আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যুর পর নেতা নির্বাচনে বেশি দেরি করেনি ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস৷ অডিও প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, এখন থে সংগঠনটিকে নেতৃত্ব দেবেন আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল কুরাইশি৷
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার আল ফুরকান ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে একটি অডিও প্রকাশ করা হয়৷ সেখানে আইএস-এর মুখপাত্র জানান, আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যুর পরই সুরা কাউন্সিলের বৈঠক হয়েছে৷ তিনি জানান, সেই বৈঠকে মুজাহিদিন নেতারা সর্বসম্মিতক্রমে নতুন ‘খলিফা' হিসেবে আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল কুরাইশির নাম ঘোষণা করেছেন৷
অডিওবার্তায় আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল কুরাইশি সম্পর্কে আর কোনো তথ্য দেয়া হয়নি৷
গত রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী আর কুর্দিদের যৌথ হামলায় মারা যান আবু বকর আল-বাগদাদি৷
বৃহস্পতিবারের অডিওবার্তায় আইএস-এর মুখপাত্র যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র, শেখ আল-বাগদাদির মৃত্যুতে আনন্দ করো না৷ তোমরা কি জানো না আমরা ইউরোপের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি আর মধ্য আফ্রিকায় ঢুকেই গেছি? আমরা পূর্ব থেকে পশ্চিমে ছড়িয়ে পড়ছি৷''
সিরিয়ায় কে, কার বিরুদ্ধে লড়ছে?
২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে৷ মাঝে আইএস-এর কারণে সেই যুদ্ধে বিদেশি শক্তিও ঢুকে পড়েছে৷ কে আসলে কার বিরুদ্ধে লড়ছে?
ছবি: picture alliance/abaca/A. Al-Bushy
যুদ্ধ যেন শেষই হচ্ছে না
২০১১ সালে আরব বসন্তের ঢেউ লেগে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল৷ সেই সময় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে দেশের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ হারান৷ এরপর সেই যুদ্ধে একসময় বিদেশি শক্তিও ঢুকে পড়ে৷
ছবি: picture alliance/abaca/A. Al-Bushy
আসাদের সমর্থক
সিরিয়ার সেনাবাহিনী ‘সিরিয়ান আরব আর্মি’ বা এসএএ পুরো দেশের নিয়ন্ত্রণ আসাদের কাছে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে৷ এছাড়াও ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স’সহ আসাদের সমর্থক কয়েকটি বাহিনী এবং রাশিয়া ও ইরান আসাদকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Syrian Presidency
তুরস্কের ভূমিকা
ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী দেশ ছিল তুরস্ক৷ এছাড়া আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদেরও সমর্থন দিয়ে আসছে দেশটি৷ তবে কুর্দিদের সহায়তা করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-তুরস্ক সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, কারণ সিরিয়ার কুর্দিদের সঙ্গে তুরস্কের ‘কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি’ পিকেকে-র সম্পর্ক রয়েছে বলে তুরস্কের অভিযোগ৷ ১৯৮৪ সাল থেকে তুর্কি সরকারের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে আছে পিকেক৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L. Pitarakis
রাশিয়ার ভূমিকা
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সিরিয়ার যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে রাশিয়া৷ অবশ্য তারও আগে থেকে সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করে আসছিল দেশটি৷ রাশিয়ার আকাশ হামলায় সিরিয়ার বহু সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিযোগ রয়েছে৷ রাশিয়ার কারণে যুদ্ধের ঢেউ এখন আসাদের অনুকূলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Tass/M. Metzel
আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ
২০১৪ সালের শেষ দিকে আইএস-সব অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনকে লক্ষ্য করে আকাশ হামলা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট৷ জার্মানিসহ প্রায় ৫০টি দেশ রয়েছে সেই জোটে৷ আইএসবিরোধী এই জোটের কারণে সিরিয়ায় আইএস-এর পরাজয় হয়েছে৷ জোটকে সহায়তা করেছে কুর্দি ও আরব মিলিশিয়াদের সমন্বয়ে গঠিত ‘সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস’ এসডিএফ৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/A.Brandon
বিদ্রোহীদের কথা
‘ফ্রি সিরিয়ান আর্মি’র মতো নন-জিহাদি গোষ্ঠীগুলো আসাদের পদত্যাগ চাইছে৷ এরপর একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনেরও দাবি আছে তাদের৷ তবে বেশ কয়েকটি পরাজয়ের পর এই সংগঠনের অনেক সদস্য কট্টরপন্থি জঙ্গি সংগঠনগুলোতে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে৷
ছবি: Reuters
ইরানের সমর্থন
গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দামেস্ককে কৌশলগত ও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে ইরান৷ ইরানের সমর্থনপ্রাপ্ত লেবাননের শিয়া গোষ্ঠী হেজবোল্লাহও আসাদ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে৷