অ্যামেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে কঠিন লড়াই চলছে। সামান্য এগিয়ে রিপাবলিকানরা।
বিজ্ঞাপন
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে মার্কিন মধ্যবর্তী ভোটে। কংগ্রেস এবং সেনেটের ভোটের গণনা শুরু হয়েছে। পার্লামেন্টের প্রতিনিধি ছাড়াও এদিন বেশ কয়েকটি রাজ্যে গভর্নরেরও নির্বাচন হয়েছে। ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, অ্যারিজোনার মতো রাজ্যগুলিতে ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে গেছে। বুথ ফেরত সমীক্ষার হিসেব, এবারের ভোটে মূলত দুইটি বিষয় সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। এক, মুদ্রাস্ফীতি এবং দুই, গর্ভপাত। ভোটের সমীক্ষা বলছে, রিপাবলিকানদের দিকে মানুষ ঝুঁকে। ফলে মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের একাধিপত্য এবার কমতে পারে।
নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেসে রিপাবলিকানরা এগিয়ে আছে ১৯৭ টি আসনে। ডেমোক্র্যাটরা এগিয়ে ১৭২ টি আসনে। অন্যদিকে সেনেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। রিপাবলিকান এগিয়ে ৪৭টি আসনে, ডেমোক্র্যাট এগিয়ে ৪৮টিতে। গভর্নরের নির্বাচনে রিপাবলিকানরা এগিয়ে ২৪টি রাজ্যে, ডেমোক্র্যাটরা এগিয়ে ২১টি রাজ্যে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দাবি তার ফ্লোরিডার পাম বিচের বাড়িতে অঘোষিত তল্লাশি চালায় এফবিআই৷ এরপরই ট্রাম্পের সমর্থকেরা তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। বিস্তারিত দেখুন ছবিঘরে
ছবি: David 'Dee' Delgado/REUTERS
উড়িয়ে ধ্বজা
ট্রাম্পের মার-আ-লাগোর বাড়ির সামনে পতাকা উড়িয়ে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন সমর্থকেরা। তাদের দাবি, ট্রাম্পকে ইচ্ছা করে হয়রানি করা হয়েছে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ!
এক সমর্থকের হাতে পোস্টার এবং পতাকা। তাতে এফবিআইকে কটাক্ষ করে লেখা ট্রাম্পই জয়ী হয়েছিলেন। আবার অ্যামেরিকাকে বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জায়গায় নিয়ে যেতে পারেন ট্রাম্পই।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
গাড়িতে পতাকা
মেয়াদ শেষের পরে ফ্লোরিডার বাড়িতে হোয়াইট হাউসের প্রচুর গোপন সরকারি নথি নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে তদন্ত করছে মার্কিন বিচার বিভাগ৷ এদিকে ট্রাম্প পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এফবিআই তল্লাশির প্রতিবাদে গাড়িতে করে ট্রাম্পের বাড়ির সামনে এসেছেন সমর্থকেরা। সেই গাড়িতে থাকা পোস্টারেও ২০২৪-এ ট্রাম্প, আমাকে মিস করছেন বলে ট্রাম্পের ছবি দেয়া পোস্টারও দেখা গিয়েছে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
রিপাবলিকানদের ভোট দিন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, এফবিআইয়ের এই তল্লাশিতে ট্রাম্পের প্রতি সহানুভূতি বেড়ে গিয়েছে সমর্থকদের। ট্রাম্প ন্যাশনাল গল্ফ ক্লাবের সামনেও পোস্টার হাতে দেখা গিয়েছে এক সমর্থককে। পরবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের ভোট দিয়ে অ্যামেরিকাকে বাঁচান, এমন স্লোগান লেখা রয়েছে পোস্টারে।
ছবি: Eduardo Munoz/ REUTERS
এফবিআইকে কটাক্ষ
এফবিআই দুর্নীতিগ্রস্ত, পাল্টা অভিযোগ করেছেন ট্রাম্পের সমর্থকরা। প্রিয় নেতার বাড়িতে এ জাতীয় তল্লাশি তাদের মোটেও পছন্দ হয়নি। তারা ভাবতেই পারেন না ট্রাম্প কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
মোতায়েন পুলিশ
ট্রাম্পের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এফবিআই সদস্যদের তল্লাশির পর ট্রাম্পের সমর্থকেরা যাতে কোনোরকম বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারেন, সেদিকে নজর রেখেছে পুলিশ।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
লক্ষ্য ২০২৪
ট্রাম্পের দাবি, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে তাকে দূরে রাখতেই এই সব করা হয়েছে। ট্রাম্পের বাড়িতে এফবিআই তল্লাশির প্রতিবাদে সাবেক প্রেসিডেন্টের সমর্থকেরা জড়ো হয়েছিলেন ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে। প্রেসিডেন্ট পদে তাকে দেখতে চান, সমর্থকেরা এমন দাবি জানিয়েছেন।
ছবি: David 'Dee' Delgado/REUTERS
দিনভর প্রতিবাদ
ক্যাপিটলে তার সমর্থকদের উসকানি দেয়ার জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার মাঝেই অ্যামেরিকাজুড়ে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন বাড়ছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে যুক্তরাষ্ট্রের আরো উন্নতি হবে এমনটাই মনে করে রাতজুড়ে প্রতিবাদ করেন সমর্থকেরা।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
অগাধ আস্থা
ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা সূত্রে খবর, ফেডারেল এজেন্টরা অভিযান চালিয়েছে জরুরি নথির সন্ধানেই। এর অনেকগুলি ট্রাম্প ছিঁড়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ। ট্রাম্প বলছেন, সবটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সমর্থকেরা কিন্তু ট্রাম্পের উপরই আস্থা রাখছেন। ট্রাম্পকে বিশ্বাস করেন তারা, এমন একাধিক পোস্টার সমর্থকদের হাতে দেখা গিয়েছে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
সেলফিও রয়েছে
ট্রাম্পের সমর্থনে তার বাড়ির সামনে রীতিমতো ভিড় করেছেন সমর্থকেরা। হাতে মার্কিন মুলুকের পতাকা, বুকের মধ্যে আঁকড়ে রাখা ট্রাম্পের খবর সংক্রান্ত সংবাদপত্র নিয়ে এক সমর্থককে ছবি তুলতেও দেখা গিয়েছে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
10 ছবি1 | 10
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রেস সেক্রেটারি ছিলেন সারাহ স্যান্ডার্স। তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এপি-র সমীক্ষা বলছে, তিনি আরাকানসের গভর্নর নির্বাচিত হতে চলেছেন। আরাকানসের প্রথম নারী গভর্নর হতে চলেছেন তিনি। ডেমোক্র্যাটদের হাত থেকে আসনটি ছিনিয়ে নেবেন তিনি। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত হোয়াইট হাউসে প্রেস সেক্রেটারির কাজ সামলেছেন তিনি।
সকলের চোখ পেনসিলভেনিয়ায়
পেনসিলভেনিয়ার আসনটি ছিল রিপাবলিকান সেনেটর প্যাট টুমে-র। এখানে লড়াই হচ্ছে ডেমোক্র্যাট জন ফেটেরম্যানের সঙ্গে রিপাবলিকান প্রার্থী এবং টিভি সেলিব্রিটি মেহমেট ওজের। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পেনসিলভেনিয়ায় তিনবার প্রচারে গেছিলেন। অন্যদিকে ডনাল্ড ট্রাম্পও সেখানে একটি সভা করেছেন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ডেমোক্র্যাট ফেটেরম্যানের জেতার সম্ভাবনা যথেষ্ট। কিন্তু লড়াই হচ্ছে সমানে সমানে। রিপাবলিকান প্রার্থীও শেষপর্যন্ত কিস্তিমাত করতে পারেন।
ডেমোক্র্যাটরা এই রাজ্য জিতলে, একটি রিপাবলিকান অঞ্চলকে নিজেদের হাতে আনতে পারবে তারা।
বাস্তেই থেকে ক্যাপিটল: সরকারি ভবনে হামলার কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা
৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসে হামলার ঘটনায় হতবাক বিশ্ব৷ কিন্তু এটাই প্রথম নয়৷ ইতিহাসে এমন আরও কয়েকটি ঘটনার কথা জানুন ছবিঘরে৷
ছবি: akg-images/picture alliance
১৭৮৯: ফরাসি বিপ্লব
১৭৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসের বাস্তেই দুর্গ পতনের মধ্য দিয়ে ফরাসি বিপ্লব সংঘটিত হয়৷ এই দুর্গে স্বাধীনতাকামী রাজনীতিবিদদের বন্দি করে নির্যাতন করা হত৷ বিক্ষুব্ধ মানুষ ফ্রান্সের রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করতে দুর্গে চড়াও হয়৷ নিহত হয় দুই শতাধিক৷ ফ্রান্সে বর্তমানে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয় ১৪ জুলাই৷
ছবি: akg-images/picture alliance
১৯১৭: অক্টোবর বিপ্লব
রাশিয়ায় অক্টোবর বিপ্লব শুরু হয় যখন বলশেভিকরা উইন্টার প্যালেসে হামলা চালায়৷ প্রাদেশিক সরকারের অফিস ছিলো এটি৷ ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ার জারের পতন ঘটে৷ ‘রেড অক্টোবরে’ বলশেভিকরা রাজধানী সেন্ট পিটার্সব্যর্গ থেকে সরকার উৎখাতে সফল হয়৷
ছবি: picture-alliance/akg
১৯৫৮: ইরাকে সামরিক অভ্যুত্থান
সে বছরের জুলাইয়ে বাগদাদে বাদশাহ ফয়সালের প্রাসাদে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা৷ সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতন হয় রাজতন্ত্রের৷ বাদশাহ ফয়সাল এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের হত্যা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/akg-images
১৯৭৩: চিলির সামরিক অভ্যুত্থান
গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সালভাতরে আলেন্দে তিন বছর ক্ষমতায় থাকার পর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী৷ ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবন দখল করে নেয় সামরিকবাহিনীর সদস্যরা৷ আলেন্দে আত্মহত্যা করেন এবং চিলিতে আগুস্তো পিনোশের নৃশংস সামরিক স্বৈরাচারী শাসন শুরু হয়৷
ছবি: OFF/AFP/Getty Images
১৯৮১: স্পেনে অভ্যুত্থানের চেষ্টা
ঐ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি লেফটেনেন্ট গভর্নর আন্তোনিও তেজেরো মলিনা ২০০ পুলিশ ও সেনা নিয়ে স্পেনের পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পার্লামেন্ট সদস্যদের ১৮ ঘণ্টা জিম্মি করে রাখে৷ রাজা খুয়ান কার্লোসের মধ্যস্থতায় ফ্রাঙ্কো শাসনামলের শেষে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণ হয় দেশটির৷ অভ্যুত্থান ব্যর্থ হয় এবং মলিনাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/ dpa
১৯৩৩: জার্মান পার্লামেন্ট
সে বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই ঘটনা ঘটে৷ চ্যান্সেলর হিসেবে হিটলারের শপথ নেয়ার চার সপ্তাহ পর এক বিদ্রোহী জার্মান পার্লামেন্ট ভবনের নীচতলায় আগুন দেয়৷ গত বছরের আগস্টে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কড়াকড়ি উঠিয়ে নেয়ার দাবিতে ভবনে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেছিল বিক্ষোভকারীরা৷ এদের বেশিরভাগই ছিলো কট্টর ডানপন্থি দলের সমর্থক৷
ছবি: Reuters/C. Mang
২০২১: ক্যাপিটল ভবন
২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে দাবি করে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ৬ জানুয়ারি কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক কংগ্রেস ভবনের সামনে জড়ো হয়৷ এক পর্যায়ে ভবনে হামলা চালায় সহিংস বিক্ষোভকারীরা৷ নিহত হয় চারজন৷
ছবি: Shannon Stapleton/REUTERS
7 ছবি1 | 7
ফ্লোরিডার লড়াই
রিপাবলিকান প্রতিনিধি মার্কো রুবিওর পুনর্নিবাচনের দাবি করেছিলেন ফ্লোরিডায়। তিনি তা পেয়েছেন। এর ফলে মার্কো সুবিধা পাবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এপি-র সমীক্ষা বলছে, ফ্লোরিডায় ভালো ব্যবধানে জিতবেন মার্কো। ২০১০ সাল থেকে এই অঞ্চলের প্রতিনিধি মার্কো। কিন্তু এবার তাকে যতটা লড়াই করতে হয়েছে, বহুদিনের মধ্যে তা হয়নি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২৪ সালের পরবর্তী নির্বাচনে মার্কো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য লড়তে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে।
ভোটের হার বেশি
বেশ কিছু রাজ্যে ভোটের হার উল্লেখযোগ্যরকম বেশি বলে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনে ডিডাব্লিউয়ের প্রতিনিধি। তার বক্তব্য, ডেমোক্র্যাট শিবির খুব শান্তিতে নেই। এবারের ভোটে তাদের ফলাফল ভালো হবে না বলে ইতিমধ্যএই অনেকে ধরে নিয়েছেন। হাউস অফ রিপ্রেসেনটেটিভ এবং সেনেট দুই কক্ষেই এবার রিপাবলিকানদের একাধিপত্য হবে বলে মনে করছেন অনেকে। বুথ ফেরত সমীক্ষাও সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। এবং তা যদি হয়, তাহলে আগামী কয়েকবছর প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পক্ষে কাজ করা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। এতদিন কংগ্রেসে বিরাট সমর্থন পেয়েছেন বাইডেন। উচ্চকক্ষ সেনেটে গিয়ে তাকে বার বার হোঁটচ খেতে হয়েছে। কংগ্রেসে রিপাবলিকানের সংখ্যা বেড়ে গেলে নিম্নকক্ষেও বাইডেনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে।