আফগানিস্তানে কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের পিছনে থাকা আইএস নেতাকে মারলো তালেবান। দাবি অ্যামেরিকার।
বিজ্ঞাপন
২০২১ সালে কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণে ১৭০ জন বেসামরিক মানুষ ও ১৩ জন মার্কিন সেনা মারা যান। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই বিস্ফোরণের মূল চক্রান্তকারী আইএস নেতাকে তালেবান গুলি করে হত্যা করেছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা সিবিএস-কে জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে ওই আইএস নেতাকে মারে তালেবান। তবে বিষয়ের সত্যতা যাচাই করার জন্য কিছুটা সময় লেগেছে।
সংবাদসংস্থা এপিকে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই বিস্ফোরণে শহিদ মার্কিন সেনার পরিবারকে ইতিমধ্যেই এই খবর দেয়া হয়েছে। এরকমই এক প্রয়াত সেনার বাবা জানিয়েছেন, তাকে মার্কিন কর্মকর্তারা খবরটা দিয়েছেন।
ইসলামিক স্টেট খোরাসান কারা?
কাবুল বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট খোরাসান। তালেবানের সঙ্গে এই গোষ্ঠীর বিরোধ কোথায়?
ছবি: Xinhua/imago images
ভয়াবহ কাবুল বিস্ফোরণ
বৃহস্পতিবার জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল বিমানবন্দর। অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বহু। ইসলামিক স্টেট খোরাসান গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
ছবি: REUTERS
সতর্কতা জারি হয়েছিল
মার্কিন সেনা এবং যুক্তরাজ্যের সেনা আগেই ইসলামিক স্টেট খোরাসান নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে এই গোষ্ঠী ক্রমশ শক্তিবৃদ্ধি করছে। তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র আছে। যে কোনো সময় তারা হামলা চালাতে পারে।
ছবি: REUTERS
মৃত্যু হয়েছে তালেবানের
বিস্ফোরণে বেশ কিছু তালেবানেরও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ইসলামিক স্টেট খোরাসানকে রুখতে তারা বিমানবন্দরের বাইরে চেকপোস্ট তৈরি করেছিল।
ছবি: Konstantinos Kololokouris
কেন খোরাসান
আইএসআইএস জঙ্গিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ইসলামিক স্টেট খোরাসান। মধ্যযুগে আফগানিস্তান, ইরান এবং মধ্য এশিয়ার একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে খোরাসান প্রদেশ বলা হতো। সেখান থেকেই খোরাসান শব্দটি নিয়েছে এই গোষ্ঠীটি।
ছবি: picture-alliance/dpa/TTP
তালেবান সমঝোতার রাস্তায়
ইসলামিক স্টেটের এই গোষ্ঠীটি মনে করে, অ্যামেরিকার সঙ্গে আলোচনা করে তালেবান সমঝোতার রাস্তায় চলে গেছে। সে কারণে তালেবানকে পছন্দ করে না এই গোষ্ঠী।
তালেবান আফগানিস্তান দখল করার পর তাদের সঙ্গে আইএস খোরাসানের একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কিছু খোরাসান জঙ্গি তালেবানের হাতে মারা গেছে। তারাও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
ছবি: Rahmat Gul/AP/picture alliance
বিশ্বাসের বিভেদ
তালেবান ইসলামের দেওবন্দি মতে বিশ্বাসী। ইসলামিক স্টেট বিশ্বাস করে ইসলামের সালাফি আন্দোলনে। ফলে গোড়া থেকেই এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মতপার্থক্য আছে।
ছবি: AFP/B. Kilic
কে কী চায়
তালেবান দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানকে ইসলামিক আমিরাত বানানোর লক্ষ্যে লড়াই চালাচ্ছিল। আইএস চায় গোটা মধ্য এশিয়া। বস্তুত, তালেবান আফগানিস্তান দখলের পর বহু ইসলামি গোষ্ঠী উল্লাস প্রকাশ করলেও আইএস তা করেনি।
ছবি: Sefa Karacan/AA/picture alliance
কাবুলে ইসলামিক খোরাসান
মার্কিন গোয়েন্দাদের বক্তব্য, শুধু কাবুলে এই মুহূর্তে অন্তত দেড় হাজার আইএস-কে যোদ্ধা আছে। তারা ক্রমশ শক্তিবৃদ্ধি করছে। সিরিয়া, ইরাক থেকেও যোদ্ধাদের নিয়ে আসা হচ্ছে।
ছবি: AFP/Getty Images
মোট যোদ্ধার সংখ্যা
জাতিসংঘের একটি সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, সব মিলিয়ে হাজার দশেক ইসলামিক স্টেট খোরাসানের যোদ্ধা আছে। দ্রুত তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে।
ছবি: Wakil Kohsar/AFP/Getty Images
জিহাদই একমাত্র রাস্তা
ইসলামিক স্টেট খোরাসান মনে করে, জিহাদের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে হবে। অমুসলিমদের সঙ্গে সমঝোতা নয়, তাদের শাস্তি দিতে হবে।
ছবি: Xinhua/imago images
11 ছবি1 | 11
নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, আইএস নেতাকে হত্যার কথা অ্যামেরিকা এপ্রিলের গোড়াতে জেনে গিয়েছিল। কিন্তু তখন এটা স্পষ্ট হয়নি, তালেবান কি তাকে টার্গেট করে মেরেছে না কি, তালেবানের সঙ্গে আইএসের সংঘর্ষ চলার সময় তার মৃত্যু হয়েছে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আইএসের বিরুদ্ধে তালেবানের অভিযান চলছিল। তখনই ওই আইএস নেতা মারা যায়। তালেবান প্রথমে তার পরিচয় জানত না। পরে তার পরিচয় জানতে পারে তারা।
সোমবার থেকে মার্কিন কর্মকর্তারা মৃত সেনার পরিবারকে জানাতে শুরু করে যে, তালেবানের হাতে মারা পড়েছে আইএস নেতা।