শোক চলছে তুরস্কে৷ বোমা হামলায় মৃতের সংখ্যাও চলছে বেড়ে৷ হামলার জন্য প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানকে দায়ী করে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও হামলার প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছে মানুষ৷ বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে পুলিশ৷
বিজ্ঞাপন
শনিবার সকালে তুরস্কের রাজধানী আংকারার প্রধান রেলস্টেশনের কাছে কুর্দিপন্থি এবং শ্রমিক আন্দোলন কর্মীদের সমাবেশে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়৷ হামলায় অন্তত ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন করছে তুরস্ক৷
ভয়াবহ এ হামলার জন্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস দায়ী বলে মনে করে তুরস্ক সরকার৷
তবে আংকারার সিহিয়ে স্কয়ারে হামলার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানকে দায়ী করে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়েছে কয়েক হাজার মানুষ৷ বিক্ষুব্ধরা নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঘটনাস্থলে ফুল দিতে যায়৷ এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা৷ বিক্ষুব্ধদের ওপর কাঁদানে গ্যাসও ছুঁড়েছে পুলিশ৷
বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন আংকারার এ হত্যাকাণ্ড গণতন্ত্রের ওপর হামলা৷
আগামী ১লা নভেম্বর তুরস্কে নির্বাচন হওয়ার কথা৷ এর্দোয়ান সরকার শনিবারের হামলার পরও জানিয়েছে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে৷
তবে আংকারার আত্মঘাতী হামলার পর তুরস্কের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে দেখা দিয়েছে আশঙ্কা৷ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর নিহত এবং আহতদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছেন অনেকেই৷ অনেকেরই এখন মন পড়ে আছে আংকারায়৷
ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে থাকা মৃতদেহ দেখে, আহতদের আর্তনাদ শুনে সেদিন অসহায় বোধ করেছেন অনেকে৷ মৃতদেহ ডিঙ্গিয়ে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন কেউ কেউ৷ পুলিশ তখনো এগিয়ে আসেনি৷ সাধারণ মানুষদের তখন পুলিশের প্রতি হামলার শিকারদের সহায়তার এগিয়ে আসার আহ্বান জানাতে দেখা যায়৷
ছবি: Reuters/T. Berkin
শান্তির বাণীতে ঢাকা মৃতদেহ
শান্তি সমাবেশে এসে মৃত্যু বরণ করা মানুষগুলোর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহগুলো ঢাকার মতো কাফনের কাপড় তখন ছিল না৷ তাই ব্যানার-ফেস্টুন দিয়েই ঢেকে দেয়া হয় তাঁদের দেহ৷
ছবি: Getty Images/G. Tan
স্বজন এবং সমমনাদের কান্না
বোমা হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে শত শত মানুষ৷ কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে চিরবিদায় নেয়া স্বজন এবং সমমনাদের জন্য তখন অবশ্য কেঁদে ভাসানো ছাড়া কিছুই করার ছিল না৷
ছবি: picture-alliance/AA
তদন্তের তৎপরতা
একটু দেরিতে হলেও শনিবারই ঘটনার তদন্তে সক্রিয় হতে দেখা যায় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে৷ ফরেনসিক বিভাগের কর্মীরা সেদিনই ঘটনাস্থলে ব্যস্ত সময় কাটান৷
ছবি: Getty Images/G. Tan
পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ
কিন্তু পুলিশের ভূমিকায় জনমনে দেখা দেয় ক্ষোভ৷ বোমা হামলার পর বিক্ষুব্ধ জনতার একাংশ পুলিশের ওপর হামলা চালায়৷ পুলিশের এই গাড়িটিও জনবিক্ষোভের শিকার৷
ছবি: picture-alliance/AA
বিক্ষোভ চলছে
আত্মঘাতী বোমা হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ হামলার জন্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস-কে দায়ী করেছে তুরস্কের সরকার৷ তবে হামলার পর তুরস্কে প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ হয়েছে৷ আংকারা এবং ইস্তানবুলসহ কিছু শহরে বোমা হামলার বিক্ষোভ জানানোর সময় এর্দোয়ান-বিরোধী স্লোগানেও ফেটে পড়েছেন বিক্ষু্ব্ধরা৷
শনিবারের হামলাটি হয়েছে তুরস্কের কুর্দি অধ্যুষিত অঞ্চলে৷ নিহত এবং আহতরা মূলত কুর্দি এবং বামপন্থি দলের নেতা-কর্মী৷ তাই সারা বিশ্বের সব কুর্দির মাঝেই দানা বেঁধেছে ক্ষোভ৷ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কুর্দি ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Saget
11 ছবি1 | 11
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
এই জোড়া বোমা হামলার পিছনে কারা থাকতে পারে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷