উত্তর কোরিয়ার পরমাণু-হুমকির মোকাবিলা করতে অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার পরমাণু চুক্তি হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল। ছবি: Yonhap/picture alliance
বিজ্ঞাপন
চুক্তি অনুসারে, অ্যামেরিকা নিয়মিতভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় পরমাণু-অস্ত্র-সহ সাবমেরিন মোতায়েন করবে। তাদের পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত অপারেশনের পরিকল্পনা করার সময় দক্ষিণ কোরিয়াকেও সঙ্গে রাখা হবে। বিনিময়ে পরমাণু-অস্ত্র বানাবার চেষ্টা করবে না দক্ষিণ কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওলের অ্যামেরিকা সফরের সময়ই এই চুক্তির কথা ঘোষণা করা হলো। দক্ষিণ কোরিয়াকে আশ্বস্ত করে অ্যামেরিকা জানিয়েছে, যদি উত্তর কোরিয়া পরমাণু-অস্ত্র ব্যবহার করে বা তাদের সেই অস্ত্রের ব্যবহার থেকে থামাবার দরকার হয়, তাহলে অ্যামেরিকা তাদের পরমাণু-অস্ত্র ব্যবহার করবে। এমনকী অ্যামেরিকার কোনো শহরে যদি পরমাণু-অস্ত্র হামলার ঝুঁকি থাকে, তাও তারা দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য এই কাজ করবে।
এই চুক্তি থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট হচ্ছে, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু-অস্ত্র বানানো থেকে বিরত করা যাচ্ছে না। গত চার বছরে উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রসম্ভার এতটাই বেড়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা তার হিসাব রাখতে পারছেন না।
মিসাইল প্রদর্শনের সামরিক মহড়ায় সকন্যা কিম জং উন
উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিশাল সামরিক মহড়ার আয়োজন করা হয়। পিয়ংইয়ংয়ের কিম ইল সুং স্কোয়ারে বুধবার ক্ষেপণাস্ত্রগুলি প্রদর্শিত হয়। কিম-আমলের সবচেয়ে বড় সামরিক প্রদর্শনের ঝলক দেখুন ছবিঘরে..
ছবি: KCNA/REUTERS
সামরিক মহড়া
পিপলস আর্মির ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। সামরিক অনুশীলন সম্প্রসারণ ও আরো জোরদার করার প্রতিজ্ঞা করেছে তারা।
ছবি: KCNA/REUTERS
বিশাল মহড়া
পিয়ংইয়ংয়ের সামরিক কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে বিশেষ করে তাদের রেকর্ডসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ। কিন্তু তাদের সমালোচনায় বিন্দুমাত্র পাত্তা দেয়নি কিম জং উনের দেশ। রীতিমতো জাঁকজমক করে সামরিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে তারা।
ছবি: KCNA/REUTERS
প্রতিপক্ষকে জবাব?
গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথ বিমান মহড়া করে। সেই মহড়ার পর পিয়ংইয়ংয়ের তরফে পাল্টা জবাব ছিল এই সামরিক মহড়া। বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের প্রদর্শনের মাধ্যমে হুমকি দিয়েছে তারা।
ছবি: KCNA/REUTERS
কিমের সঙ্গে সামরিক কর্তারা
এই কুচকাওয়াজে শাসক কিমের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দেশের দুই সামরিক কর্তাও। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণই শুধু নয় ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের এক বৈঠকে কিম বলেছেন সামরিক বাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই এই কুচকাওয়াজ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ছবি: KCNA/REUTERS
বাহিনীর প্রস্তুতি
দেশের প্রতিটি বাহিনীর কর্তা ও কর্মীরা অংশ নিয়েছেন এই মেগা কুচকাওয়াজে। সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা বিশ্বের প্রতিটি দেশের কাছে 'তুলে ধরতে' কিমের এই আয়োজন।
ছবি: KCNA/REUTERS
সাঁজোয়াতেও পিছিয়ে নেই
৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একাধিক সুবিশাল সাঁজোয়া যান এই সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেয়। সেই ছবি ধরা পড়েছে আলোকচিত্রীর ক্যামেরায়
ছবি: KCNA/REUTERS
মহড়ায় ক্ষেপণাস্ত্র
সামরিক কুচকাওয়াজের সময় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি প্রদর্শিত হয়েছে একাধিকবার।
ছবি: KCNA/REUTERS
কিম কী চান
কিম তার দেশের পারমাণবিক অস্ত্রাগারে "এক্সপোনেনশিয়াল ইনক্রিস"-এর আহ্বান জানানোর দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে এই সর্ববৃহৎ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ছবি: KCNA via REUTERS
বাহিনীর ক্ষমতা
বুধবার রাতের সামরিক কুচকাওয়াজে প্রায় এক ডজন উন্নত আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছে উত্তর কোরিয়া, যাকে রাষ্ট্র-চালিত মিডিয়ায় পিয়ংইয়ংয়ের "পারমাণবিক হামলার ক্ষমতা" হিসাবে বর্ণনা করেছে।
ছবি: KCNA/REUTERS
কিমের উল্লাস
সামরিক মহড়ার সময় কিম জং উনের চোখেমুখে ছিল হাসি। মহড়ায় প্রদর্শিত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উদ্বেগ বাড়িয়েছে। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, তাত্ত্বিকভাবে এসব ক্ষেপণাস্ত্রের অনেকগুলোরই যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত করার ক্ষমতা রয়েছে।
ছবি: KCNA/REUTERS
উত্তরসূরি?
বুধবার রাতের কুচকাওয়াজের মহড়ায় কিমের সঙ্গে একটি বাচ্চা মেয়েকে দেখা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে সেই হলো কিমের মেয়ে জু আয়ে। তাকে সম্ভবত কিমের চূড়ান্ত উত্তরসূরি হিসাবে তৈরি করা হচ্ছে। কিমের মেয়ের স্পটলাইটে আসা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
ছবি: KCNA/REUTERS
11 ছবি1 | 11
অ্য়ামেরিকার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার আগে একটা চুক্তি ছিল। তাতে বলা হয়েছিল, আক্রান্ত হলে দক্ষিণ কোরিয়ার পাশে দাঁড়াবে অ্যামেরিকা। প্রয়োজনে পরমাণু-অস্ত্রও ব্যবহার করবে। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশ্ন উঠছিল, এই চুক্তিতে অ্যামেরিকার দায়বদ্ধতা ঠিক করে প্রকাশ পাচ্ছে না। দক্ষিণ কোরিয়ারও উচিত, পরমাণু-অস্ত্র বানানো। বলা হচ্ছিল, শুধু কিছু মৌখিক প্রতিশ্রুতি যথেষ্ট নয়। তাই এই নতুন চুক্তির দরকার হয়ে পড়েছিল। এখানে অ্যামেরিকার দায়বদ্ধতা অনেক স্পষ্ট করে বলা আছে।
গত কয়েক মাস ধরে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনার পর এই চুক্তি হয়েছে।