ঘরবাড়িতে আগুন লাগলে দমকলকর্মীদের দ্রুত তৎপরতা প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পারে৷ কিন্তু তেল শোধনাগারে আগুনের মাত্রা মারাত্মক আকার ধারণ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে৷ সেই কাজে উন্নতির চেষ্টা চলছে৷
বিজ্ঞাপন
তৈল শোধনাগারে আগুন লেগেছে৷ উত্তাপ হাজার ডিগ্রিরও বেশি৷ গলগল করে ধোঁয়া বের হচ্ছে৷ চারিদিকে আগুনের লেলিহান শিখা৷ দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন৷ বারবার চেষ্টা করেও বিফল হচ্ছেন৷ আগুন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না৷ এই আগুন অত্যন্ত বিপজ্জনক৷ দমকলকর্মীরাও আসল৷ তবে এ ক্ষেত্রে ইচ্ছা করে আগুন লাগানো হয়েছে৷ জায়গাটা দমকলকর্মীদের প্রশিক্ষণের ক্যাম্প৷ সেখানে মহড়া চলছে৷
জার্মানিতে শেল কোম্পানির এক তৈল শোধনাগারে মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে৷ দমকলের সব গাড়ি নিয়ে কর্মীরা এগিয়ে যাচ্ছেন৷ অপরিশোধিত তেল নিয়ে কাজ করলে বড় আকারে আগুন লাগার আশঙ্কা থাকে৷ সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে বিপর্যয় এড়ানো যাবে কি না, কয়েক মিনিটের মধ্যে তা বোঝা যায়৷
সত্যি আগুন লাগলে প্রতিটি পদক্ষেপ সফল হতে হবে৷ এখানে মহড়ার সময় দমকলকর্মীরা শুধু জল ব্যবহার করতে পারছেন৷ আসল আগুনের মাঝে প্রশিক্ষণ অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারতো৷
নিরাপত্তার সবচেয়ে কড়া মানদণ্ড আগুনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুরক্ষা দিতে পারে৷ দমকলকর্মীরা ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত থাকেন৷ তৈল শোধনাগারের সব প্রান্তে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রয়েছে৷ তার জন্য বছরে কয়েক কোটি ইউরো ব্যয় হয়৷ শেল কোম্পানির মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান ফন হ্যোনসব্র্যোশ বলেন, ‘‘শেল কোম্পানি এবং কোম্পানির সব প্লান্টে নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পায় – বিশেষ করে এমন শোধনাগারে৷ অর্থাৎ আমাদের নিজস্ব দমকল বাহিনীর অবশ্যই প্রয়োজন আছে৷''
বাংলাদেশের কয়েকটি রোবটের কথা
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা এখন অনেক ধরনের রোবট তৈরি করছেন৷ তার কয়েকটির কথা জানা যাবে এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ড্রোন বা কোয়াডকপ্টার
জঙ্গি দমনে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন ব্যবহারের পর থেকে শব্দটি বেশ পরিচিত৷ তবে ড্রোন দিয়ে করা যায় আরও অনেক কাজ৷ তাই বাংলাদেশের তরুণরা ড্রোন নির্মাণে আগ্রহী হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে তারা সফলও হচ্ছেন৷ কয়েকটি টিভি চ্যানেল দৃশ্য ধারণের কাজে এ সব ড্রোন ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে৷
ছবি: DW
বাংলা ভাষা বোঝা রোবট
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী ২০১৩ সালে একটি রোবট তৈরি করেন যেটা বাংলা ভাষা বোঝে৷ এই রোবটকে বাংলায় ‘ডানে যেতে’ বললে সেটি ডানে যেতে পারে৷ নির্মাতারা বলেন, মানব কল্যাণে বিশেষ করে হুইল চেয়ার হিসেবে এই রোবট ব্যবহার করা যেতে পারে৷ ছবিতে নির্মাতাদের দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Shadly Salahuddin
ওয়েল্ডিং কাজে রোবট
জাহাজ নির্মাণ সহ বিভিন্ন শিল্পে ওয়েল্ডিং-এর কাজ হয় প্রচুর৷ এই কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকদের চোখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ অথচ রোবট দিয়ে এই কাজ করানো যেতে পারে বলে জানান ‘প্ল্যানেটার বাংলাদেশ’ এর প্রধান নির্বাহী রিনি ঈশান খুশবু৷
ছবি: Rini Eshan Khushboo
টেলিপ্রেজেন্স রোবট
এর মাধ্যমে অফিসের বাইরে থেকেও অফিসে কে কী করছেন তা দেখতে পারেন অফিসের প্রধান৷ এছাড়া চিকিৎসকরা অন্য স্থানে থেকেও রোগীকে পরামর্শ দিতে পারেন৷ টেলিপ্রেজেন্স রোবটকে এমন আরও অনেক কাজে লাগানো যেতে পারে বলে জানান প্ল্যানেটার বাংলাদেশ এর খুশবু৷ ছবিতে তাঁকে নাসা-য় একটি রোবট উপস্থাপন করতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Rini Eshan Khushboo
দমকল কর্মী রোবট
তৈরি পোশাক কারখানা সহ বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা প্রায় ঘটে৷ সেই আগুন নেভাতে ছুটে যান দমকল কর্মীরা৷ ভবিষ্যতে হয়ত তাদের সঙ্গে যোগ দেবে রোবট৷ বাংলাদেশেই এ ধরনের রোবট তৈরির কাজ চলছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন ‘রোবটিক্সবিডি ডটকম’-এর অ্যাডমিন শিবলী ইশতিয়াক৷
ছবি: Reuters
উঁচু ভবন পেইন্ট করা
ঢাকা শহরে এখন অনেক উঁচু ভবন তৈরি হচ্ছে৷ এসব ভবনের বাইরের দিকটা পেইন্ট করতে গিয়ে শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটছে৷ এই কাজে সাহায্য করতে পারে এমন রোবট তৈরির কাজ চলছে৷
ছবি: Harun Ur Rashid
গোয়েন্দাকাজে রোবট
বিখ্যাত ‘ট্রান্সফরমার’ মুভির কথা মনে আছে? ঐ যে একই জিনিস একেকবার একেক রূপ ধারণ করতে পারে! কোনো রোবট যদি এমন হয় তাকে তো গোয়েন্দা কাজে লাগানো যেতেই পারে৷ সেটাই চেষ্টা করছে প্ল্যানেটার বাংলাদেশ৷ অনেক দূর এগিয়েছেও তারা৷
ছবি: Rini Eshan Khushboo
জীবন বাঁচাতে রোবট
সাগরে ডুবে মৃত্যুর খবর প্রায়ই শুনি আমরা৷ তবে কোয়াডকপ্টার ব্যবহার করে ডুবন্ত কারও কাছে লাইফ জ্যাকেট ও ভেস্ট পাঠিয়ে তাঁকে বাঁচানো যেতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
8 ছবি1 | 8
প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ব্যস্ততা চলছে৷ নেদারল্যান্ডসের রটারডাম শহরের কাছে ফাল্ক রিস্ক এলাকায় জার্মান দমকলকর্মীরা ৩ দিন ধরে আগুনের আসল শিখা নেভানোর চেষ্টা করছেন৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে, মানুষের জীবন বিপন্ন৷ দমকলকর্মীদের মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে৷
এবার আরও বিপদ৷ আগুনের শিখা এগিয়ে আসছে৷ প্রবল উত্তাপ টের পাওয়া যাচ্ছে৷ প্রশিক্ষণ হলেও বাস্তব বটে৷ ভুল করলে সহকর্মীরা আচমকা আগুনের গ্রাসে পড়বেন৷ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মহড়া সর্বনাশা রূপ নিতে পারে৷ তার উপর ঘন ধোঁয়ার ফলে ভালো করে দেখা যাচ্ছে না, কাজে বাধা পড়ছে৷
আসল ঘটনার মতো এমন মহড়ার সময়েও কর্মীরা মানসিক চাপের মুখে পড়ছেন৷ এমন চরম পরিস্থিতি এবং তার ফলে মনে ভয় জাগলে তা কীভাবে সামলাতে হয়, সেটাও তাঁদের শিখতে হচ্ছে৷