জার্মানিতে সঙ্গে অস্ত্র রাখার প্রবণতা বেড়েছে৷ পাঁচ বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি মানুষ এখন সঙ্গে গ্যাস পিস্তল রাখছেন৷ রাইফেলসহ অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র রাখার প্রবণতাও বেড়েছে৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির রাইনিশে পোস্ট পত্রিকা ১৬টি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মুহূর্তে জার্মানির ছয় লাখ ৪০ হাজার মানুষের গ্যাস পিস্তলের লাইসেন্স রয়েছে৷ গত বছর এর চেয়ে ৩০ হাজার কম মানুষের এই লাইসেন্স ছিল৷ গ্যাস পিস্তল এবং অন্য অস্ত্র সঙ্গে রাখার প্রবণতা মূলত ২০১৪ সালের পর থেকেই বাড়ছে৷ ২০১৪ সালে সারা জার্মানিতে মাত্র দুই লাখ ৬০ হাজার মানুষের কাছে গ্যাস পিস্তলের লাইসেন্স ছিল৷
গ্যাস পিস্তলের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখার প্রবণতাও বাড়ছে৷ ২০১৮ সালের হিসেব অনুযায়ী জার্মানিতে ৫৪ লাখ মানুষের কাছে রাইফেলের মতো সত্যিকারের আ্গ্নেয়াস্ত্র ছিল৷ ২০১৭ সালের তুলনায় সংখ্যাটি ২৭ হাজার বেশি৷
যে সব দেশে সাধারণ মানুষের হাতে বেশি অস্ত্র
স্কুলে ঢুকে গুলি চালিয়ে মানুষ মারার ঘটনা বিশ্বে নতুন নয়৷ আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতাকেই এর জন্য দায়ী করা হয়৷ ‘ছোট অস্ত্র সমীক্ষা ২০১৮’- তে দেখা গেছে দুনিয়ায় বিভিন্ন দেশের প্রতি ১০০ নাগরিকের কাছে গড়ে কয়টি করে হাতিয়ার থাকে৷
ছবি: Imageo
অ্যামেরিকা
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০০ জনের কাছে ১২১ টি বন্দুক থাকে৷ সাধারণ মানুষের কাছে বেশি আগ্নেয়াস্ত্র আছে এমন দেশের তালিকায় শীর্ষে এই দেশ৷ অ্যামেরিকায় বন্দুকধারীর হামলার মতো পৈশাচিক ঘটনা মাঝেমধ্যেই ঘটে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর আসে৷ এ কারণে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার এবং এর প্রদর্শনকে নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়ে আসছে অ্যামেরিকার বিভিন্ন সংগঠন৷ অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যের কর্তৃপক্ষের তাতে সায়ও ছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Gombert
ইয়েমেন
অ্যামেরিকায় পরেই ইয়েমেন৷ ১০০ জনের কাছে গড়ে ৫৩ টি বন্দুক থাকে সেখানে৷ এমনিতে সব দেশেই গোপনে অস্ত্র বহনের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ অর্থাৎ, কাউকে অস্ত্র বহন করতে হলে তা দৃশ্যমান থাকতে হবে, লুকিয়ে রাখা যাবে না৷ এমনকি এক অঙ্গরাজ্য থেকে অন্য অঙ্গরাজ্যে যেতে চাইলে সেই অঙ্গরাজ্যের অনুমতি লাগবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Y. Arhab
সার্বিয়া এবং মন্টেনেগ্রো
১০০ জনের কাছে গড়ে ৩৯ টি বন্দুক পাওয়া যায় সেখানে৷
ছবি: Armend Nimani/AFP/Getty Images
ক্যানাডা
১০০ জনের কাছে ৩৫ টি বন্দুক থাকে সেখানে৷ অ্যামেরিকার তুলনায় ক্যানাডার অস্ত্র আইন অনেকটাই কঠোর৷ এক বিবৃতিতে ক্যানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ক্যানাডার আইন ভিন্ন৷
ছবি: picture-alliance/Zuma Press/M. Renwick
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে প্রতি ১০০ জনের কাছে গড়ে ৩২ টি বন্দুক আছে৷ সম্প্রতি একটি কারিগরি স্কুলে এক ছাত্রের বেপরোয়া গুলি চালানোর ঘটনার পর সে দেশের প্রধানমন্ত্রীও অস্ত্র আইন কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/A. Dedert
লেবানন
লেবাননে প্রতি ১০০ জনের কাছে ৩২ টি বন্দুক পাওয়া যায়৷
ছবি: DW/Anchal Vohra
অস্ট্রিয়া
অস্ট্রিয়াতে প্রতি ১০০ জনের কাছে ৩০ টি বন্দুক পাওয়া যায়৷
ছবি: Imageo
নরওয়ে
সেখানে প্রতি ১০০ জনের কাছে ২৯ টি বন্দুক থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Medichini
সুইজারল্যান্ড
প্রতি ১০০ জনের কাছে ২৮টি বন্দুক থাকে সুইজারল্যান্ডে৷
ছবি: DW/M. von Hein
জার্মানি, ফ্রান্স, ইরাক
সাধারণ মানুষের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র থাকার সমীক্ষায় দশম স্থানে একইসঙ্গে রয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইরাকের নাম৷ এ সব দেশে প্রতি ১০০ জনের কাছে ২০ টি বন্দুক থাকে৷
ছবি: Picture-alliance/dpa/C. Rehder
10 ছবি1 | 10
গ্যাস পিস্তল কী?
গ্যাস পিস্তল দেখতে পিস্তলের মতোই৷ তবে এতে গুলি থাকে না৷ এটা দিয়ে যে কোনো জায়গায় গুলি ছোড়ার মতো বিকট শব্দ করা যায়৷
কেন অস্ত্রের প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে?
জার্মান পুলিশদের অন্যতম বড় সংগঠন জিডিপির চেয়ারম্যান অলিভার মালচো জানান, এই প্রবণতা ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পর থেকে লক্ষ্যনীয় হারে বাড়ছে৷ তিনি মনে করেন, নববর্ষকে স্বাগত জানানোর রাতে কোলন শহরে যে ভয়াবহ অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল, তারপর থেকে অনেকেই কিছুটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷ তবে অলিভার মালচো মনে করেন, গ্যাস পিস্তল বা অন্য অস্ত্র রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়৷ তার মতে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রকাশ্য স্থানে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো দরকার৷