1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আইনের চোখে সবাই এক

ইভেতা অন্দ্রুস্কোভা, জিনেট জাইফ্যার্ট/এসি২৩ মে ২০১৪

৬৫ বছর আগে সাবেক পশ্চিম জার্মানির সংবিধান গৃহীত হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন সবে সমাপ্ত হয়েছে৷ দখলদারি মিত্রশক্তিদের নির্দেশেই সেই সংবিধান রচিত হয়েছিল৷ যার ১৪৬টি সূত্র আজও জার্মান রাষ্ট্র তথা সমাজের ভিত্তি৷

Reichstag Berlin Flaggen auf Halbmast Tsunami 2004
ছবি: picture alliance/AP Photo

জার্মানিতে সংবিধানকে বলা হয় ‘বুনিয়াদি আইন', কেননা ফেডারাল জার্মান প্রজাতন্ত্রের আইনগত বুনিয়াদ হলো এই ‘গ্রুন্ডগেজেটস'৷ সেই বুনিয়াদি আইন অনুযায়ী জার্মানি একটি ফেডারাল গণতন্ত্র, একটি সমাজকল্যাণমূলক রাষ্ট্র যেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত৷

সংবিধানের বিংশতিতম সূত্র বলছে, ‘‘রাষ্ট্রের যাবতীয় ক্ষমতার উৎস হলো জনগণ''৷ মত ও সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা এবং ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতা ছাড়া সংবিধানে নির্দিষ্ট করা রয়েছে:

- আইনের চোখে সব মানুষ সমান

- সকলেরই তাঁর মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে

- প্রতিটি নাগরিকের বাসস্থান তাঁর নিজস্ব এবং অলঙ্ঘ্য

- রাজনৈতিকভাবে নিপীড়িতদের রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার অধিকার আছে

- সম্পত্তির মালিকানার দায়িত্ব আছে

সংবিধানের এই মূল সূত্রগুলি রাজধানী বার্লিনের সংসদভবনের সামনে বড় বড় কাচের পাতের উপর উৎকীর্ণ আছে৷ সংবিধানের সূত্রগুলি যে শুধু অন্তঃসারবিহীন ফর্মুলা নয়, তার প্রমাণ হলো তিন নম্বর সূত্রটি: ‘‘পুরুষ আর মহিলাদের সমানাধিকার''৷

১৯৪৯ সালের ২৩শে মে তারিখে বন শহরে এই সংবিধান গৃহীত হয়৷ নাৎসি অপশাসনের বিভীষিকার কথা স্মরণে রেখেই সংবিধানের ১ থেকে ১৯ নম্বর সূত্রগুলি প্রণীত হয়েছিল৷ নাৎসি মৃত্যুশিবিরে মানুষের জীবন ও মর্যাদা নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানের প্রথম বাক্যটি হলো: ‘‘মানুষের মর্যাদা অলঙ্ঘনীয়''৷

সংবিধানে আগ্রাসী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে; যে সব রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধাচারণ করবে, তাদের নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ সরকারের প্রণীত কোনো আইন সংবিধানের বিরোধী হলে চলবে না, যার উপর নজর রাখার জন্য কার্লসরুহের সাংবিধানিক আদালত সৃষ্টি করা হয়েছে৷

৬১ জন পুরুষ ও চারজন মহিলার নয় মাসের চিন্তাভাবনার ফল এই ‘বুনিয়াদি আইন', যার নাম সংবিধান রাখা হয়নি, কেননা জার্মানি তখন পশ্চিম এবং পূর্ব, এই দুই অঞ্চলে বিভক্ত৷ সেই বিভাজন যেদিন শেষ হবে, শুধুমাত্র তখনই সম্পূর্ণ জার্মানির ‘‘সংবিধানের'' প্রশ্ন উঠবে, এই ছিল সেই আদি সংবিধানের ‘পিতা-মাতাদের' যুক্তি৷

নাভিদ কের্মানির জন্ম জার্মানিতে, যদিও তাঁর বাবা-মা আদতে ইরান থেকে এসেছিলেন৷ নাভিদ পড়াশুনা করেছেন কোলোন, কায়রো এবং বন শহরে৷ ডক্টর উপাধি লাভের পর তিনি কোরানের বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যার কাজে নিয়ত হন৷ কের্মানির রচনার দু'টি মূল বিষয় হলো জার্মানিতে বহিরাগতদের পরিস্থিতি এবং ইসলামপন্থি মতাদর্শ ও কার্যকলাপ৷ বর্তমানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডার্টমথ কলেজে সাহিত্যের অধ্যাপক৷

জার্মান সংসদে বক্তৃতা করছেন নাভিদ কের্মানিছবি: picture-alliance/dpa

জার্মান সংবিধানের ৬৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জার্মান সংসদে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, নাভিদ কের্মানি সেখানে ছিলেন অতিথি ও প্রধান বক্তা৷ তাঁর বক্তব্যের প্রথম সূত্রটি ছিল: ‘‘জার্মান ইতিহাসের যে অধ্যায়ই আমরা দেখি না কেন, আজকের মতো স্বাধীন, শান্তিপূর্ণ এবং সহনশীল আর কোনো যুগ চোখে পড়বে না৷''

‘‘রাজনৈতিকভাবে নিপীড়িতদের রাজনৈতিক আশ্রয় পাবার অধিকার আছে'' – এই ‘চমৎকার ও সহজ' সূত্রটি যে কিভাবে একটি ‘‘দানবীয় অনুশাসন'' পরিণত হয়েছে এবং ‘‘বস্তুত রাজনৈতিক আশ্রয় প্রাপ্তিকে সংবিধান থেকে অপসারণ করেছে'', তারও তীব্র সমালোচনা করেন কের্মানি৷

তবে সবশেষে কের্মানিকে বলতে শোনা যায়: ‘‘আমার ধর্মনিষ্ঠ বাবা-মা এবং ইত্যবসরে ২৬ জন সদস্য বিশিষ্ট বহিরাগত পরিবারের তরফ থেকে আমি প্রতীকীভাবে মাথা নুইয়ে বলতে চাই, ধন্যবাদ জার্মানি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ