বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার বলেছেন, বিভিন্ন মেলায় ঘুরতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে৷ এর একটি আর্থ-সমাজিক প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
ডয়চে ভেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ইফতিখার বলেন, আকাশ সংস্কৃতির কারণে আগে মেলাগুলোতে ঐতিহ্যের যে বহিঃপ্রকাশ ছিল, সেটাও কমে যাচ্ছে৷
ডয়চে ভেলে: বাংলাদেশে এখন গ্রাম্য মেলার সংখ্যা কত?
মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার: ২০১৫ সালে বিসিক একটা জরিপ করেছিল৷ সেই হিসেবে ১,৭৯৫ এর কিছু বেশি গ্রাম্য মেলার পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে৷
গ্রাম্য মেলার সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে না বেড়েছে?
আসলে কমেছে না বেড়েছে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না৷ তবে এটা বলা যায়, মেলাগুলোতে অংশগ্রহণ কমেছে বা এর মাত্রা কমেছে৷ জৌলুসও কমেছে৷ তবে সংখ্যা কমেছে এমন কোনো তথ্য আমরা পাচ্ছি না৷
Mustak Hasam Muhammad Iftekhar - MP3-Stereo
মেলা যদি বেড়ে থাকে, তাহলে নিশ্চয় নতুন মেলা এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে?
নতুন নতুন মেলা যোগ হচ্ছে এটাও বলা যাচ্ছে না৷ তবে বিসিক কিছু মেলা যোগ করেছে মনীষীদের নামে৷ যেমন ধরেন সত্যেন মেলা, বা মধুসূদন দত্তের নামে মধু মেলা বা সুলতান মেলা এমনকি জামদানি মেলাও আমরা করছি৷ এগুলো বেড়েছে৷ কিন্তু ঐতিহ্যে লালিত মেলা বেড়েছে কিনা সেটা বলা যাবে না৷
সাধারণত কোন সময়ে মেলা বেশি হয়?
প্রবাদ আছে বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বন৷ কোন মাসে বেশি হয় সেটা এভাবে বলা যাবে না৷ তবে শীতের সময় একটু বেশি মেলা হয়৷ আবার চৈত্র বা বৈশাখ মাসেও মেলাটা বাড়ে৷ জৈষ্ঠ্য, শ্রাবণ বা ভাদ্র মাসে তেমন কোন মেলা হয় না৷ এছাড়া অন্য সব সময়ই মেলা হচ্ছে৷
আগে পূজা-পার্বনে গ্রাম্য মেলা দেখা যেত৷ এখন সব জেলায় কি তেমন চিত্র আছে?
আমাদের যে জরিপ সেটাতে দেখা যাচ্ছে আছে৷ পূজা-পার্বন ঘিরেই কিন্তু বাঙালিদের মেলা হয়৷ আমরা বলতে পারি, এর হয়ত ব্যাপকতা কমেছে, অংশগ্রহণ কমেছে, তবে আমরা বলতে পারি না যে, সেই চিত্রটি নেই৷ কারণ এই ধরনের কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই৷
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ও বিচিত্র কয়েকটি মেলা
বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ গ্রামীণ মেলা৷ বিভিন্ন পালা পার্বণকে কেন্দ্র করে বছরজুড়ে প্রায় দশ হাজারেরও বেশি ছোট-বড় গ্রামীণ লোকজ মেলা বসে বাংলাদেশের আনাচে কানাচে৷ কয়েকটি গ্রামীণ মেলা দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
লোক ও কারুশিল্প মেলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে প্রতি বছর মাসব্যাপী বসে লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব৷ সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে প্রতি বছর এ মেলা শুরু হয় জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি৷ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এ লোকজ মেলায় দেশের বিভিন্ন এলাকার সব রকম লোকজ সংস্কৃতি ও কুটির শিল্প সামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হন শিল্পীরা৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
বৈশাখী মেলা
এটি মূলত সার্বজনীন লোকজ মেলা৷ বাংলা নতুন বছরের শুরুতে বাংলাদেশের সর্বত্রই আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার৷ নববর্ষকে উৎসবমুখর করে তোলে এ বৈশাখী মেলা৷ স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য, কারুপণ্য, লোকশিল্পজাত পণ্য, কুটির শিল্পজাত সামগ্রী, সব প্রকার হস্তশিল্পজাত ও মৃৎশিল্পজাত সামগ্রী এই মেলার মূল আকর্ষণ৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
রাস মেলা
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবনের দুবলার চরে প্রতিবছর কার্তিক-অগ্রহায়নের পূর্ণিমা তিথিতে বসে রাসমেলা৷ অনেক হিন্দু পুন্যার্থী আর পর্যটক এ উৎসবে শামিল হতে দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে আসেন৷ এ উপলক্ষ্যে পাঁচ দিনের একটি মেলাও মেলা বসে দুবলার চরে৷ মেলাটি চলে আসছে ১৯২৩ সাল থেকে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
লাঙ্গলবন্দের মেলা
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলমম্বীরা চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী বা অশোকাষ্টমী তিথিতে পুণ্যস্নানের জন্য সমবেত হন৷ এ উপলক্ষে তিন দিন ব্যাপী মেলা বসে ব্রহ্মপুত্রের দুই তীরে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
গুড়পুকুরের মেলা
বাংলাদেশের সাতক্ষীরা অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এ মেলাটি ৩০০ বছরেরও বেশি৷ বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ভাদ্র মাসের শেষে অনুষ্ঠিত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মনসা পূজাকে কেন্দ্র করে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ চলে একমাস৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
পোড়াদহের মেলা
গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের গোলাবাড়ি এলাকায় ইছামতি নদীর তীরে আড়াইশ বছর ধরে বসে ব্যতিক্রমী এক মেলা৷ প্রতিবছর মাঘ মাসের শেষ বুধবার বসে দুই দিনের এ মেলা৷ এ মেলার মূল আকর্ষণ বড় বড় আকৃতির নানা রকম মাছ৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
রাশ লীলার মেলা
মৌলভীবাজার জেলার সীমান্তবর্তী দুই উপজেলা কমলগঞ্জ আর আদমপুরে কার্তিক অগ্রহায়ণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় মনিপুরী সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব রাস লীলা৷ এ উপলক্ষে তিন দিনের মেলা বসে কমলগঞ্জের মাধবপুর ও আদমপুরের সনাঠাকুর মণ্ডপ এলাকায়৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
রথের মেলা
সাধারণত বাংলা বছরের আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথের মেলা বসে৷ সবচেয়ে বড় রথের মেলা বসে সাভারের ধামরাইয়ে৷ এছাড়া কুষ্টিয়ার রথখোলার মেলা, রাজশাহীর পুঠিয়ার রথের মেলা, সিলেটের লামাপাড়া রথযাত্রার মেলা উল্লেখযোগ্য৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
লালন মেলা
কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার ছেঁউড়িয়া গ্রামে মরমী শিল্পী লালন সাঁইয়ের সামাধিকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর দুইবার লালনমেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ তার একটি হচ্ছে লালন সাঁইজির তিরোধান তিথি উপলক্ষে এবং অন্যটি দোলপূর্ণিমায় লালন প্রবর্তিত সাধুসঙ্গ উপলক্ষে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মধু মেলা
যশোরজেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে প্রতি বছর বসে সপ্তাহব্যাপী মধু মেলা৷ বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে হয় এ মেলার আয়োজন৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
বটতলায় বৌমেলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে চারশ’বছরের পুরানো একটি বট গাছকে কেন্দ্র করে যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে বউ মেলা৷ বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় দিনে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীরা পরিবারের সুখ শান্তি ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানকার বট গাছকে পূজা করেন৷ এ উপলক্ষে পাঁচদিনের মেলাও বসে বট গাছের চারপাশে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
11 ছবি1 | 11
গ্রাম্য মেলা নিয়ে আপনাদের কোনো উদ্যোগ আছে কি, থাকলে সেগুলো কী ধরনের?
আসলে বিসিকের তেমন কোনো মেলা নেই৷ তবে আমরা মনীষীদের নামে কিছু মেলা করছি৷ এছাড়া আমাদের যে প্রোডাক্ট, যেমন ধরেন হস্তশিল্প সেগুলো নিয়ে আমরা কিছু মেলা করি৷ তার মধ্যে জামদানি মেলার কথা আমি উল্লেখ করতে পারি৷ আর বৈশাখী মেলাটা শহরে পরিচিত করেছে কিন্তু বিসিক৷ আগে গ্রামে হতো, ২-৩শ' জায়গায় হতো৷ কিন্তু শহরে হতো না৷ আমরা সেটাকে শহরে এনেছি৷ বিসিক কিন্তু কোন মেলায় পৃষ্ঠপোষকতা করে না৷ আমরা আমাদের কর্মসূচি অনুযায়ী কিছু কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মেলা করে থাকি৷ তাও কিন্তু আমরা এটা সব সময় করতে পারি না৷
বিসিকের উদ্যোগে কতগুলো মেলা হয়? এর কি কোনো পরিসংখ্যান আছে?
আমরা যেগুলো করি তা খুবই নগন্য৷ আমরা মনীষীদের নামে ৫-৬টি মেলা করি৷ আর পাঁচটি ঋতুতে কিছু মেলা করি৷ এই মেলাগুলো আমাদের সংস্কৃতির অংশ, যা আমরা সব সময় টেককেয়ার করতে পারি না৷ অন্য কোন বিভাগ বা দফতর হয়ত এটা দেখে৷
বর্তমানে গ্রাম্য মেলাতে কোন বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পায়?
জার্মানির সবচেয়ে বড় সাত লোকউৎসব
মিউনিখের অক্টোবরফেস্টে অংশ নিতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন৷ প্রতিবছর ষাট লাখের বেশি মানুষ জড়ো হন এই লোকউৎসবে৷ তবে এরকম উৎসব জার্মানিতে আরো আছে৷ চলুন সেগুলো দেখে নেই৷
ছবি: Stadtmarketing Herne
মিউনিখের অক্টোবরফেস্ট
নিঃসন্দেহে জার্মানির সবচেয়ে বড় লোকউৎসব অক্টোবরফেস্ট৷ প্রতিবছর ষাটলাখের বেশি মানুষ বাভারিয়ার এই উৎসবে হাজির হন, যাদের একটি বড় অংশ বিদেশি পর্যটক৷ কেউ কেউ সরাসরি উৎসবের বিয়ারের তাঁবুতে চলে যান৷ এমনকি সকালেও সেসব তাঁবুর সামনে লম্বা লাইন দেখা যায়৷ এরকম উৎসব কিন্তু জার্মানিতে আরো আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Markus C. Hurek
রাইনের পাড়ে কারমেস
বিয়ারের তাঁবু আর মেলায় বাদ্যবাজানোর দল শুধু বাভারিয়াতেই দেখা যায় না৷ জার্মানির নর্থরাইন-ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যেও বড় বড় উৎসবের আয়োজন করা হয়৷ এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টি হচ্ছে কারমেস, যেটি জুলাই মাসে দশদিনের জন্য অনুষ্ঠিত হয়৷ ফেরিস হুইল, লগ ফ্লুম এবং রোলার কোস্টারের মতো রাইডের দেখা মেলে এই উৎসবে, আর এতে বছরে গড়ে হাজির হন চল্লিশ লাখ মানুষ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ক্রানগার কারমেস
নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের দ্বিতীয় বড় উৎসবটি পাঁচ কিলোমিটার অবধি বিস্তৃত৷ এতে পঞ্চাশটির মতো আকর্ষণ রয়েছে৷ এই উৎসবের এক অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে ঘোড়ার বাজার এবং উদ্বোধনের আগের বিশেষ শো৷
ছবি: Stadtmarketing Herne
ব্রেমেন ফ্রি ফেয়ার
ব্রেমেন ফ্রি ফেয়ারের লম্বা ইতিহাস রয়েছে৷ সেই ১০৩৫ সালে তৎকালীন সম্রাট দ্বিতীয় কনরাড ব্রেমেন শহরকে এই মেলা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছিলেন৷ মেলায় কৃষক, কারিগর এবং ব্যবসায়ীরা স্বাধীনভাবে তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারেন৷ হাজার বছর ধরে বাৎসরিক এই মেলা চলছে৷ অক্টোবরে সতের দিনের জন্য এটি আয়োজন করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হামবুর্গার ডোম
ব্রেমেনের ফ্রি ফেয়ারের মতো হামবুর্গার ডোমের শুরুও সেই একাদশ শতকে৷ সেসময় কৃষক, কারিগর এবং ব্যবসায়ীরা হামবুর্গের ক্যাথড্রালের চারদিকে পণ্যের পসরা সাজানো শুরু করেন৷ সেই ভবন এখন আর নেই, তবে মেলাটি আছে৷ প্রতিবছর প্রায় চল্লিশ লাখ মানুষ এই মেলায় আসেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Bockwoldt
ক্যান্সটাটার লোকউৎসব
বাভারিয়ার প্রতিবেশী রাজ্য বাডেন ভুর্টেমব্যার্গের বিশেষ আকর্ষণ ক্যান্সটাটার লোকউৎসব৷ সেপ্টেম্বেরের শেষের দিক থেকে অক্টোবরের শুরু অবধি এই মেলার আয়োজন করা হয়৷ অক্টোবরফেস্টের মতো এই মেলাতেও অনেক মানুষ ভিড় করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Bockwoldt
লিবোরি
পাডারবনে আয়োজিত বিশেষ এই মেলায় বছরে ষোল লাখের বেশি মানুষ অংশ নেন৷ এটি মূলত চার্চ উৎসব, কারমেস, স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ফ্লি মার্কেটের এক মিশ্রন৷ গত কয়েক শতক ধরে নিয়মিত এই মেলার আয়োজন করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Dunker
7 ছবি1 | 7
আমি বলব যে, এই মেলাগুলো ছিল আমাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি মিলিয়ে একটা বিশেষ মুহূর্ত, যেখানে আমাদের অনেক লোকের মিলন হতো এবং আমরা অনেক পণ্যের সঙ্গে পরিচিত হতাম৷ সেটা কিন্তু এখনো আছে৷ এখন দেখা যাচ্ছে যে, এখানে বাণিজ্য প্রাধান্য পাচ্ছে৷ আর আকাশ সংস্কৃতির কারণে মেলাগুলোতে আমাদের ঐতিহ্যের যে বহিঃপ্রকাশ ছিল সেটা কমে যাচ্ছে৷ উদাহরণ দিয়ে বলি, আগে যে পুঁথি পাঠের আসর হতো সেটা এখন আর দেখি না৷ বাউল গানের আসর বসত এখন নির্দিষ্ট মেলা ছাড়া এই আসর দেখা যায় না৷ এখন অনেক মেলায় আমরা ভিডিও গেম দেখতে পাই৷ আমরা দেখছি, আমাদের সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ কিছুটা সরে গেছে৷ সেখানে আকাশ সংস্কৃতি অনেকটাই দখল করেছে৷
শহরে এবং গ্রাম্য মেলার মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়?
শহরের মেলাগুলো অনেক গোছালো হয়৷ এখানে পানি, টয়লেটসহ একটা গোছানো অবস্থা থাকে৷ কিন্তু গ্রামের মেলাগুলো প্রকৃতি আশ্রিত৷ একটা মাঠের মধ্যে ঘেরাও করে সেখানে মেলা হচ্ছে৷ শহরের মেলায় একটা জৌলুস আছে৷ কিন্তু গ্রামের মেলায় আবেগ আছে বা আন্তরিক পরিবেশ আছে৷ উভয় মেলাতেই একই ধরনের পণ্য পাওয়া যায়৷
দুই মেলার মধ্যে কি কোনো মিল আছে?
দুই মেলাতেই যারা আসেন তারা সবাই বাঙালি৷ পণ্য কিন্তু প্রায় একই ধরনের৷ তবে শহরের মেলায় কিছু সিলেকটিভ পণ্য আছে৷ যার কোয়ালিটিও একটু ভালো৷ কারণ শহরের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেশি৷ আর তরুণ প্রজন্মের কথা যদি বলি, দুই মেলাতেই সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ আছে৷
অক্টোবরফেস্ট: অফুরান আনন্দের মেলা
04:34
গ্রাম্য মেলা যদি কমে থাকে তাহলে সংস্কৃতিতে একটা প্রভাব পড়ার কথা, সেটা কেমন?
মেলার সংখ্যা কমছে কি কমছে না সেটা নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও আমরা বলতে পারি চোখে আমাদের কম পড়ে৷ আমাদের মেলাগুলোতে জনসমাগম কমে যাচ্ছে৷ এর ফলে আমাদের যোগাযোগের পরিধিটা কমে যাচ্ছে৷ আমাদের যে নতুন পণ্য তৈরি হচ্ছে সেটা আমরা সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারছি না৷ ফলে এর একটা অর্থনৈতিক ক্ষতিও হয়ত আছে৷ এছাড়া আবহমান বাংলাকে অনুধাবনও করা যায় না৷ বন্ধুত্ব ও পরিচিতি সংকুচিত হচ্ছে৷ এভাবেই আর্থ-সমাজিক একটা প্রভাব পড়ে৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷