অ্যাসবেস্টস রিসাইকেল করে এক ডাচ কোম্পানি
১৫ জুলাই ২০২৫
নেদারল্যান্ডসের এসি মিনারেলস কোম্পানি অ্যাসবেস্টস ফাইবার দ্রবীভূত করার পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে৷ এভাবে তারা সিমেন্ট উৎপাদনের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন এক উপকরণ তৈরি করতে চাইছে৷
রিসাইকেল প্রক্রিয়া শেষে ক্যালসিয়াম সিলিকেট সমৃদ্ধ এক মিশ্রন পাওয়া যায়, যা বাইন্ডার হিসেবে কাজ করে৷ এটি শুকিয়ে একে পাউডারেও পরিণত করা যেতে পারে৷
এসি মিনারেলস কোম্পানি ২০২৬ সালের মধ্যে একটি স্বয়ংক্রিয় কারখানা খোলার আশা করছে৷ শুরুতে এটি বছরে ২৫ হাজার টন অ্যাসবেস্টস-ধারণকারী ধ্বংসাবশেষ প্রক্রিয়াজাত করতে সক্ষম হবে৷ পরবর্তীতে সক্ষমতা ৭৫ হাজার থেকে এক লাখ টন পর্যন্ত বাড়াতে চায় তারা৷ সেটি সম্ভব হলে বিষয়টি বৈপ্লবিক হবে৷
অ্যাসবেস্টস যখন শরীরে প্রবেশ করে, সেটি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে হতে পারে, তখন সেগুলো ফুসফুস এবং অন্যান্য টিস্যুতে জমা হতে পারে- যা প্রদাহ এবং ক্রমবর্ধমান ক্ষতির কারণ হতে পারে৷
ড্রেক্সেল ইউনিভার্সিটিক ক্লিনিক্যাল প্রফেসর আর্থার ফ্রাঙ্ক বলেন, ‘‘অনেক ক্যানসার আছে যা অ্যাসবেস্টসের কারণে হয়৷ এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হলো ফুসফুসের ক্যানসার৷ এছাড়া, অন্য যে ক্যানসারটি সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায় তা হলো মেসোথেলিওমা৷''
৭০টিরও বেশি দেশে অ্যাসবেস্টস নিষিদ্ধ বা এর ব্যবহার সীমিত৷ তবে এখনও বিশ্বের অনেক জায়গায় এটি খনন করা হয়৷
২০২৩ সালে রাশিয়া ছয় লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন করেছিল৷ এরপর ছিল কাজাখস্তান৷ তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে ছিল চীন এবং ব্রাজিল৷
পরিবেশগত ও শ্রম বিধির অভাব একটি সম্প্রদায়কে কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে তার একটি উদ্বেগজনক উদাহরণ হলো মেক্সিকোর রাজধানী থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সান পেদ্রো ব্যারিয়েন্টোস শহর৷
ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অফ মেক্সিকোর অধ্যাপক গুয়াদালুপে আগিলার-মাদ্রিদ জানান, ‘‘১৯৩৮ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে ‘অ্যাসবেস্টস ডি মেক্সিকো' নামে একটি কোম্পানি ছিল৷ কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু সেখানকার মাটি পরিশোধন করা হয়নি৷ তাই সেখানকার বেশিরভাগ শ্রমিক মারা গেছেন, এখনও মানুষ মারা যাচ্ছে৷''
সান পেদ্রো ব্যারিয়েন্টোসে যা ঘটছে তা অ্যাসবেস্টস উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলি যেসব জায়গায় ছিল, সেখানেও ঘটছে৷ মেক্সিকোতে অ্যাসবেস্টসের কারণে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দেখানো হয়ে থাকতে পারে৷
ডাচ কোম্পানির কথায় ফিরে যাই - তারা বলছে, তাদের অ্যাসবেস্টস রিসাইকলিং এর কৌশল ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলোতেও অনুকরণের সম্ভাবনা আছে৷
এসি মিনারেলস কোম্পানরি সিইও ইনেজ পস্টেমা বলেন, ‘‘যারা এই প্রক্রিয়া অনুকরণ করতে চান তাদের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে, বা তারা যে সমস্যার মুখোমুখি হবেন সেটি হলো, প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ নতুন৷ এমন বিনিয়োগকারী আছেন যারা পরিবেশগত এবং সামাজিক লক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা এই নতুন উদ্যোগকে সমর্থন করবেন৷ তবে এমন বিনিয়োগকারীও আছেন যারা সবকিছু ঠিকঠাক না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন৷''
তবে এর সাফল্য নির্ভর করবে বড় পরিসরে এটি কার্যকারিতা প্রদর্শন করতে সক্ষম কিনা, তার উপর৷
এভেলিন ম্যাকলাফার্টি/জেডএইচ