গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়ায় দক্ষিণ কোরিয়া ও অ্যামেরিকা। লাখো সেনা, যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ, কামান-সহ মহড়া।
বিজ্ঞাপন
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে এই সামরিক মহড়া। উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যথেষ্ট উত্তেজনা আছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অ্যামেরিকার সম্পর্কও ভালো নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ কোরিয়া ও অ্যামেরিকার যৌথ সামরিক মহড়া শুরু হয়েছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা চলবে।
কেন মহড়া?
গত মে মাসে ক্ষমতায় আসার পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, উত্তর কোরিয়া যেভাবে বিপদের কারণ হয়ে উঠছে, তাতে এই সামরিক মহড়া খুবই জরুরি।
করোনার কারণে গত দুই বছরে অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়া বড় আকারে হয়নি। এবার হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়া দাবি করেছে, উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রসম্ভার ধ্বংস করতে হবে। করলে তাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করা হবে।
উত্তর কোরিয়াকে কাবু করতে জাতিসংঘের কিছু ‘অস্ত্র’
পারমাণবিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার কোনো তোয়াক্কাই করছে না উত্তর কোরিয়া৷ দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান রয়েছে তাই জাতিসংঘেরও৷ দেখা যাক, কত রকমের নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকা পড়েছে উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: Reuters/S. Sagolj
কয়লা এবং লোহার ওপর নিষেধাজ্ঞা
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে উত্তর কোরিয়ার ওপর সব ধরনের কয়লা, লোহা এবং লোহার আকরিক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷ওপরের ছবিতে উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন ড্যানডং শহরের লিয়াওনিং গ্রিনল্যান্ড এনার্জি কয়লাখনি৷ খনিটি অবশ্য চীনের৷
ছবি: Reuters/B. Goh
মুদ্রায় নিষেধাজ্ঞা
বিদেশে কোনো ব্যাংক খুলতে পারে না উত্তর কোরিয়া৷ এমনকি জাতিসংঘের কোনো সদস্য দেশ যাতে পিয়ংইয়ংয়ের জন্য লাভজনক কোনো আর্থিক লেনদেন বা চুক্তিতে না যায়, নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে জাতিসংঘ৷ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, কোনো দেশের নাগরিক যদি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে এমন কোনো ব্যবসায়িক যোগাযোগ স্থাপন করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশটিকে অবশ্যই ওই নাগরিককে বহিষ্কার করতে হবে৷
ছবি: Mark Ralston/AFP/Getty Images
জাহাজ চলাচল
ছবির এই জাহাজটি উত্তর কোরিয়ার৷ ২০১৬ সালের মার্চে ফিলিপাইন্সে এটিকে থামানো হয়৷ উত্তর কোরিয়ার কোনো জাহাজে পণ্য পরিবহনও নিষিদ্ধ করেছে জাতিসংঘ৷ এমনকি পিয়ংইয়ংযে নিজেদের জাহাজে অন্য দেশের পতাকা লাগিয়ে কাজ চালাবে, সেই পথও বন্ধ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Dumaguing
আকাশেও নিষেধাজ্ঞা
উত্তর কোরিয়ার জাতীয় এয়ারলাইন্স ‘এয়ার কোরিও’ অবশ্য পুরোপুরি নিষিদ্ধ নয়৷ এখনো তাদের বিমান রাশিয়া আর চীনে যাওয়া-আসা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yonhap
জ্বালানিতেও...
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার পর থেকে জ্বালানি আমদানিতেও কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় উত্তর কোরিয়া৷ ফলে জনজীবনেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে৷ নিষেধাজ্ঞার কারণে বছরে মাত্র ৪০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে পারে উত্তর কোরিয়া৷ তাই সে দেশের নাগরিকদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম ডিজেল এবং কেরোসিন পেয়েই খুশি থাকতে হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Ralston
বিদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং স্থাবর সম্পত্তি
উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিকদের ওপরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷ জার্মানিসহ এখনো হাতে গোনা যে কয়েকটি দেশে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস আছে, সেখানে উত্তর কোরীয় কূটনীতিকরা চাইলেও একটার বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না৷ দেশের বাইরে দূতাবাস ছাড়া আর কোনো কাজে ঘর ভাড়াও করতে পারে না উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: picture alliance/dpa/S.Schaubitzer
সামরিক প্রশিক্ষণ
কোনো দেশ উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনী, পুলিশ, বা আধা সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারে না৷ এ বিষয়েও রয়েছে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা৷
ছবি: Reuters/S. Sagolj
কিম জং উনের মূর্তি
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের আবক্ষ মূর্তি দেখতে বা পছন্দের কোনো জায়গায় রাখতে চান? তা জাতিসংঘের একেবারেই কাম্য নয়৷ তাই উত্তর কোরিয়ার ওপর যে কোনো ধরনের মূর্তি বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ৷
ছবি: picture alliance/dpa/robertharding
8 ছবি1 | 8
উত্তর কোরিয়া ইতিমধ্যে এই সামরিক মহড়ার নিন্দা করেছে। তারা জানিয়েছে, এটা উত্তর কোরিয়া আক্রমণের মহড়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহেই উত্তর কোরিয়া দুইটি ক্রুজ মিসাইল পরীক্ষা করেছে। এই বছর তারা প্রচুর অস্ত্রপরীক্ষা করেছে। অ্যামেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া মিলে উত্তর কোরিয়াকে সাবধান করে দিয়ে বলেছে, তারা যেন সপ্তম পরমাণু পরীক্ষা না করে।
মহড়ায় কী হবে?
মহড়ার জন্য ২৮ হাজার ৫০০ সেনা মোতায়েন করেছে অ্যামেরিকা। তারা যৌথ আক্রমণের মহড়া করবে। কী করে ফ্রন্টলাইনে সেনার সংখ্যা বাড়ানো যায়, তার মহড়া হবে এবং কীভাবে বিপক্ষের অস্ত্রশস্ত্র ধ্বংস করা যায়, তারও প্রশিক্ষণ হবে।
মহড়ায় যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ, কামান ব্যবহার করা হবে।