শুক্রবার রাতের বিভীষিকা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি প্যারিস৷ জরুরি অবস্থা ঘোষণার কারণে এমনিতেই থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে৷ সাপ্তাহিক ছুটির আমেজ কাটিয়ে স্বাভাবিক কোনো সোমবারে জনজীবনে যেমন প্রাণচাঞ্চল্য থাকে, তার ছিটেফোঁটাও নেই৷ প্যারিস এখন শোক জানাচ্ছে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারানোদের প্রতি৷
শোকের মাঝে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের একটি বক্তব্য৷ প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ শুক্রবারের বর্বরোচিত হামলার পরেই জানিয়েছিলেন যে, ফ্রান্স সন্ত্রাসের কাছে মাথা নত করবে না, বরং ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে৷ তবে ওলঁদ জানিয়েছেন, আইএস আবারও হামলা চালাতে পারে, সবার প্রতি সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি৷
শুক্রবারের হামলায় প্যরিসে ১২৯ জন নিহত এবং কমপক্ষে ৩৫২ জন আহত হয়৷ আহতদের অনেকের অবস্থাই সংকটাপন্ন৷ সুতরাং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে৷
এদিকে রবিবার থেকে সিরিয়ায় আইএস-এর বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করছে ফ্রান্স৷
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়েছেন, তাঁর দেশও আইএস-এর বিরুদ্ধে হামলার তীব্রতা বাড়াবে৷
তীব্রতা বাড়ানোর ইঙ্গিত অবশ্য ইতিমধ্যে দেখা গেছে৷
তুরস্কে চলমান জি টোয়েন্টি সম্মেলনেও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন বিশ্বনেতারা৷
এদিকে প্যারিস হামলার তদন্তের সূত্র ধরে সংবাদমাধ্যমে বেরিয়ে আসছে নানান তথ্য৷
অনেক দেশের নাগরিক নিহত হয়েছেন শুক্রবারের হামলায়৷
সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া অনেকেই তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন সংবাদমাধ্যমকে৷
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ১৩ই নভেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ১২৯ জন নিহত ও ৩৫২ জন আহত হয়েছে৷ কেঁপে উঠেছে গোটা বিশ্ব৷ বদলে গেছে অনেক কিছু৷
ছবি: Reuters/C. Allegriজার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন প্যারিসে হামলার প্রাথমিক খবর আসতে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpaখবর পেয়ে প্যারিসের মানুষের মনে ভয় ও আতঙ্ক ছেয়ে যায়৷ কর্তৃপক্ষ মানুষকে বাড়িতেই থাকার পরামর্শ দিয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpaবাটাক্লঁ কনসার্ট হলে হেভি মেটাল সংগীত চলাকালীন সন্ত্রাসবাদীরা কিছু মানুষকে পণবন্দি করেছিল৷ রাত একটা নাগাদ পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে৷
ছবি: Reuters/C. Hartmannফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন৷ ফুটবল ম্যাচের বিরতির সময়ে তিনি স্টেডিয়াম ছেড়ে গিয়েছিলেন৷ তাঁকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়৷
ছবি: Reutersফ্রান্স ও জার্মানির জাতীয় দল এবং দর্শকরা কিন্তু স্টেডিয়াম ছেড়ে যাবার অনুমতি পাননি৷ সে সময়ে তাঁদের মনের অবস্থা কী ছিল, তা অনুমান করা যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Alexandreপ্রায় সব আততায়ী নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে৷ একজন সীমান্ত পেরিয়ে বেলজিয়ামে প্রবেশ করেছে৷ পুলিশ সূত্র অনুযায়ী হামলাকারীদের মধ্যে কমপক্ষে দু’জন বেলজিয়ামে বসবাস করতো৷
ছবি: Getty Images/K. Tribouillardপ্যারিসে একাধিক হামলায় আহত অনেক মানুষের অবস্থা সংকটজনক৷ ফলে নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Bureauপ্যারিসে হামলার পর আন্তর্জাতিক স্তরেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে৷ যেমন নিউ ইয়র্কে ফরাসি কনসুলেটের সামনে আরও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/S. Plattনিউ ইয়র্কে ‘ওয়ান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার’-এর অ্যান্টেনায় ফরাসি জাতীয় রং ফুটিয়ে তোলা হয়৷ নিউ ইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো বলেন, ‘‘আমরা ফরাসি জাতির সঙ্গে সংহতির বন্ধনে আবদ্ধ৷’’
ছবি: Reuters/C. Allegri
সংকলন: আশীষ চক্রবর্ত্তী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ
প্যারিস আজ আতঙ্ক আর শোকের নগরী৷ প্যারিসবাসীদের আপনি কি কিছু বলতে চান? জানিয়ে দিন আমাদের মারফত৷ লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷