রোববারের লড়াই খুবই কঠিন ছিল বলে জানালো ইউক্রেন। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিজ্ঞাপন
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ফেসবুকে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, রোববারের লড়াই ছিল সবচেয়ে কঠিন। আকাশ ও মাটিতে তাদের রাশিয়ার আক্রমণের মোকাবিলা করতে হয়েছে। আর মাটিতে চারদিক থেকে গোলা এসে পড়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাশিয়ার ছয়টি যুদ্ধবিমান একসঙ্গে এসে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। ইউক্রেনের সেনার দাবি, তারা রাশিয়ার একটি হেলিকপ্টার এবং একটি ড্রোন ধ্বংস করতে পেরেছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিয়েভে দ্বিতীয় দিনেও লড়াই হয়েছে। তবে তার তীব্রতা আগের দিনের থেকে কম ছিল। তবে খারকিভের লড়াই ছিল খুবই তীব্র। রাশিয়া সেখানে বিমান থেকে সমানে ক্ষেপণাস্ত্র ও কামান থেকে গোলা ছুঁড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের দাবি, রাশিয়ার বাহিনী বিভিন্ন দিক থেকে ইউক্রেনের ভিতর ঢুকে পড়েছে। তবে ইউক্রেনের সেনাও তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করছে।
কিয়েভ-সহ অনেক শহরে আছড়ে পড়েছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। রাশিয়ার যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হচ্ছে। রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের একটি শহরের ছবি। আগুন জ্বলছে।
ছবি: picture alliance/dpa/Mary Ostrovska/AP
গোলার তাণ্ডব
ইউক্রেনের শহর মারিয়াপোল। রাশিয়ার কামান থেকে ছোড়া গোলার আঘাতে বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি নষ্ট হয়েছে। ইউক্রেনের অনেক শহরের ছবি এরকমই।
ছবি: Sergei Grits/AP/picture alliance
বোমার আঘাতে
পূর্ব ইউক্রেনের চুগুয়েভ শহরের ছবি। বোমার আঘাতে বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। তারপর সেখানে এসেছেন মানুষ। খুঁজছেন হারানো জিনিস। এবার কোথায় যাবেন, তা-ই ভাবছেন।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
বিপন্ন মানুষ
চুগুয়েভের আরেকটি দৃশ্য। বোমার আঘাতে বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি আর চলার অবস্থায় নেই। তার কাছেই মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন এক বিপন্ন ব্যক্তি।
ছবি: Aris Messinis/AFP/Getty Images
আগুন জ্বলছে
কিয়েভের কাছে রাশিয়ার হামলায় গুঁড়িয়ে গেছে বেসরকারি বাড়ি। সেখানে তখনো আগুন জ্বলছে। কিয়েভে একের পর এক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত
ইউক্রেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে রাশিয়া। তারপর সেখান থেকে বের হওয়া কালো ধোঁয়া চারপাশ ঢেকে দিয়েছে।
ছবি: Evgeniy Maloletka/AP/picture alliance
বিমানঘাঁটি দখলের লড়াই
কিয়েভের ঠিক বাইরে একটি বিমানঘাঁটি দখল করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। তীব্র লড়াই চলছে। তার আশপাশের এলাকায় বোমা ফেলেছে রাশিয়া। তেমনই একটি এলাকার ছবি।
ছবি: DANIEL LEAL/AFP
ধ্বংসের চেহারা
কিয়েভের বাইরে রাশিয়ার আক্রমণের পরের ছবি। চারপাশে শুধু ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসের ছবি।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP/picture alliance
ট্রেন ধরার জন্য
কিয়েভের মানুষ ট্রেন ধরার জন্য একটি সাবওয়েতে ছুটছেন। তারা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চান। রাশিয়ার হামলার মুখে অসহায় বোধ করছেন তারা।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
বাসে ওঠার ভিড়
বাসে করে কিয়েভ থেকে দূরে যাওয়ার জন্য মরিয়া মানুষের ভিড়।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
হামলার হাত থেকে বাঁচতে
রাশিয়ার হামলার হাত থেকে বাঁচতে সাবওয়েকে নিরাপদ মনে করছেন অনেকে। সেখানেই থাকছেন তারা।
ছবি: Emilio Morenatti/AP/dpa/picture alliance
11 ছবি1 | 11
আলোচনায় সম্মতি
রাশিয়ার সঙ্গে বেলারুশ সীমান্তে আলোচনায় রাজি হয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন পারমাণবিক প্রতিরোধ বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশ দেয়ার পরই ইউক্রেন আলোচনায় রাজি হয়। পুটিনের এই নির্দেশের অর্থ হলো, প্রয়োজন মনে করলে, রাশিয়া যে কোনো সময় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার বেলারুশ সীমান্তে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা।
জেলেনস্কির বক্তব্য
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে ফোনে জেলেনস্কি বলেছেন. ইউক্রেনজুড়েই রাশিয়ার সেনার সঙ্গে ইউক্রেনের বাহিনীর লড়াই চলছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন, কার কত শক্তি
তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। একনজরে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের সামরিক শক্তি।
ছবি: Carlos Barria/REUTERS
যুদ্ধরত সেনা
ইউক্রেনের হাতে আছে দুই লাখ যুদ্ধরত সেনা। যারা সরাসরি লড়াইয়ে যোগ দিয়েছে। রাশিয়ার হাতে আছে আট লাখ ৫০ হাজার যুদ্ধরত সেনা। যারা যে কোনো সময় লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। এদেরই একটি অংশ এখন লড়াইয়ের ময়দানে আছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP Photo/picture alliance
সংরক্ষিত সেনা
ইউক্রেনের হাতে সংরক্ষিত বা রিজার্ভড ব্যাটেলিয়ন আছে আড়াই লাখ। যারা প্রয়োজনে লড়াইয়ের ময়দানে নামবে। রাশিয়ার হাতেও সংরক্ষিত সেনার সংখ্যা আড়াই লাখ।
ছবি: Aris Messinis/AFP
প্যারামিলিটারি বাহিনী
রাশিয়ার প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংখ্যা আড়াই লাখ। এর বাইরে স্পেশাল ফোর্স আছে। যারা ইউক্রেন হামলায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ইউক্রেনের প্যারামিলিটারি বাহিনীর সংখ্যা মাত্র ৫০ হাজার।
ইউক্রেনের হাতে সাজোয়া গাড়ি বা আর্মার্ড ভেহিক্যালের সংখ্যা ১২ হাজার ৩০৩। রাশিয়ার হাতে এই ধরনের গাড়ির সংখ্যা ৩০ হাজার ১২২। বস্তুত, সম্পূর্ণ বুলেটপ্রুফ এই গাড়িগুলিতে করেই সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছায়। এর সাহায্যে প্রতিপক্ষের উপর আঘাতও হানা যায়।
ইউক্রেনের হাতে ফাইটার জেট বা যুদ্ধবিমান আছে ৬৯টি। রাশিয়ার কাছে সেখানে ফাইটারের সংখ্যা ৭৭২।
ছবি: Erik Romanenko/Tass/imago images
যুদ্ধের হেলিকপ্টার
যুদ্ধ করার মতো হেলিকপ্টার ইউক্রেনের কাছে আছে মাত্র ৩৪টি। রাশিয়ার কাছে সেখানে এই হেলিকপ্টারের সংখ্যা ৫৪৪। ইউক্রেন হামলার প্রথম দিন রাশিয়া এই হেলিকপ্টার প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করেছে। হেলিকপ্টারের সাহায্যে বোমা ফেলা হয়েছে। গুলি চালানো হয়েছে।
ছবি: Efrem Lukatsky/AP Photo/picture alliance
এবং নৌবহর
নৌবহরেও রাশিয়ার থেকে অনেক পিছিয়ে আছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের যুদ্ধজাহাজের সংখ্যা ৩৮টি। রাশিয়ার হাতে সেখানে ৬০৫টি যুদ্ধজাহাজ। কৃষ্ণসাগরে যার অনেকগুলিকে স্ট্যান্ডবাই করে রাখা হয়েছে।
ছবি: Iranian Army/AP Photo/picture alliance
পরমাণু শক্তি
ইউক্রেনের হাতে একটিও পরমাণু অস্ত্র নেই। অন্যদিকে রাশিয়া বিশ্বের অন্যতম পরমাণু শক্তিধর দেশ। ছয় হাজার ২৫৫টি পরমাণু অস্ত্র আছে তাদের হাতে।
ছবি: AP Photo/picture-alliance
10 ছবি1 | 10
জনসন জানিয়েছেন, জেলেনস্কি অসাধারণ নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই অবস্থায় যুক্তরাজ্যের পক্ষে যা করা সম্ভব তা করা হবে। যুক্তরাজ্য ও তার শরিক দেশগুলি থেকে ত্রাণসাহায্যও ইউক্রেন পৌঁছেছে।
ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান
ইইউ-র পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দেবেন। গোলাবারুদ তো দেবেনই তার সঙ্গে যুদ্ধবিমানও দেয়া হবে। জার্মানিও ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্র দিচ্ছে।
ইইউ চায়
ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেছেন, তিনি চান ইউক্রেন ইইউ-তে যোগ দিক। একটি ফরাসি সংবাদ নেটওয়ার্ককে তিনি বলেছেন, ওরা আমাদেরই একজন। আমরা চাই, ওরা ইইউ-তে যোগ দিক।