনো-না-কোনো স্থানে একটা অন্তত বন্দুক হামলা হয় বলে এখন প্রায় প্রতিটি স্কুলেই শিক্ষার্থীদের শেখানো হয় বন্দুক হামলার সময় নিজেকে রক্ষা করার কৌশল৷
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
তারা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিপক্ষে
২০২২ সালের মার্চে টেক্সাসের এক এলিমেন্টারি স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় ২১ জন নিহত হওয়ার পর জো বাইডেন জাতির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘‘আমরা কবে আগ্নেয়াস্ত্রের পক্ষে ওকালতি করা লবির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবো?’’ এক বছর পেরিয়ে গেলেও আগ্নেয়াস্ত্রের অবাধ কেনাবেচা বন্ধ করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র৷ ছবিতে এনআরএ-র সম্মেলনে ১৪ বছর বয়সি কিরস্টাইন হেন্ড্রিক্স৷
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
অস্ত্র নিয়ে রাজনীতি
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর করার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায়ই বিক্ষোভ, সমাবেশ হয়৷ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি আইন কঠোর করার পক্ষে৷ তবে রিপাবলিকানদের বড় একটা অংশ এর বিপক্ষে৷ ফলে অস্ত্র আইন কঠোর করা যাচ্ছে না, সারা দেশে বন্দুক হামলাও কমছে না৷
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
সম্মেলনে ট্রাম্প
শনিবার এনআরএ-র সম্মেলনে যোগ দেন ডনাল্ড ট্রাম্প৷ পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে প্রচারণার অংশ হিসেবে সেখানে ভাষণও দিয়েছেন তিনি৷
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
ট্রাম্পসমর্থক
এনআরএ-র সম্মেলনে ছিল ট্রাম্প সমর্থকদের ভিড়৷ ছবির এই সমর্থক তো তার প্রিয় নেতার ছবিসম্বলিত টি-শার্ট পরেই গিয়েছিলেন সেখানে৷
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
রাইফেলের লকেট
এনআরএ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৭১ সালে৷ যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের দুই সাবেক যোদ্ধার প্রতিষ্ঠা করা এই সংগঠন তখন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রাইফেল চালানো শেখাতো৷ ১৯৩৪ সালে ন্যাশনাল ফায়ারআর্মস অ্যাক্ট (এনএফএ) এবং ১৯৬৮ সালে গান কন্ট্রোল অ্যাক্ট (জিসিএ) পাসের পক্ষে ছিল এনআরএ৷ তবে পরবর্তীতে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিপক্ষে অবস্থান নেয় সংগঠনটি৷ ওপরের ছবিতে রাইফেলের নেকলেস পরে এনআরএ-র সম্মেলনে যোগ দেয়া এক নারী৷
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
অস্ত্রে ‘অ্যামেরিকা মহান’
এনআরএ-র সম্মেলনে যোগ দেয়া এক ব্যক্তির হাতে ডনাল্ড ট্রাম্পের ছবি সম্বলিত অস্ত্র৷ ট্রাম্পের শ্লোগান ‘মেক অ্যামেরিকা গ্রেট’-ও লেখা আছে ছবিতে৷
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
যেন এক অ্যাকশনমুভি
গত ১৫ এপ্রিল ইন্ডিয়ানাপোলিসে অনুষ্ঠিত এনআরএ-র সম্মেলনের একটি দৃশ্য৷ কয়েকজন তরুণ-তরুণী অস্ত্র হাতে এমনভাবে পোজ দিলেন দেখে মনে হয় যেন কোনো অ্যাকশন মুভির পোস্টার!
ছবি: EVELYN HOCKSTEIN/REUTERS
9 ছবি1 | 9
নিহতদের মধ্যে অ্যামেরিকার এক প্রতিভাবান ফুটবলার আছে। আগামী কয়েকমাসের মধ্যে তার গুরুত্বপূর্ণ কলেজ লিগে যোগ দেয়ার কথা ছিল। এদিন দিদির ১৬ বছরের জন্মদিন উদযাপন করতে এসেছিল সে।
এদিনের ঘটনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আবার কংগ্রেসের কাছে নতুন বন্দুক আইনের বিল তৈরির আবেদন জানিয়েছেন। বাইডেনের বক্তব্য, আইন না করলে এমন ঘটনা বাড়তেই থাকবে। বন্দুক বিক্রির ক্ষেত্রে আরো কড়া হওয়ার কথা বলেছেন বাইডেন। জানিয়েছেন, অতীত পরীক্ষা না করে কোনোভাবেই যেন বন্দুক বিক্রি করা না হয়। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই অ্যালাবামার পার্শ্ববর্তী দুই রাজ্য কেনটাকি এবং টেনেসিতে গুলির চালানোর ঘটনা ঘটেছিল।
একের পর বন্দুক হামলায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র৷ অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে ‘মার্চ ফর লাইভস’-এ অংশ নিলেন হাজারো মার্কিন নাগরিক৷
ছবি: REUTERS
সন্তানকে আঁকড়ে
টেক্সাসের ইউভ্যালডিতে প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায় এক বন্দুকধারী৷ তাতে প্রাণ হারায় ১৮ শিশু-সহ ২১ জন৷ সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা ৷ মিছিলেও দেখা গেল সেই ছবি৷ সন্তানের হাত আঁকড়ে অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবি জানালেন মা-বাবারাও৷
ছবি: REUTERS
প্রতিবাদের স্বর
২০১৮ সালে ডগলাসে বন্দুক হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন এক্স গঞ্জালেজ৷ ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’-এর সহ-উদ্যোক্তা তিনি৷ ওয়াশিংটন ডিসিসহ সারা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন তারা৷
ছবি: REUTERS
চোখে জল, লক্ষ্যে অবিচল
সমাবেশে পা মিলিয়েছেন গঞ্জালেজ৷ বক্তৃতাও দিয়েছেন৷ সেই সময় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি৷ এতগুলো মানুষকে হারিয়ে ফেলার দুঃসহ স্মৃতি আজো তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ৷
ছবি: REUTERS
হাজারো মানুষের প্রতিবাদ
নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন ব্রিজে হাজারো মানুষ হাঁটলেন অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে৷ ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডেও দেখা গেছে এমন সমাবেশ৷
ছবি: REUTERS
ন্যাশনাল মলে..
মানুষের মাথা ছাড়া আর কিছু দেখা যাচ্ছিল না ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলের সমাবেশে৷ ১১ জুনের বিপুল সমাবেশে অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আপামর সাধারণ নাগরিকেরা৷
ছবি: REUTERS
স্মৃতির ভার
খোসে বাদিও নামে এক ব্যক্তি বন্দুক হামলায় নিহত শিশুদের ছবির সামনে প্রতিবাদের পতাকা জুড়ে দিচ্ছেন৷ ছবিটি টেক্সাসের অস্টিনের৷
ছবি: REUTERS
ঝরে যাওয়া প্রাণ
স্কুলে পড়াশোনা করতে এসে আর বাড়ি ফেরেনি ইভা মিরেলেস৷ তার মতো অনেক শিশুই আর বেঁচে নেই৷ ক্রুশ আর গোলাপে তাদের স্মরণ করা হয়েছে৷
ছবি: REUTERS
ফিরবে না বোন
তুতো বোন জ্যাকি কাজারেস আর ফেরেনি৷ টেক্সাসের ইউভ্যালডির স্কুলে নিহত পড়ুয়াদের মধ্যে সে-ও একজন৷ বড় বোন ক্রিস্টেলা মেনডোজা বোনের হাসিখুশি মুহূর্তের একটি ছবি হাতে নিয়ে কঠোর অস্ত্র আইনের দাবিতে অস্টিনের সমাবেশে অংশ নিয়েছেন৷
ছবি: REUTERS
বুলেট নয়, বই চাই
যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষকরাও অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবিতে পথে নেমেছেন৷ ‘অ্যামেরিকান ফেডারেশন অফ টিচার্স’-এর প্রেসিডেন্ট রান্ডি ওয়েইনগার্টেন৷ ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’-এ বক্তব্য রেখেছেন তিনিও৷
ছবি: Joshua Roberts/REUTERS
পুলিশের সঙ্গে
সমাবেশে এক প্রতিবাদীর সঙ্গে কথা বলছেন এক পুলিশকর্মী৷ বিপুল সমাবেশে যাতে কোনোরকম গন্ডগোল না হয়, সে দিকে কড়া দৃষ্টি ছিল প্রশাসনের৷ অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজেও অস্ত্র আইন কঠোর করার পক্ষেই৷
ছবি: Ken Cedeno/REUTERS
আর কেউ যেন সন্তান না হারায়
পার্কল্যান্ডে বন্দুক হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল জোয়াকিন অলিভার৷ তার বাবা ম্যানুয়েল অলিভার এবং মা প্যাট্রিসিয়াও প্রতিবাদ মঞ্চে ছিলেন৷ এছাড়াও ছিলেন ডগলাসে বন্দুক হামলায় বেঁচে যাওয়া ডেভিড হগ৷
ছবি: Jonathan Ernst/REUTERS
ফুলে স্মৃতিচারণ
অজস্র পড়ুয়া পা মেলান এই সমাবেশে৷ তেমনই নিহত পড়ুয়াদের স্মৃতিতে সারি সারি ফুলের মাধ্যমে পড়ুয়াদের স্মৃতিচারণ করা হয়েছে৷ তেমনভাবেই অজস্র নোটবুক, ভেঙে যাওয়া পেনসিলের টুকরো রেখেও স্মরণ করা হয়েছে পড়ুয়াদের৷
ছবি: Allison Bailey/NurPhoto/IMAGO
শিশু হত্যা ও বন্দুক
এক ব্যক্তির হাতে একটি পোস্টার ছিল৷ তাতে একটি বন্দুকের ছবি৷ বন্দুকের পাশে লেখা ‘বেবি কিলার’ অর্থাৎ শিশু হত্যাকারী৷