ফার্নিচার অ্যান্ড লাইট – আসবাব ও আলো৷ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ডিজাইনের আসবাবপত্রের লেটেস্ট ফ্যাশান দেখতে হলে স্টকহোমের এই প্রদর্শনীটিতে আসতে হবে৷
বিজ্ঞাপন
স্টকহোমের ‘ফার্নিচার অ্যান্ড লাইট ফেয়ার'৷ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ফার্নিচার ডিজাইনের বাৎসরিক প্রদর্শনী৷ সাড়ে ছ'শোর বেশি প্রদর্শক এখানে এসেছেন৷ দর্শকদের সংখ্যা চল্লিশ হাজার অতিক্রম করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷ ইউরোপের উত্তরে এই শীতপ্রধান দেশগুলির তৈরি আসবাব সারা দুনিয়াতে একটা ‘ট্রেন্ড', বলেছেন প্রদর্শনীর পরিচালক সেসিলিয়া ন্যুব্যার্গ৷
এ বছর সর্বত্র রংয়ের খেলা৷ চল এখন চোখ-ধাঁধানো রং আর কিম্ভূত আকৃতির আসবাবপত্রের৷ যেমন পিঠের দিকটা অতিমাত্রায় বড়, এমন সব সোফা কিংবা আরাম কেদারা৷
আর একটি নতুন প্রবণতা চোখে পড়বে, যাকে বলা যেতে পারে ‘ওয়ার্ক বেঞ্চ লুক'৷ এ সব আসবাব বহুমূল্য হলেও, দেখলে মনে হবে যেন ছুতোর মিস্ত্রীর হাতে তৈরি৷
জার্মান তরুণদের পছন্দের আসবাবপত্র
সবার জন্যই সব দেশেই আসবাবপত্র পাওয়া যায়৷ তবে বাড়িতে এনে নিজেই কিছুটা কাঠমিস্ত্রীর কাজ করে সেগুলোকে বানাতে হয়৷ আর এসব আসবাবপত্রই জার্মান তরুণদের বেশি পছন্দ
ছবি: Getty Images
নিজেই কাঠমিস্ত্রী
মানুষের পছন্দের কত কী থাকে, কিন্তু তাই বলে আসবাবপত্র? হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, আসবাবপত্রের কথাই হচ্ছে৷ সোফা, টেবিল, চেয়ার, খাট, আলমারি, বড়-ছোট – সবার জন্যই সব দেশেই আসবাবপত্র পাওয়া যায়৷ তবে বাড়িতে এনে নিজেই কিছুটা কাঠমিস্ত্রীর কাজ করে সেগুলোকে বানাতে হয়৷ আর এসব আসবাবপত্রই জার্মান তরুণদের বেশি পছন্দ৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দামে সস্তা
ফার্নিচারগুলো দোকানে সুন্দর করে সাজানো থাকে, ঠিক আপনি যেমনটা চান সেরকমই৷ বাড়িতে নিয়ে যাবার সময় সব ফার্নিচারই ভাঁজ করা থেকে, অর্থাৎ ফার্নিচারের প্রতিটি অংশ আলাদা করা থাকে, যা পরে আপনাকে একাই বাড়িতে তৈরি করতে হয় বা লাগাতে হয়৷ সাথে দেয়া থাকে তার বর্ণনা এবং প্রয়োজনীয় স্ক্রু, পেরেক ইত্যাদি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
তরুণদের পছন্দ
এসব ফার্নিচার দামে কিছুটা কম, জায়গাও কম লাগে৷ যেমন চারজন বসে খাওয়ার জন্য একটি টেবিল, সবসময় সেটাকে সেভাবেই রাখা হয়৷ পরে কখনো মেহমান এলে সেটাকে বড় করার ব্যবস্থা থাকে, যাতে ৮ জন মানুষ বসে খেতে পারে৷ সোজা কথায় ছোট বাড়িতে কম জায়গায় এসব ফার্নিচার আঁটানো সম্ভব৷
ছবি: picture alliance / dpa
আইকিয়া বা ইকেয়া
এ ধরনের ফার্নিচার জার্মানির অনেক দোকানে পাওয়া গেলেও বেশিরভাগই পাওয়া যায় ‘ইকেয়া’ নামক এক সুইডিশ দোকানে৷ এটা একটি চেন শপ, বিশ্বের অনেক দেশেই যার শাখা রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বাচ্চাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
তরুণদের পছন্দের দোকানগুলোতে বাচ্চাদের জন্য রয়েছে বিশেষ ফার্নিচার৷ আর এসব দোকানে ছোট্ট বাচ্চারা যেতে ভীষণ পছন্দ করে৷ ওদের খেলার এবং খাওয়ার জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা৷ মায়েরা ছোট বাচ্চাদের খেলতে দিয়ে নিজেরাও মনের সুখে কেনাকাটা করতে পারেন৷ আর বাচ্চারাও মনের আনন্দে নিজেদের মতো করে খেলতে পারে৷ বলা বাহুল্য, বাচ্চাদের দেখাশোনার জন্য সেখানে বেবিসিটারও থাকে৷
ছবি: DW
জায়গা বাঁচায়
একটি সুন্দর ডাবল বেড শুধু ঘুমানোর জন্য নয়, পাশাপাশি ড্রয়ারেরও কাজ করে৷ শুধু তাই নয়, কোনো বিছানা তুলে জায়গা বাঁচানোর জন্য সেটাকে আলমারি করে রাখা যায়৷
ছবি: Museum für Kommunikation Frankfurt
প্রচণ্ড ভিড়
এই ধরনের দোকানগুলোতে সবসময়ই থাকে প্রচণ্ড ভিড়৷ আর ইকেয়া হলে তো কথাই নেই৷ দোকানের সামনেই কয়েক হাজার গাড়ি পার্ক করার জন্য বিশাল জায়গাসহ কয়েক তলা বিশিষ্ট পার্কিং হাউস রয়েছে৷ তারপরও জায়গা পাওয়া যায়না৷ যদিও এসব ফার্নিচারের দোকানগুলোতে ফার্নিচার ছাড়াও ছোটখাটো জিনিস পাওয়া যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আনন্দ পাওয়া যায়
তরুণদের নতুন ফার্নিচার কেনার কথা হলেই যেন প্রথমেই এ ধরনের দোকানের কথা মনে পড়ে, বিশেষ করে ইকেয়ার কথা৷ তরুণরা দোকান থেকে ফার্নিচার নিয়ে এসে ঝটপট নিজেরাই তৈরি করে ফেলে৷ তাদের ভাষায় পয়সা বাঁচানো এবং নিজেদের হাতে তৈরি করার মধ্যেও রয়েছে আলাদা আনন্দ৷
ছবি: Getty Images
8 ছবি1 | 8
‘গ্রিনহাউস' হল প্রদর্শনীর কেন্দ্রবিন্দু৷ এখানে তরুণ ডিজাইনাররা তাদের সর্বাধুনিক সৃজনশীলতা দেখাচ্ছেন৷ প্রত্যেকেরই আশা, কোনো বড় আসবাবপত্রের কোম্পানি তাদের ডিজাইন কিনে নিয়ে ব্যাপক হারে তৈরি ও বিক্রি করবে৷
অফিসের আসবাবপত্রের বিপ্লব ঘটানোর পরিকল্পনা চলছে এ বছরের প্রদর্শনীতে৷ চেয়ারে ঢিলেঢালা হয়ে বসাটা নাকি পিঠ আর মেরুদণ্ডের জন্য অত্যন্ত খারাপ, বলেছেন বিজ্ঞানীরা৷ তাই হেলতে-দুলতে পারে, এমন এক ধরনের টুল উদ্ভাবন করা হয়েছে, যার উপর বসে কাজ করাও চলবে, আবার ব্যালান্স করাও চলবে৷ অথবা এক বিশেষ ‘টেলিস্কোপ' টুল ব্যবহার করে আরো উঁচুতে বসা যাবে৷ তার প্রয়োজনও পড়বে, কেননা ভবিষ্যতের টেবিলগুলোও হবে উঁচু৷ এ ভাবেই অফিসের কর্মচারীরা ফিট থাকবেন৷