বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ এনে দেয়া অধিনায়ক আকরাম খানের নির্বাচন করা সেরা একাদশে বর্তমানের ছয়জন ক্রিকেটার স্থান পেয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের অনুরোধে বাংলাদেশের একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা একাদশ (তাঁর দৃষ্টিতে) নির্বাচন করেন আকরাম খান৷ এই তালিকায় ওপেনিংয়ে আছে তামিম আর শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুতের নাম৷ এরপর একে একে মাঠে নামবেন সাকিব, মুশফিক, নান্নু, পাইলট, রফিকুল আলম (সাবেক অলরাউন্ডার), রফিক (স্পিনার), মাশরাফি, মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন৷ সেরা একাদশের অধিনায়ক হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন মাশরাফিকে৷ দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে তালিকায় রেখেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নাম৷
ইএসপিএনক্রিকইনফো ডটকম ওয়েবসাইটে আকরাম খানকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘প্রথম আসল নায়ক' হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে৷ তবে সেরা একাদশে নিজের নাম না থাকা প্রসঙ্গে আকরাম খান বলেন, ‘‘তালিকা আমি করেছি, সেখানেতো আমার নাম রাখতে পারি না৷''
বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আকরাম খান৷ কবে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিততে পারে, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আইসিসির ব়্যাংকিং-এ চার-পাঁচ নম্বরে থাকলে বিশ্বকাপ জেতার আশা করা যায়৷ ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে এখন যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে খুব শিগগির ব়্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের স্থান উপরে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি৷'' উল্লেখ্য, একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সাত নম্বরে৷
আকরাম খান
আকরাম খান বলেন, ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জেতার আগে বাংলাদেশে ফুটবল ছিল এক নম্বর খেলা৷ এরপর ক্রিকেট সেই স্থানটি দখল করে৷ ফলে ক্রিকেট এখন বেশ জনপ্রিয়৷ এই ব্যাপারটি ক্রিকেটের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে৷ গ্রামে-গঞ্জে সব জায়গায় ক্রিকেট খেলা হচ্ছে৷ পৃষ্ঠপোষকতাও আগের চেয়ে বেড়েছে৷ আকরাম খান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে এখন বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ সেখান থেকে খেলোয়াড় বাছাই করে তাদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷'' এ প্রসঙ্গে তিনি বর্তমানে সারা দেশে অনুষ্ঠানরত অনূর্ধ্ব-১৫ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার কথা উল্লেখ করেন৷
আকরাম খান বলেন, ‘‘বিদেশি কোচ ও বিদেশি ব্যবস্থাপনার তত্ত্বাবধানে অ্যাকাডেমি ও ‘এ' টিমের ক্রিকেটারদের নিয়ে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়৷ এছাড়া বাংলাদেশে অনেকগুলো টুর্নামেন্ট হয়৷ যেমন দেশের আটটি বিভাগ নিয়ে ফার্স্ট ডিভিশনের খেলা হয় (চারদিনের ম্যাচ)৷ সেখানে যারা ভালো খেলে তাদের নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি করে আবার চারদিনের ম্যাচের টুর্নামেন্ট করা হয়৷''
বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের আবেগ ক্রিকেটারদের জন্য ইতিবাচক বলেই মনে করেন আকরাম খান৷ তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষের জন্য আসলে বিনোদনের খুব একটা উৎস নেই৷ বাংলাদেশের অর্জনের, বাংলাদেশিদের ভালো লাগার একটি বড় অংশ আসে ক্রিকেট থেকে৷ তাই ক্রিকেটকে ঘিরে এমন সমর্থন থাকবে৷ একজন ক্রিকেটারকে সেই চাপ নেবার ক্ষমতা থাকতে হবে৷''
সাক্ষাৎকারটি শুনলেন? কেমন লাগলো জানালে খুব খুশি হবো আমরা৷ তাই লিখুন নীচের ঘরে৷
শিরোপা না জিতলেও রেকর্ডে এগিয়ে বাংলাদেশ
ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূলপর্বের সবগুলো ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ৷ পরাজয়ের এই হিসেব হতাশ করলেও প্রাপ্তি কিন্তু একেবারে কম নয়৷ কিভাবে? দেখুন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
সবচেয়ে বেশি রান করেছেন তামিম
ভারতে সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল৷ ছয় ম্যাচে ছয় ইনিংস খেলে তাঁর সংগ্রহ ২৯৫ রান৷ বলাবাহুল্য, ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি খেলেননি তিনি৷ সেটা খেললে রান হয়ত আরো অনেক বাড়ত৷ টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ছয়ও মেরেছেন তামিম, মোট ১৪টি৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
হিসেবে দ্বিতীয়, বিবেচনায় সেরা কোহলি
ভারতের ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলি রানের হিসেবে আইসিসি-র ‘মোস্ট রানস’ তালিকায় আছেন তামিমের পর দ্বিতীয় অবস্থানে৷ পাঁচটি ম্যাচ খেলে মোট ২৭৩ রান করেছেন তিনি৷ তবে তাঁকেই ‘প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট’ ঘোষণা করেছে আইসিসি৷ এক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের জো রুট এবং বাংলাদেশে তামিম ইকবালের নামও প্রাথমিক বিবেচনায় রাখা হয়েছিল৷ টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি চারও মেরেছেন কোহলি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Qadri
জো রুট করেছেন তৃতীয় সর্বোচ্চ রান
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে বিজিত দল ইংল্যান্ডের জো রুটের মোট সংগ্রহ ২৪৯ রান, খেলেছেন ছয়টি ম্যাচ৷
ছবি: GettyImages/AFP/M. Sharma
মুস্তাফিজের রেকর্ড
বাংলাদেশের তরুণ বোলার মুস্তাফিজুর রহমান ইনজুরির কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কয়েকটি ম্যাচ খেলতে পারেননি৷ তবে দলের জন্য তিনি যে এক বড় সম্পদ, সেটা বোঝাতে তাঁর খুব একটা সময় লাগেনি৷ ভারতের সমাপ্ত বিশ্বকাপে এক ইনিংসে সবচেয়ে সফল বোলার তিনি৷ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রানে পাঁচ উইকেট নেন মুস্তাফিজুর৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
তবে বোলিংয়ে শীর্ষে মোহাম্মদ নবী
আইসিসি-র বোলিং রেকর্ড অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী৷ সাতটি ম্যাচ খেলে মোট বারোটি উইকেট নিয়েছেন এই অলরাউন্ডার, ১৬৪ রানের বিনিময়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Bhoot
দ্বিতীয় রশিদ খান
আফগানিস্তানের আরেক বোলার রশিদ খান রয়েছেন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে৷ তিনি নিয়েছেন ১১ উইকেট, খেলেছেন সাতটি ম্যাচ আর দিয়েছেন ১৮৩ রান৷ আফগানরা যে ক্রিকেটে শীঘ্রই উপরের দিকে পৌঁছাবেন তার ইঙ্গিতই দিচ্ছে এ সব রেকর্ড৷
ছবি: Getty Images/AFP/P. Bhoot
আছেন সাকিব আল হাসানও
আইসিসি-র ‘মোস্ট উইকেট’ শিকারিদের তালিকায় পাঁচ নম্বরে আছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান৷ ১৬৬ রান দিয়ে দশটি উইকেট নেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Sarkar
জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ
এ কথা জানে না, এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না৷ তবুও জানাচ্ছি, ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ২০১৬ সালের আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ এই দলই কিন্তু প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিল!