আওয়ামী লীগের জয়ে পশ্চিমবঙ্গে স্বস্তি
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ মাধ্যমে রবিবার থেকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে প্রচারিত হচ্ছিল বাংলাদেশের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনের খবর৷ কৌতুহল ছিল ফলাফল নিয়ে৷ অবশেষে যখন নিশ্চিত হলো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগই আবার সে দেশে ক্ষমতায় আসতে চলেছে, তখন স্বস্তির সুর সংবাদপাঠকদের কণ্ঠেও এবং এই ব্যাপারে আগাম যা খবর ছিল, বিশেষত বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম এবং নিজস্ব সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী বিএনপির ক্ষমতায় আসা নিয়ে সামান্য হলেও যে উদ্বেগ ছিল, তা যে শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো না, এতে যেন অনেকেই আশ্বস্ত৷
এখানকার রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিক্রিয়াতেও সেই একই স্বস্তির সুর৷ সিপিআইএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম ডয়চে ভেলেকে বললেন,
‘‘অবশ্যই স্বস্তিদায়ক ফলাফল৷ কারণ, যেভাবে মিডিয়া রিপোর্ট হচ্ছিল এবং বাংলাদেশ থেকে যা খবর আসছিল, তাতে একটা আশঙ্কা হচ্ছিল যে, বাংলাদেশ অনেক আত্মত্যাগ করে স্বাধীন হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ এবং লক্ষ্য ছিল, সেখান থেকে যাতে পেছিয়ে না যায়, সেটা আমাদের আশঙ্কা ছিল৷ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবার বিপুল জয়লাভ করেছে৷ আমার মনে হয়, তাতে (তাদের) দায়িত্ব আরো বেড়ে গিয়েছে৷ আর আমাদের একদম পাশের রাষ্ট্রে জামায়াতের মতো একটা প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির উত্থান হলে, সেটা এই বাংলার এবং এই দেশের রাজনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত করবে৷ আমরা নিজেরা এখনই খুবই উৎপীড়িত এবং নাজেহাল অবস্থায় আছি৷ সেখানে আবার গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো অবস্থা যেন না তৈরি হয়, সেজন্য প্রতিবেশী দেশে শান্তির শক্তি, প্রগতির শক্তি এবং নির্দিষ্ট আদর্শে বিশ্বাসী, সৌভ্রাতৃত্বের প্রতি যারা আস্থা রাখে, এমন শক্তির বিজয় সবসময় কামনা করেছিলাম৷''
অন্যদিকে দক্ষিণপন্থি বিজেপিও কিন্তু বাংলাদেশ নির্বাচনের এই ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছে৷ পশ্চিমবঙ্গে দলের অন্যতম প্রমুখ নেতা শমীক ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘স্বাভাবিকভাবেই একটা গণতান্ত্রিক, আপাত ধর্ম নিরপেক্ষ দল ক্ষমতায় এসেছে৷ প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে আমরা এতে খুশি৷ আমরা আশা করব যে, অন্তত তাঁর এই শাসনে, যদি বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন— সেদিকে তিনি সচেতন দৃষ্টি রাখবেন এবং একই সঙ্গে আশা করি যে, আমাদের দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের মাধ্যমটা যেন একমাত্র সীমান্ত পার না হয়৷ এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারও সচেষ্ট থাকবে৷ আমাদের দেশের যে সরকার, তারাও সচেষ্ট থাকবে৷ দু'দেশের মেলবন্ধন যেন হয়৷''