1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্যথাইল্যান্ড

আইনি অনিশ্চয়তায় থাইল্যান্ডে গাঁজার ব্যবসা ব্যহত

১৯ ডিসেম্বর ২০২২

থাইল্যান্ডে মারিজুয়ানা বিলের বিরোধীরা গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহার বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ দেশটিতে গাঁজা চাষ ও সেবনের উদারীকরণের ফলে ব্যাংকক থেকে পাতায়া পর্যন্ত নতুন এক লাভজনক শিল্পের উদ্ভব হয়েছে৷

গাঁজা নিয়ে বিতর্ক থাইল্যান্ডে৷
থাইল্যান্ডে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন এখনো গণস্বাস্থ্য আইনের পরিপন্থি হতে পারে ছবি: Peerapon Boonyakiat/SOPA Images/ZUMA/picture alliance

থাই সরকার গত ৯ জুন গাঁজার চাষ এবং খাদ্য ও পানীয়তে এর ব্যবহারকে বৈধ ঘোষণা করে৷ নিষিদ্ধ মাদকের তালিকা থেকে গাঁজা বাদ দেয়৷

এমন সিদ্ধান্ত কৃষি ও পর্যটন শিল্পকে উজ্জীবিত করবে এবং চিকিৎসায় গাঁজার গাছ ব্যবহৃত হবে বলে প্রত্যাশা করা হয়৷ কিন্তু আইন প্রণেতারা উঠতি এই শিল্পকে কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌছাতে ব্যর্থ হন৷

‘‘আমরা অনিয়ন্ত্রিতভাবে গাঁজাকে বৈধ করার বিরুদ্ধে, যার সূত্রপাত ঘটেছে কোন রকম কার্যকর বিধিনিষেধ ছাড়াই গাঁজাকে মাদকদ্রব্যের তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলার পর,'' বিরোধী রাজনৈতিক দল মুভ ফরওয়ার্ড পার্টি নেতা পিটা লিমিয়ারোয়েনরাত গত বুধবার বিলটির দ্বিতীয় বার আলোচনার জন্য সংসদে উপস্থাপিত হলে এমন মন্তব্য করেন৷ 

তবে, মারিজুয়ানা সম্পর্কিত প্রস্তাবিত আইনটি এই বছরের মধ্যে, এমনকি আগামী ৭ মে থাইল্যান্ডের সম্ভাব্য সাধারণ নির্বাচনের আগে পাশ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে৷

সুযোগের দুয়ার উম্মোচন

গাঁজার বৈধকরণ ও কোভিড পরবর্তী আন্তর্জাতিক পর্যটকের থাইল্যান্ডে আগমন মারিজুয়ানা ব্যবসার দার খুলে দিয়েছে৷ এতে বেড়েছে ব্যবসা ও মুনাফা করার সুযোগ৷ নতুন নতুন অনেক দোকান খুলেছে৷ পর্যটক থেকে শুরু করে স্থানীয়রাও বিনোদনের জন্য গাঁজা সেবন করছেন৷

‘‘দেরি না করে এই সুযোগে আমরা একটা দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিলাম,'' বলছিলেন পাতায়ার দ্য বুটেন্ডার গাঁজা ডিসপেনসারির একজন মালিক পাম্প চিতিরা৷

প্রতিদিন ৬০ জন ক্রেতা, যাদের অধিকাংশই পর্যটক, এই দোকান থেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ থাই বাথ মূল্যের গাঁজা কিনছেন৷চার মাসের মধ্যে দোকানের মালিকেরা তাদের ব্যবসা বাড়ানোর চিন্তা করছেন৷

চিতিয়া বলেন, ‘‘আমাদের দ্বিতীয় শাখাটি খোলা হচ্ছে এ বছরের শেষে৷''

রাজধানী ব্যংককের চিত্রও একই রকম৷ আইনের বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার দিন থেকেই এই শহরে নতুন অনেক দোকান খুলে যায়৷ এসব দোকানের বিক্রেতারা খোলামেলা ভাবেই পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে৷ সেখানে গাঁজা বিক্রি ও সেবন চলছে৷

‘‘আমার মাসে প্রায় ৫০ হাজার বাথ উপার্জন করছি,'' এক দোকানের মালিক পিঙ্ক কিটলিপাপর্ন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দোকানটি বিমানবন্দরের কাছাকাছি হওয়ায় বেচা-বিক্রি  বাড়ছে বলে তিনি জানান৷

‘‘অনেক পর্যটক বিমানবন্দরে নামার পরই গাঁজার সুবাস নিতে চান৷ আমরা তাদের সাদরে অভ্যর্থনা জানাই,'' বলছিলেন তিনি৷ 

সমালোচকদের সরাসরি নিষেধাজ্ঞার আহ্বান

গাঁজার ডিসপেনসারি এমন সব এলাকায় গড়ে উঠছে যেখানে পর্যটকেরা সাধারণত ঘোরাফেরা করেন না৷

‘‘এই রাস্তায় চার থেকে পাঁচটা দোকান রয়েছে,'' ব্যাংককের উপকণ্ঠে হেম্পি নামের এক গাঁজার দোকান মালিক থানাকর্ন লুথাম্মাসর্ন ডয়চে ভেলেকে বলেন৷ ২৪ বছর বয়সী এই বিক্রেতা জানান, গাঁজা চাষ এবং তার দোকানে এর বিক্রির ক্ষেত্রে তাদের তেমন কোনো জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়নি৷ 

গাঁজার ক্রমবর্ধমান বিস্তার ও সহজলভ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে এটাকে সরাসরি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে অনেকে৷

‘‘নিয়ন্ত্রিত করার জন্য একটি প্রবিধান পাস না করে আগেই গাঁজাকে বৈধতা দেয়া একটি ভুল পদক্ষেপ ছিল,'' বলেছেন থাইল্যান্ডের ফরেনসিক চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্মিথ শ্রীসন্ট৷ গত মাসে তিনি আদালতে গাঁজার গাছকে নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য হিসাবে পুনরায় তালিকাভুক্ত করার জন্য আবেদন করেছিলেন৷ 

চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য এবং অর্থকরী ফসল হিসেবে গাঁজাকে বৈধতা করার স্থপতি বলা হয় থাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুলকে৷ ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে তিনি বলেছেন, ‘‘গাঁজাকে বিনোদনের উপকরণ করা কখনই তার উদ্দেশ্যে ছিল না৷''

সরকারি বিধিনিষেধ প্রবর্তন

জনসমক্ষে গাঁজা সেবন করা থাইল্যান্ডে জনস্বাস্থ্য আইনের লঙ্ঘন৷ সরকার নভেম্বর থেকে একটি নতুন আদেশ জারি করেছে, এর আওতায়, ব্যবসায়িক প্রাঙ্গণে বিনোদনমূলক গাঁজা ধূমপান নিষিদ্ধ এবং ফুলের কুঁড়ি নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনে এটাকে নিয়ন্ত্রিত দ্রব্য হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে৷ 

ভেন্ডিং মেশিন বা অনলাইন, পাবলিক পার্ক, বিনোদন পার্ক, উপাসনালয় বা হোস্টেলে এই ভেষজ আর বিক্রি করা যাবে না৷ 

নতুন এই আদেশ, ২০ বছরের কম বয়সী, গর্ভবতী বা বুকের দুধ খাওয়ানো নারীদের জন্য গাঁজা সীমিত করার পাশাপাশি বিধি-নিষেধের আওতায় স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ 

তবে, ক্ষতি যা হবার তা এরই মাঝে হয়ে গেছে৷ অনেক ব্যবসায়ী বিধি-নিষেধকে পাশ কাটিয়ে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে৷

গাঁজার ব্যাপারটাকে স্পর্শকাতর অভিহিত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিচালক এ নিয়ে ডয়চে ভেলের কাছে কোন মন্তব্য করতে অপরগতা প্রকাশ করেছেন৷ 

প্রতিবেদন: এ্যমি শশিপর্ণকার্ণ/একেএ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ