আরএসএসের এজেন্ডায় এখন দুই সন্তানের নীতি৷ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত বলেছেন, তাঁরা চান, সরকার আইন করে দুই সন্তানের নীতি চালু করুক৷
ছবি: UNI
বিজ্ঞাপন
রামমন্দির তৈরি কেবল সময়ের অপেক্ষা, ৩৭০ ধারা বিলোপ হয়ে গিয়েছে, তিন তালাকও আইনত নিষিদ্ধ, এই অবস্থায় আরএসএসের কর্মসূচির এক নম্বরে এখন দুই সন্তানের নীতি চালু করা৷ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত উত্তর প্রদেশের মোরাদাবাদে স্বয়ংসেবকদের বলেছেন, আরএসএস চায় আইন করে দুই সন্তানের নীতি চালু হোক৷ তবে আইন সরকার করবে৷ আরএসএস কেবল তাঁদের মনোভাবের কথা জানাল৷
ভাগবত জানিয়েছেন, রামমন্দির নিয়ে সরকারি ট্রাস্ট হয়ে গেলেই তাঁরা মন্দিরের বিষয় থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবেন৷ কাশী ও মথুরা কখনওই তাঁদের কর্মসূচিতে ছিল না৷ এ বার তাঁদের কর্মসূচিতে আছে, দুই সন্তানের নীতি চালু করা৷ ২০১৫ সালেও বিজয়া দশমীর ভাষণে সরসঙ্ঘচালক জনসংখ্য়া নীতি চালু করতে বলেছিলেন৷
কিন্তু এর আগে সঙ্ঘ পরিবারের প্রধান তিনটি কর্মসূচি ছিল, রামমন্দির, ৩৭০ ধারা বিলোপ এবং অভিন্ন দেওয়ানী বিধি। প্রথম দুটো হয়েছে৷ কিন্তু অভিন্ন দেওয়ানী বিধি হয়নি৷ তা হলে কি সঙ্ঘ পরিবার এই বিষয়টি ছেড়ে দিল৷ আরএসএসের মিডিয়া সেল বিশ্ব সংবাদ কেন্দ্রর দায়িত্বে থাকা অরুণ আনন্দ ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''আমরা অভিন্ন দেওয়ানী বিধির দাবি থেকে সরে আসছি না৷ তবে তিন তালাক বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ তাই অভিন্ন দেওয়ানী বিধি পরে করলেও হবে৷ কিন্তু সঙ্ঘের বরাবরের মত হল, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি৷ তাই তিনি এখন দুই সন্তানের নীতি নেওয়ার কথা বলেছেন৷''
সবচেয়ে বেশি ও কম জনসংখ্যার দেশ
জনসংখ্যার ঘনত্বের বিচারে পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ কোনটি? কোনটিই বা সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ? বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়? এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে এই ছবিঘরে৷
ছবি: Reuters/M. Silvestri
মোনাকো
পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ মোনাকো৷ সেখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২৫ হাজার ৭শ ১৮ জন মানুষের বাস৷ মাত্র ০ দশমিক ৭৮ বর্গমাইলের ছোট্ট এই দেশটির জনসংখ্যা ৩৭,০০০৷
ছবি: Reuters/E. Gaillard
মাকাও
জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২২ হাজার ৪শ ৭৭৷ চীনের সীমানার ভেতরে স্বায়ত্ত্বশাসিত একটি এলাকা মাকাও৷ জুয়ার স্বর্গ৷ এর আয়তন ১১ দশমিক ৮ বর্গমাইল৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Sin
সিঙ্গাপুর
মোনাকো ও মাকাওয়ের মতো না হলেও প্রতি বর্গকিলোমিটারে সিঙ্গাপুরে থাকেন ৮ হাজার ২শ ২৬ জন মানুষ৷ বিশ্বের একটি অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্র সিঙ্গাপুর৷ আয়তন ২৭৭ দশমিক ৬ বর্গমাইল৷
ছবি: picture-alliance/Global Travel Images
হংকং
হংকং-ও একটি ব্যবসাকেন্দ্র৷ এর জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৬ হাজার ৬শ’ ৫৪৷
ছবি: Imago/Qin Qing
জিব্রাল্টার
জিব্রার্টারের প্রতি বর্গকিলোমিটারে লোক থাকেন ৪ হাজার ৮শ’ ৯২ জন৷ স্পেনের দক্ষিণ উপকূলের এই পাথুরে দেশটির জনসংখ্যা ৩২ হাজার ও আয়তন ৬ দশমিক ৭ বর্গকিলোমিটার৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Moreno
গ্রিনল্যান্ড
আয়তনে বিরাট হলেও জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে সবচেয়ে ছোট দেশ গ্রিনল্যান্ড৷ জনসংখ্যার ঘনত্ব শূন্য ভাগ৷ আট লাখ ৩৬ হাজার ৩শ ৩০ বর্গমাইলের দেশটিতে লোক থাকেন মাত্র ৫৬ হাজার৷ বরফে ঘেরা দেশটি মাত্র ৪৪৮ দশমিক ৩ বর্গমাইল এলাকা বসতির যোগ্য৷
ছবি: Imago/Siering
ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ
দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জ ফকল্যান্ডের আয়তন ১২ হাজার বর্গকিলোমিটার৷ এটি স্বায়ত্ত্বশাসিত হলেও ব্রিটিশরা এদের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়গুলো দেখে৷ আর্জেন্টিনাও এই দ্বীপপুঞ্জের দাবিদার৷ এখানে মাত্র ৩ হাজার মানুষ বাস করেন৷ জনসংখ্যার ঘনত্বের বিচারে মাত্র ০ দশমিক ৩ জন প্রতি বর্গকিলোমিটারে৷
ছবি: NASA /Jeff Schmaltz
মঙ্গোলিয়া
মঙ্গোলিয়ার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১ দশমিক ৯ জন৷ পাহাড়ঘেরা এই জনপদের আয়তন প্রায় পনের লাখ বর্গ কিলোমিটার৷ অথচ জনসংখ্যা ৩০ লাখ৷ বিখ্যাত স্বৈরশাসক চেঙ্গিস খানের দেশ এটি৷
ছবি: Reuters/T. Peter
পশ্চিম সাহারা
২ লাখ ৬৬ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই জনপদটি নানা কারণে বিতর্কিত৷ নানা বিদ্রোহী গোষ্ঠী সেখানে সক্রিয়৷ এর জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২ দশমিক ৩ জন৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Senna
নামিবিয়া
আফ্রিকান এই দেশটিতে প্রতি বর্গকিলোমিটারে থাকেন ২ দশমিক ৯ জন মানুষ৷ দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি তার কালাহারি মরুভূমির জন্য পৃথিবী বিখ্যাত৷
ছবি: Dan Kitwood/Getty Images
বাংলাদেশ
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, জনসংখ্যার ঘনত্বের বিচারে বাংলাদেশ দশম বড় দেশ৷ এখানকার প্রতি বর্গকিলোমিটারে থাকেন ১ হাজার ২শ ৬৫ জন মানুষ৷ আয়তন প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার বর্গকিলোমিটার৷
ছবি: Imago/Pacific Press Agency
চীন ও ভারত
ঘনত্বের বিচারে প্রথম দশে না থাকলেও পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দু’টি দেশ চীন ও ভারত৷ চীনের জনসংখ্যা প্রায় ১৪২ কোটি ৫০ লাখ ও ভারতে ১৪২ কোটি ৮৬ লাখ। এর মধ্যে ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেক বেশি৷ ২০০০ সালের পর তাদের জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৩৪ শতাংশ, আর চীনের বেড়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ৷
ছবি: AFP/Getty Images/D. Sarkar
12 ছবি1 | 12
বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের মধ্য়ে একটা ধারণা আছে, ভারতে প্রধাণত মুসলিমরাই জন্মনিয়ন্ত্রণ করে না৷ তারা বহু সন্তানের নীতিতে বিশ্বাস করে৷ মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য এম কিউ আর ইলিয়াস ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, দেশের সমস্যা থেকে নজর অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য এই সব বিষয় আনা হচ্ছে৷ কার কটা বাচ্চা হবে, সেটা তো সেই ব্যক্তির ওপরে নির্ভর করছে৷ এ নিয়ে আইন তো অসাংবিধানিক হবে৷ অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিশ মুশাওরত এর সভাপতি নাবেদ হামিদের মত হল, বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার সমানে ঘৃণার রাজনীতি করছে৷ কারণ, পরপর দুটি জনগণনায় দেখা যাচ্ছে, মুসলিমদের জনসংখ্য়া বৃদ্ধির হার কমছে৷
কিন্তু বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, এই নীতি চালু হলে তো সকলের ওপরেই হবে৷ তা হলে এই ধরনের কথার তো কোনও অর্থই নেই৷ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নীতি নিয়ে চলছে৷ ভারত কেন পিছিয়ে থাকবে?