1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আকায়েদ কে, বাংলাদেশে কী করত?

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৩ ডিসেম্বর ২০১৭

নিউ ইয়র্কের বোমা বিস্ফোরণের সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিক আকায়েদ উল্লাহর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর গ্রামে৷ তবে সে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঢাকার জিগাতলায় থাকতো৷ তিনমাস আগে সে দেশে আসে৷

USA New York - Schüsse in Manhattan
ছবি: Reuters/B. McDermid

রবিবার বিস্ফোরণের পর নিউ ইয়র্ক সিটির পুলিশ কমিশনার জেমস ও'নেইল জানান, আকায়েদের শরীরে বিস্ফোরক ‘ডিভাইস' সংযুক্ত ছিল৷ বোমাটি আকায়েদের শরীরে বিস্ফোরণ হওয়ায় সে নিজে তো বটেই, আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়৷ আহতদের ম্যানহ্যাটনের বেলভ্যু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷

জানা যায়, আকায়েদের বাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রামে৷ ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাবা-মায়ের সঙ্গে সে যুক্তরাষ্ট্রে যায়৷ পরে আকায়েদ স্থায়ী মার্কিন অধিবাসী হিসেবে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে বসবাস করতে শুরু করে৷ এদিকে বাংলাদেশিপুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়, এ বছরের ৮ সেপ্টেম্বর আকায়েদ শেষবারের মতো বাংলাদেশে এসেছিল৷

‘‘এই পরিবারটি ২৬-২৭ বছর আগে গ্রাম ছেড়ে ঢাকা চলে যায় ফলে এলাকায় তাদের তেমন কেউ চেনে না’’

This browser does not support the audio element.

যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের দাবি, আটক আকায়েদ জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামি স্টেট বা আইএস  দ্বারা অনুপ্রাণিত৷ কিন্তু তার সঙ্গে আইএস-এর সরাসরি কোনো যোগাযোগ ছিল না৷

নিউ ইয়র্ক সিটি ট্যাক্সি এবং লিমোজিন কমিশন জানিয়েছে, ‘আকায়েদ সেখানে ট্যাক্সিচালক হিসেবে কাজ করতো৷ ২০১২ মার্চ থেকে ২০১৫ মার্চ পর্যন্ত তার নামে ট্যাক্সির লাইসেন্সও করা ছিল৷'

এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর বাংলাদেশ পুলিশও তার খোঁজ-খবর নেয়া শুরু করে৷ সন্দ্বীপ এবং ঢাকার পুলিশ এরইমধ্যে আকায়েদের খালু তুসান কোম্পানি, চাচাত ভাই সোহরাব হোসেন এবং ফুপাত ভাই আহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে৷ ঢাকায় তার স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট৷ সেখান থেকেই জানা যায়, আকায়েদের গ্রামের বাড়ি মুছাপুর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে গাছুয়া গ্রামে তার মামা বাড়ি৷

‘‘২০১১ সালে আকায়েদ অ্যামেরকিা চলে যায় তবে তার স্ত্রী ঢাকাতেই আছে৷ সেপ্টেম্বর মাসে তার স্ত্রীর সন্তান হয়, তখন সে ঢাকায় এসেছিল''

This browser does not support the audio element.

আকায়েদের চাচাত ভাই সোহরাব হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আকায়েদরা পাঁচ ভাই-বোন৷ তারা দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের বাড়িতে থাকে না, থাকত ঢাকার জিগাতলায়৷ তবে ২০১০-১১ সালের দিকে তারা সবাই অ্যামেরকিা চলে যায়৷ তার বাবা সানাউল্লাহ মারা গেছেন বেশ কয়েক বছর আগে৷ আকায়েদ বিবাহিত এবং তার একটি সন্তান আছে৷ ও বিয়ে করেছে চাঁদপুরে৷''

সোহরাব আরো জানান, ‘‘আকায়েদ মাদ্রাসায় নয়, স্কুলে পড়ত৷ তবে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা জানা নেই৷ টেলিভিশেনের খবরেই আমি প্রথম জানতে পারি যে, নিউ ইয়র্কের বোমা হামলার সঙ্গে আকায়েদ জড়িত৷ পরে পুলিশও আমাকে ফোন করে দেখা করতে বলে৷ অবশ্য তার এ ধরনের কাজ সম্পর্কে আমার জানা নাই৷ সে আমার ছোট, আমাকে সম্মান করত৷''

‘‘সোমবার রাত থেকেই বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমাকে ফোন করে, আকায়েদের বাড়ি মুছাপুর তবে তাদের পরিবারের কেউ গ্রামে থাকে না’

This browser does not support the audio element.

মুছাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল খায়ের নাদিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সোমবার রাত থেকেই বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আমাকে ফোন করে৷ আকায়েদের বাড়ি মুছাপুর৷ তবে তাদের পরিবারের কেউ গ্রামে থাকে না দীর্ঘদিন ধরে৷''

সন্দ্বীপ প্রেসক্লাবের সভাপতি রহিমুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘এই পরিবারটি ২৬-২৭ বছর আগে গ্রাম ছেড়ে ঢাকা চলে যায়৷ ফলে এলাকায় তাদের তেমন কেউ চেনে না৷ তবে গত সেপ্টেম্বর মাসে আকায়েদ একবার গ্রামে এসেছিল৷''এদিকে দুপুরে ঢাকার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা জিগাতলার মনেশ্বর রোড থেকে আকায়েদ উল্লাহর মামাত ভাই আব্দুল আহাদ, স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুরিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে৷ টেলিফোনে আহাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘২০১১ সালে আকায়েদ অ্যামেরকিা চলে যায়৷ তবে তার স্ত্রী ঢাকাতেই আছে৷ সেপ্টেম্বর মাসে তার স্ত্রীর সন্তান হয়, তখন সে ঢাকায় এসেছিল৷'' তিনি জানান, ‘‘আকায়েদ কাকলি উচ্চ বিদ্যালয় রাইফেল স্কুল এবং সিটি কলেজে বিবিএ পড়াশুনা করেছে৷ তবে পড়াশোনা শেষ না করেই সে অ্যামেরকিা চলে যায়৷ অ্যামেরকিা যাওয়ার আগে আমি তাকে কোনো খারাপ কাজে যুক্ত হতে দেখিনি৷''

‘‘আকায়েদরা পাঁচ ভাই-বোন থাকত ঢাকার জিগাতলায় তবে ২০১০-১১ সালের দিকে তারা সবাই অ্যামেরকিা চলে যায়’

This browser does not support the audio element.

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল বলেন, ‘‘আমরা আকায়েদের  স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি৷ তাঁদের কাছ থেকে আকায়েদ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছি৷ তার ‘ট্র্যাক রেকর্ড' যাচাই করছি৷''

অন্যদিকে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা তার আত্মীয়স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি৷ আকায়েদ ও তার স্বজনদের অতীত রেকর্ডের ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি৷''

বাংলাদেশের পুলিশ মহাপরিদর্শকের এ কে এম শহিদুল হক বিবিসিকে সোমবার অবশ্য বলেন, ‘‘আকায়েদের নামে বাংলাদেশে কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের রেকর্ড নেই৷''

বন্ধু, প্রতিবেদনটি সম্পর্কে কিছু লেখার থাকলে লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ