অ্যামেরিকা ক্রুজ মিসাইল দিলেই জার্মানি সায় দেবে না
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩রাশিয়ার আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে আরো উন্নত ও শক্তিশালী অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক অভিযান চাইছে ইউক্রেন৷ তবে সেই আবেদন খতিয়ে দেখে শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক সাড়া দিতে অনেক সময় নিচ্ছে একাধিক দেশ৷ ফলে যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্য পেতে বিলম্ব ঘটছে বলে ইউক্রেন দাবি করছে৷ এবার অতীতের সংশয় ঝেড়ে ফেলে সে দেশকে আরো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, যে মার্কিন প্রশাসন দ্রুত সেই ছাড়পত্র দিতে চলেছে৷
মার্কিন সামরিক বাহিনীর কাছে এটিএসিএমস এবং জিএমএলআরএস নামের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা শত্রুপক্ষের ব্যাপক ক্ষতি করতে সক্ষম৷ প্রথমটি ৩০৬ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে এবং দ্বিতীয়টি ৭২ কিলোমিটার দূরত্বে আঘাত হানতে পারে৷ লক্ষ্যবস্তুর উপর ক্লাস্টার বোমা নিক্ষেপ করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করার ক্ষমতা রাখে এই দুই মিসাইল৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন সম্ভবত দুটির মধ্যে একটি, অথবা দুটি ক্ষেপণাস্ত্রই ইউক্রেনের হাতে তুলে দিতে পারে৷ উল্লেখ্য, সম্প্রতি অ্যামেরিকার পাঠানো ক্লাস্টার বোমা কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বেশ সাফল্য পেয়েছে৷
শুধু অ্যামেরিকা নয়, জার্মানির কাছ থেকেও আরো উন্নত অস্ত্র চাইছে ইউক্রেন৷ মার্কিন প্রশাসনের দেখাদেখি জার্মানিও সেই ডাকে সাড়া দেবে বলে সে দেশ আশা করছে৷ তবে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস বলেছেন, অ্যামেরিকা ইউক্রেনকে এটিএসিএমএস মিসাইল দিলেই বার্লিন টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই৷ তার মতে, যুদ্ধের ক্ষেত্রে কোনো ‘স্বয়ংক্রিয়' সিদ্ধান্ত থাকতে পারে না৷ তার মতে, জার্মানি বিষয়টি এখনো খতিয়ে দেখছে৷ যুদ্ধবিমান থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা যায় বলে ইউক্রেন সেটি পেতে গভীর আগ্রহ দেখাচ্ছে৷ রাশিয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনে এমনকি বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর উপর আঘাত করে চলায় ইউক্রেনও এমন অস্ত্র চাইছে৷ এখনো পর্যন্ত ব্রিটেন স্ট্রম শ্যাডো ও ফ্রান্স স্ক্যাল্প নামের ক্রুজ মিসাইল সরবরাহ করেছে৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের কিয়েভ সফরের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি জার্মানি থেকে আরো সামরিক সাহায্যের আশা করছেন৷ দৈনিক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘‘সহযোগীদের আমাদের রাষ্ট্র ও আমাদের সৈন্যদের চাহিদা বোঝা এবং আমাদের জ্বালানি অবকাঠামোর সুরক্ষা সম্পর্কে শোনা অত্যন্ত জরুরি৷'' তিনি এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফলাফল সম্পর্কে আশা প্রকাশ করেন৷
রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে এই নিয়ে চার বার কিয়েভ সফর করলেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক৷ জেলেনস্কি ছাড়াও তিনি ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ ইউক্রেনের প্রতি সংহতি ও সে দেশকে সহায়তার ক্ষেত্রে জার্মানির প্রত্যয় আবার তুলে ধরলেও টাউরুস ক্রুজ মিসাইল সরবরাহের প্রশ্নে কোনো স্পষ্ট আশ্বাস দিতে পারেন নি তিনি৷ জার্মান সরকার কত দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে বিষয়েও তিনি কিছু বলতে পারেন নি৷ তাঁর মতে, টাউরুস সংক্রান্ত সব খুঁটিনাটী বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সময় লাগছে৷ কুলেবা এই বিলম্ব সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেন৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, ডিপিএ)