অ্যামেরিকার টর্নেডো বিধ্বস্ত কেনটাকি সহ অন্য জায়গার অবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। এখনো অনেকে নিখোঁজ। জল, বিদ্যুৎ নেই।
বিজ্ঞাপন
টর্নেডোর তাণ্ডবের পর অ্যামেরিকা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। পাঁচ রাজ্য তছনছ করে দেয়া ভয়ংকর টর্নেডোর ফলে একশর বেশি মানুষ মারা গেছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কেনটাকি। সেখানকার গভর্নর জানিয়েছেন, এখনো অনেকে নিখোঁজ। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। বিস্তীর্ণ এলাকায় জল ও বিদ্যুৎ নেই।
কেনটাকির মেয়র সোমবার সন্ধ্যায় বলেছেন, কেনটাকিতে এখনো পর্যন্ত ৭৪ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ ১০৯ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। কেনটাকি তছনছ করে দিয়েছে টর্নেডো।
কেনটাকির অবস্থা
গভর্নর জনিয়েছেন, কেনটাকির ইতিহাসে এমন ভয়ংকর টর্নেডো আগে কখনো আসেনি। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মৃতদের উদ্ধার করতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। তিনি জানিয়েছেন একটি মোমবাতি তৈরির কারখানায় আটজন মারা গেছেন। ৯৪ জন নিরাপদে আছেন বলে তিনি খবর পেয়েছেন। তারা ভেবেছিলেন ওখানে মৃতের সংখ্যা আরো বেশি হবে। কিন্তু ৯৪ জন নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে পারায় তিনি কিছুটা স্বস্তিতে। গভর্নর জানিয়েছেন, তার আশা, এই খবর ঠিক।
যুক্তরাষ্ট্রে ৩০ হাজার ফুট উঁচুতে ধ্বংসাবশেষ ওড়ানো টর্নেডো
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলজুড়ে তাণ্ডব চালানো টর্নেডোতে কেনটাকি রাজ্যে অন্তত ১০০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, টর্নেডো আঘাত হানার মাত্র ২০ মিনিট আগে আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা সঙ্কেত পাওয়ায় একেবারে খালি হাতেই বেরিয়ে পড়তে হয় তাদের৷ কেনটাকির মেয়র বলেছেন, সতর্কতা সঙ্কেত জানানোয় মৃতের সংখ্যা অনেক কম হয়েছে৷
ছবি: Cheney Orr/REUTERS
৩০ হাজার ফুট উঁচুতে...
প্রবল বেগে ধেয়ে আসা টর্নেডোর আঘাতে পাঁচটি রাজ্যের অনেক ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে যায়৷ আবহাওয়া দপ্তর জানায়, কোথাও কোথাও মাটি থেকে ৩০ হাজার ফুট উঁচুতেও খড়কুটো উড়তে দেখা গেছে৷
ছবি: Brendan Smialowski/AFP/Getty Images
কেনটাকিতে ভয়াবহ ধ্বংসলীলা
সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কেনটাকিতে৷ সেখানে অন্তত ৯৪ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে৷ মৃতের সংখ্যা একশ ছাড়াতে পারে৷ কেনটাকি রাজ্যের মেফিল্ড শহরে একটি মোমবাতি কারাখানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানে প্রায় ১১০ জন লোক কাজ করছিলেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে উদ্ধার করা গেছে৷ বাকিরা এখনো নিখোঁজ৷
ছবি: Minh Connors/USA TODAY/REUTERS
জরুরি অবস্থা ঘোষণার দাবি
টর্নেডোর ক্ষতির ভয়াবহতা দেখে কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার বাইডেন সরকারের প্রতি দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ত্রাণ এবং উদ্ধার কাজে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান৷
ছবি: Mat Stone/REUTERS
অসহায় মানুষ
নিজের বাড়ির ধ্বংসস্তূপের কাছে হতবিহ্বল হয়ে বসে আছেন একজন৷ কেন্টাকিতে কিছুক্ষণের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘর-বাড়ি হারানো এমন মানুষের সংখ্যা অনেক৷
ছবি: Cheney Orr/REUTERS
উদ্ধার তৎপরতা
টর্নেডোর আঘাতে প্রাণ হারানোদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্য শোকদিবস পালন করেছে। এর পাশাপাশি চলছে উদ্ধার অভিযান৷ এখনো অনেক মানুষ ধ্বংস স্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
ছবি: Michael B. Thomas/Getty Images
বাইডেনের ঘোষণা
রোববার, অর্থাৎ টর্নেডো আঘাত হানার দু’দিন পর কেনটাকি রাজ্যে ‘মেজর ফেডারেল ডিজাস্টার’ ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এ ঘোষণার ফলে ক্যাল্ডওয়েল, ফুলটন, গ্রেভস, হপকিন্স, মার্শাল, মুলেনবার্গ, টেলর এবং ওয়ারেন-এর ক্ষতিগ্রস্তরা কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রাণসহায়তা পাবেন৷
ছবি: Scott Olson/Getty Images
7 ছবি1 | 7
বহু রাজ্যের উপর দিয়ে
ইন্ডিয়ানা, মিসৌরি, আরকানসাস, টেনেসি, ইলিনয়ের একটা অংশের উপর দিয়ে বয়ে গেছে এই ঘৃর্ণিঝড়। যেখান দিয়ে টর্নেডো গেছে, সেখানে শুধু ধ্বংসের ছবি। ঘরবাড়ি উড়িয়ে দিয়ে, গাছপালা উপড়ে ফেলে, ফসল নষ্ট করে, চলে গেছে টর্নেডো। ৩০ হাজার ফুট উঁচুতেও খড়কুটো উড়তে দেখা গেছে।
হাজার হাজার মানুষ এখন বিদ্যুৎ ও জল ছাড়া আছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অনেকটা সময় লেগে যেতে পারে বলে কর্মকর্তরা জানিয়েছেন।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই বিপর্যয়ের পিছনে অস্বাভাবিক গরম আবহাওয়া কাজ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতিমধ্যেই কেনটাকিকে 'ফেডারেল ডিসাস্টার এরিয়া' বলে ঘোষণা করেছেন। ফলে সেখানে ঢালাও ত্রাণসাহায্য পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। তিনি বুধবার কেনটাকি যেতে পারেন।