আদালতে গরমের ছুটি পড়ে গেছে। তাই আগামী একমাস জামিনের আবেদনও করতে পারবেন না তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।
বিজ্ঞাপন
তিনি এবং তার মেয়ে দুইজনেই তিহার জেলে বন্দি। গরুপাচারকাণ্ড-সহ একাধিক মামলা আছে তাদের বিরুদ্ধে। গত কয়েকমাস ধরে বার বার তিহার থেকে বার হওয়ার আবেদন করছেন তৃণমূলের বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। তিহার থেকে রাজ্যের জেলে ফিরে আসার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু আদালত জানিয়ে দিয়েছে, গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ার ফলে আপাতত এক মাস তার মামলার শুনানি হবে না। ফলে আপাতত দিল্লির তিহার থেকে নিস্তার মিলছে না অনুব্রত এবং তা মেয়ের।
তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা অনুব্রত গ্রেপ্তার
গরুপাচার কাণ্ডে বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআইয়ের ক্যাম্প অফিসে তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বোলপুর থেকে গ্রেপ্তার
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ বোলপুরের বাড়ি থেকে অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিবিআইয়ের বিশাল দল তার বাড়িতে গিয়ে অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
সিবিআইয়ের কৌশল
বুধবার মাঝরাতে পাঁচটি গাড়ি নিয়ে বোলপুরে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। বৃহস্পতিবার সকালে তার বাড়ি ঘিরে ফেলে সিআরপিএফ জওয়ানরা। দেড়ঘণ্টা বাড়িতে কথা বলার পর অনুব্রতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
গরুপাচার কাণ্ডে গ্রেপ্তার
অনুব্রতের বিরুদ্ধে গরুপাচার কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ। আগেই তৃণমূলের এই হেভিওয়েট নেতার দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিতর্কিত নেতা
বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন অনুব্রত। এর আগে পুলিশকে বোমা মারার কথা বলেছিলেন অনুব্রত। ভোটের সময় চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর কথা বলেছেন। গাঁজা কেসে বিরোধীদের গ্রেপ্তার করানোর কথা বলেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
অনুব্রতের লুকোচুরি
এর আগে ১০ বার অনুব্রতকে তলব করেছিল সিবিআই। একবার মাত্র সিবিআইয়ের নিজাম প্যালেসে গেছেন তিনি। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বার বার জিজ্ঞাসাবাদ এড়িয়ে গেছেন অনুব্রত।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
অসুখ বিতর্ক
এসএসকেএম হাসপাতালে গত সোমবার চিকিৎসার জন্য গেছিলেন অনুব্রত। সেখানে তাকে দেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, বার্ধক্যজনিত কিছু রোগে ভুগছেন তিনি। তবে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু বোলপুরের চিকিৎসকরা তাকে বেডরেস্টের নির্দেশ দেন।
ছবি: Subrata Goswami
আসানসোলের পথে
আসানসোল আদালতে তোলা হতে পারে অনুব্রতকে। তার আগে সিবিআই তাকে আরো জেরা করতে পারে মনে করা হচ্ছে। অনুব্রতকে সরাসরি গরুপাচার মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গেছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
7 ছবি1 | 7
এদিকে অনুব্রত জানিয়েছেন, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাই তৃণমূলের দুই সাংসদ দিল্লি গিয়ে জেলে তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলে তৃণমূলসূত্র জানিয়েছে। দলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন এবং বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল শুক্রবার তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। অনুব্রতের কন্যার সঙ্গেও তারা দেখা করতে পারেন।
রাজনৈতিকভাবে তৃণমূল সাংসদদের এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। অনুব্রত গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো নেতা তার সঙ্গে দেখা করেননি। তৃণমূলের সাবেক মহাসচিব তথা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও জেলে। তার সঙ্গেও কেউ দেখা করেননি। পার্থের সঙ্গে এখনো দেখা করার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের আগে অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করার রাজনৈতিক তাৎপর্য আছে। বীরভূমে অনুব্রতের প্রভাব এবং ক্ষমতা এখনো বজায় আছে। ফলে জেলবন্দি অনুব্রতের পাশে দল আছে, এই বার্তা দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট পকেটস্থ করার চেষ্টা করছে তৃণমূল, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বস্তুত, এই কারণেই কিছুদিন আগে স্বয়ং তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অনুব্রতের নাম উচ্চারণ করেছিলেন।