আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ও সামরিক অভিযানের বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতায় সম্মত হয়েছে ফ্রান্স ও রাশিয়া৷ ফ্রান্স আরো জানিয়েছে, আসাদকে দূরে রেখে সিরিয়ার সৈন্যরাও তাদের পাশে দাঁড়াতে পারে৷
বিজ্ঞাপন
মস্কো সফরে গিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ৷ মস্কোয় এক বৈঠক শেষে ওলঁদ এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন জানিয়েছেন, তাঁরা মনে করেন, আইএএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ও সামরিক অভিযানের বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতায় সম্মত হওয়ায় ফ্রান্স-রাশিয়া সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চলেছে৷
ওলঁদ মস্কো সফরে গিয়ে আইএস-এর বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে রাশিয়াকে সক্রিয় সহযোগী হিসেবে পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছেন৷ তথাকথিত ইসলামি জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর বিরুদ্ধে রাশিয়া অবশ্য আগে থেকেই সক্রিয়৷ প্যারিস হামলার পর থেকে আইএস-এর ওপর বিমান হামলা প্যারিসের মতো তারাও জোরদার করেছে৷ তবে ফ্রান্স আর রাশিয়ার মূল লক্ষ্য আইএস-কে পরাস্ত করা হলেও, যুদ্ধটা তারা আলাদাভাবেই করছিল৷
বৃহস্পতিবার মস্কোয় অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে জানানো হয়, আইএস-এর বিরুদ্ধে রাশিয়া এবং ফ্রান্স গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করবে৷ বিমান হামলায়ও দুই দেশ পরস্পরের পাশে থাকবে৷
ওলঁদ বলেন, ‘‘এই বিষয়ে একমত হয়েছি যে, আমরা শুধু সন্ত্রাসী, বিশেষ করে দায়েশ (আইএস)-কে আঘাত করবো, এমন কাউকে আঘাত করবো না যারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ছে৷ কাকে আঘাত করতে হবে এবং কাকে নয় – এ বিষয়েও আমরা তথ্য আদানপ্রদান করবো৷’’
তবে আইএস-এর বিষয়ে সহমত হলেও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদের বিষয়ে দু দেশের মতবিরোধ রয়েই গেছে৷ পুটিন জানিয়েছেন, তিনি এখনো মনে করেন, বাশার প্রেসিডেন্ট থাকবেন কিনা এটা শুধু সিরিয়ার জনগণেরই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত৷ অন্যদিকে ওলঁদের মতে, সিরিয়ার ভবিষ্যতে বাশারের কোনো স্থান নেই৷
এদিকে শুক্রবার ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লোরঁ ফাবিয়ুস বলেছেন, আইএস-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশারের অনুগত বাহিনীও ফ্রান্সের সহযোগী হয়ে এলে তাতে আপত্তির কিছু নেই৷ তবে তার আগে বাশারকে দূরে রাখার বিষয়ে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হতে হবে৷
প্যারিসে আবার ফিরে আসছে শোকের ছায়া৷ গত ১৩ই নভেম্বর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১৩০ জনকে হত্যা করে তথাকথিত আইএস জঙ্গিরা৷ ফ্রঁসোয়া ওলঁদ তারপর ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেই সিরিয়ায় আইএস-বিরাধী হামলা জোরদার করেছিলেন৷ যুদ্ধের পাশাপাশি শুক্রবার প্যারিস হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছে ফ্রান্স৷
এসিবি/এসবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)
‘আমিই প্যারিস’
কোটি কোটি মানুষ সহমর্মিতা প্রকাশ করছে প্যারিসের প্রতি৷ শিল্পীরা আঁকছেন ছবি৷ যে শহরে প্রতি বছর কোটি মানুষ যায় মুগ্ধ হতে, সেই শহরের বুকে ১২৯টি নিরীহ প্রাণ কেড়ে নেয় সন্ত্রাসীরা৷ দেখুন প্যারিসের দুঃখে কাতর শিল্পীদের ছবি৷
ছবি: Twitter/@Zeli50/Chaunu
প্যারিসের জন্য শান্তি কামনা
বৃত্তের মধ্যে আইফেল টাওয়ারের এই ছবিটি এঁকেছেন শিল্পী জঁ জুলিয়েন৷ ছবির শিরোনাম, ‘পিস ফর প্যারিস’৷ প্যারিসের আক্রান্ত হওয়ার খবর জানার পরই আঁকা এই ছবিটি #PeaceForParis নামে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে৷ অনেকেই উল্কি এঁকে শরীরে রাখছেন #PeaceForParis, কেউ কেউ আবার পড়ছেন #PeaceForParis সম্বলিত টি-শার্ট৷
ফ্রান্সের কেরিক্যাচার শিল্পী #Baudry-ও তাঁর প্রিয় শহরে শত মানুষের আর্তনাদ দেখে ব্যথিত৷ তাঁর তুলিতে প্যারিস তাই রক্তে আবৃত৷ রক্তাক্ত প্যারিসের মাঝখান দিয়ে ক্ষীণ রেখা হয়ে বয়ে চলেছে সেন নদী৷ এ নদী অনমনীয়তার প্রতীক৷ শিল্পী যেন বোঝাতে চেয়েছেন সন্ত্রাসীরা বর্বরোচিত হামলায় যত রক্তই ঝরাক প্যারিসের জীবন নদীর মতো বয়ে যাবেই৷
ছবি: Twitter/@cyrilrtour/@hervebaudry
রক্তাক্ত পতাকা
#JeSuisParis নাম দিয়ে রক্তাক্ত পতাকার এই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন আরেক ক্যারিকেচার শিল্পী কার্লোস লাটুফ৷ এটিও ভীষণ সাড়া জাগিয়েছে৷
ছবি: Twitter/@ClaudeGaignard/@LatuffCartoons
দৈত্যের কবলে...
আলাদীনের চেরাগের সেই দৈত্যও উঠে এসেছে শিল্পীর আঁকা ছবিতে৷ প্যারিসের আর কিছু না হোক আইফেল টাওয়ারটা তো সবাই চেনে৷ প্যারিসের প্রতীকই আইফেল টাওয়ার৷ গল্পের দৈত্যকে প্রদীপ ঘষে ডেকে আনলে সে তার মনিবের আদেশ পালন করতো৷ ছবিতে শিল্পী #MarianKamensky অশুভ শক্তি হিসেবে আইএস-কেই বানিয়েছেন দৈত্য৷ সেই দৈত্য গলা টিপে ধরেছে আইফেল টাওয়ারের৷
ছবি: Twitter/@DonzelliX/@MarianKamensky1
শোকে নুয়ে পড়া আইফেল টাওয়ার
শিল্পী চাউনু-র আঁকা এই ছবিতে সকল প্যারিসবাসীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে আইফেল টাওয়ারও নুয়ে পড়েছে শোকে৷ নুয়ে এক প্যারিসবাসীকে জড়িয়ে ধরে সমবেদনা জানাচ্ছে৷ নারীর মাথায় জ্যাকোবিন টুপি৷ ফরাসি বিপ্লবের স্মৃতি স্মরণ করিয়ে ফরাসিদের উদ্বুদ্ধ করে এই টুপি৷