ষোল বছর বয়সি জার্মান কিশোরী লিন্ডা ডাব্লিউ-র মৃত্যুদণ্ড হবে কিনা তা আদালত নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী৷ অনলাইনে উগ্রপন্থিদের সঙ্গে কথা বলার পর জার্মানি ছেড়ে তাদের কাছে গিয়েছিলেন এই কিশোরী৷
বিজ্ঞাপন
গত বছরের গ্রীষ্মে জার্মানির পূর্বাঞ্চলে নিজের বাড়ি থেকে পালিয়ে ইরাকে চলে যান লিন্ডা৷ সেখানে যোগ দেন তথাকথিত জঙ্গি গোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট’ (আইএস)-এর সঙ্গে৷ শনিবার ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবেদী বার্তাসংস্থা এপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, লিন্ডাকে বাগদাদের একটি কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে এবং তাঁর মৃত্যুদণ্ড হবে কিনা তা নির্ধারণ করবে ইরাকের আদালত৷
তিনি বলেন, ‘‘কিছু আইনের আওতায় টিনএজারদেরও বিচারের ব্যবস্থা রয়েছে, বিশেষ করে যদি তারা নিরীহ মানুষ হত্যার সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত হয়৷’’
ইসলামিক স্টেটের জেলখানার ভেতরটা কেমন?
ইরাকের মসুল শহরকে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করতে অভিযান চলছে৷ এরই মধ্যে একটি জেলখানার সন্ধান পান ইরাকি সেনাবাহিনী৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
সাধারণ ভবন
বাইরে থেকে দেখে কেউ যেন বুঝতে না পারে সেজন্য শহরের আবাসিক এলাকার এই বাড়িতে জেলখানা স্থাপন করেছিল ইসলামিক স্টেট৷ সম্প্রতি এই কারাগারের সন্ধান পান ইরাকি সেনাবাহিনী৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
তবে সব ব্যবস্থা ছিল
শুধু বাইরে থেকে বোঝা যেত না, এই যা৷ কিন্তু জেলখানাটির ব্যবস্থাপনা ছিল সাধারণ কারাগারের মতোই৷ ফলে বন্দিদের সেখানে নেয়ার পর তাদের জামাকাপড় সহ অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে নেয়া হত৷ পরে কোনো বন্দি ছাড়া পেলে তা ফেরত দেয়া হতো৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
যাদের আটক রাখা হত
আইএস-এর হাতে বন্দি ইরাকি সামরিক বাহিনীর সদস্য ও ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের লোকজনদের ধরে এখানে রাখা হতো৷ স্টিলের এই দরজার পেছনেই ছিল কারাগারের শুরু৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
অভিযানের বয়স আট মাস
মসুল থেকে আইএসকে হটাতে অভিযান চলছে৷ তবে সাধারণ মানুষ বাস করে এমন এলাকায় আইএস সদস্যরা চলে যাওয়ায় অভিযানের গতি কমে গেছে৷ ছবিতে আইএস এর জেলখানার ভেতরে একজন ইরাকি সেনাকে পাহারা দিতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
বোমা তৈরির সরঞ্জাম
জেলখানার একটি ঘরের মেঝেতে বোমা তৈরির সরঞ্জাম পড়ে রয়েছে৷ কোনো স্থান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় আইএস সাধারণ ঐ স্থানে ‘বুবি ট্র্যাপ’, অর্থাৎ এমন কিছু ফেলে যায় যা অন্যদের ক্ষতি করে৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
অমুসলিমদের মাংস খাওয়ার পরামর্শ!
যুদ্ধের সময় প্রয়োজন হলে আইএস তার অনুসারীদের অমুসলিমদের মাংস খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
পর্যবেক্ষণ ক্যামেরা
বন্দিদের উপর সার্বক্ষণিক নজর রাখার জন্য জেলখানার ঘরগুলোতে সার্ভিলেন্স ক্যামেরা বসিয়েছিল আইএস৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
7 ছবি1 | 7
গত জুলাইয়ে ইরাকি বাহিনী মোসুলে অভিযান পরিচালনা করার সময় একটি বাড়ির বেসমেন্ট থেকে জার্মান কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়৷
অনেক ‘আইএস পরিবার’ আটক
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আরো জানিয়েছেন যে, কুর্দি বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করা ১,৩৩৩ নারী এবং শিশুদের আটক করেছে ইরাকি বাহিনী৷ তিনি বলেন, ‘‘আটককৃতদের অনেকেই কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন৷ ইরাক সরকার তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সেসব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে৷’’
তিনি বলেন, ‘‘তাদের দেশ যদি তাদের ফেরত নিতে চায় তাহলে তাদের এখানে আটকে রাখা আমাদের দায়িত্ব নয়৷’’ এখন অবধি একশ'র কাছাকাছি মানুষকে এভাবে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলেও জানান আল-আবেদী৷
উল্লেখ্য, বাগদাদে লিন্ডা ডাব্লিউ.সহ আরো কয়েকশত বিদেশি নারী রয়েছেন, যারা আইএস-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে মনে করে ইরাকি কর্তৃপক্ষ৷ তাদের অনেকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনাসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে৷