ভেবে দেখুন, এমনটা হলে তার পরিণতি কী হতে পারে? চলতি বছরে এমনই এক ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন তেজস্ক্রিয় পদার্থের এক চোরাকারবারী৷ বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে এ তথ্য
ছবি: Colourbox/krbfss
বিজ্ঞাপন
মার্কিন এই বার্তা সংস্থাটি এ বিষয়ে একটি তদন্তমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ এতে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে:
– রাশিয়ার সঙ্গে জড়িত অপরাধী চক্ররা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোলডাভিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের ক্রেতাদের কাছে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বিক্রি করতে চেয়েছে৷
– চলতি বছরের শুরুতে একটি চক্র বিশেষ করে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট-এর কাছে উচ্চমানের তেজস্কিয় পদার্থ সিজিয়াম বিক্রি করতে চেয়েছিল৷
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ, বর্তমানে পূর্ব ইউরোপের দেশ মোলডোভিয়ার পুলিশ কর্তৃপক্ষ ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা গত পাঁচ বছরে এরকম অন্তত চারটি সম্ভাব্য চোরাচালানের ঘটনা আটকে দিয়েছে বলে জানিয়েছে এপি৷
এপি-র প্রতিবেদনের একটি অংশ উল্লেখ করে খবরটি শেয়ার করেছে ভারতীয় সংবাদসংস্থা ফার্স্টপোস্ট৷
ঘটনার সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক থাকা নিয়ে অনেক টুইটার ব্যবহারকারীর মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে৷ এদের মধ্য একজন নোয়া রথমান৷
রথমানের এই টুইটের নীচে মন্তব্য করেছেন মাইকেল ফ্রস্ট৷ তিনি মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্য সংকটে রাশিয়া জড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি ভালো হওয়ার চেয়ে খারাপ হবে৷
আর মাক্সওয়েল এইচ. হোয়াইট মনে করেন, চোরাকারবারীর সঙ্গে কোনো সাধারণ রাশিয়ান নাগরিক জড়িত থাকতে পারে না৷ কারণ, তেজস্ক্রিয় পদার্থ হস্তগত করার মতো কাজ সম্পাদন করতে অন্তত সরকারি পর্যায়ের কারও না কারও সহায়তা প্রয়োজন৷
তবে ইংগ্রিড মায়ার এপি-র এই প্রতিবেদনটি এফবিআই-এর পাতানো গল্প বলে মনে করছেন৷
আইএস কী, কোথায় এবং কেন?
প্রতিদিনই খবরে আইএস৷ কোনোদিন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের জন্য, কোনোদিন হয়তো ইরাক বা সিরিয়ায় কোনো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার জন্য৷ আইএস বলছে, ইসলামি খেলাফত কায়েম করার জন্য যুদ্ধে নেমেছে তারা৷ ছবিঘরে আইএস সম্পর্কে কিছু তথ্য....
ইসলামিক স্টেট বা আইএস আসলে কী?
আল কায়েদা থেকে তৈরি হওয়া সুন্নি মুসলমানদের জঙ্গি সংগঠন আইএস৷ সাদ্দাম পরবর্তী সময়ে ইরাকে এবং বাশার আল আসাদের আমলে সিরিয়ায় সুন্নিদের হতাশা থেকেই জন্ম সংগঠনটির৷ আইএস-এর পতাকায় লেখা থাকে, ‘মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর নবী’ এবং ‘আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই৷’
ছবি: AP
আইএস কোথায় সক্রিয়?
শরিয়া আইন অনুযায়ী পরিচালিত হবে এমন রাষ্ট্র, বা ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চায় আইএস৷ সিরিয়া এবং ইরাকেই প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় তারা৷ দুটি দেশেই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগে বেশ বড় অঞ্চল দখল করে নিয়েছে আইএস৷
আইএস কেন আলাদা?
মূলত নিষ্ঠুরতার জন্য৷ শত্রুপক্ষ এবং নিরীহ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়াতে তারা এমন বর্বরতা এবং নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করে যা আগে কেউ করেনি৷ জবাই করে ভিডিও প্রচার, পুড়িয়ে মারা, বাবার সামনে মেয়েকে জবাই করা এবং তার তার ভিডিও প্রচার, মেয়েদের যৌনদাসী বানানো আর পণ্যের মতো বিক্রি করা – এসব নিয়মিতভাবেই করছে আইএস৷ কোনো অঞ্চল দখলে নেয়ার পর সেখানে শাসন প্রতিষ্ঠায় মন দেয় আইএস৷
ছবি: gebphotography - Fotolia.com
অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক
আইএস যদিও শুধু সিরিয়া এবং ইরাকেই সক্রিয়, তবে বিশ্বের অন্যান্য ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন নয়৷ নাইজেরিয়ার জঙ্গি সংগঠন বোকো হারাম কয়েকদিন আগেই জানিয়েছে, আইএস-কে তারা সমর্থন করে৷ দুটি সংগঠনের মধ্যে একটি জায়গায় মিলও আছে৷ আইএস-এর মতো বোকো হারামও নিষ্ঠুরতা এবং বর্বরতার প্রতিভূ হয়ে উঠেছে৷ অন্য ধর্মের নারীদের প্রতি দুটি সংগঠনের দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণই মধ্যযুগীয়৷
ছবি: Getty Images/A. Katib
আইএস-এর অনুসারী কারা?
অনুসারী সংগ্রহের সাফল্যেও আইএস অন্য সব জঙ্গি সংগঠনের চেয়ে আলাদা৷ এ পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজার বিদেশী যোদ্ধা আইএস-এ যোগ দিয়েছে৷ তাদের মধ্যে ৪ হাজারই পশ্চিম ইউরোপ এবং উত্তর অ্যামেরিকার৷
আইএস-কে রুখতে অন্য দেশগুলো কী করছে?
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বেশ কিছু পশ্চিমা এবং আরব দেশ সিরিয়া ও ইরাকে আইএস ঘাঁটির ওপর বিমান থেকে বোমা হামলা চালাচ্ছে৷ বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সিরিয়ায় ১৪২২ এবং ইরাকে ২২৪২ বার হামলা হয়েছে৷ কোনো কোনো সরকার দেশের অভ্যন্তরেও কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ সিরিয়া ফেরত অন্তত ৩০ জন সন্দেহভাজন জঙ্গির বিচার শুরু করবে জার্মানি৷ গত মাসে সৌদি পুলিশও ৯৩ জন সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে৷
6 ছবি1 | 6
সংকলন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
আইএস-এর কাছে তেজস্ক্রিয় পদার্থ বিক্রির পরিনাম কী হতে পারে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷