আজগুবি সিজনের পরে ইউএস ওপেনের শুরু
২৭ আগস্ট ২০১৩![](https://static.dw.com/image/17040553_800.webp)
মারিয়ন বার্তোলি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খেলা ছেড়ে ভাষ্যকার হয়ে গেছেন এবং একটি অতি দার্শনিক মন্তব্য করে বসে আছেন: ‘‘স্পোর্টস এমন একটা ব্যাপার, খেলা শেষ হবার আগে যার রিপোর্ট লেখা যায় না৷'' কথা হচ্ছিল, সেরেনা উইলিয়াম্স তাঁর ইউএস ওপেন খেতাব বজায় রাখতে পারবেন কিনা, তাই নিয়ে৷
ইউএস ওপেন হলো বছরের শেষ মেজর৷ সেখানে কি ঘটবে না ঘটবে তা নিয়ে সাংবাদিকদের জল্পনা-কল্পনা করাটা স্বাভাবিক৷ কিন্তু এ সিজন তো যে-সে সিজন নয়: প্রথমেই আসে ২৮ বছর বয়সি ফরাসি খেলোয়াড় বার্তোলির ঝটিতি অবসর৷ উইম্বলডন জেতার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বার্তোলি জানালেন, তাঁর শরীর আর টেনিসের ধকল সামলাতে পারছে না৷
শরীরের ধকল? ডান কাঁধের ব্যথা নিয়ে মারিয়া শারাপোভার পশ্চাদপসারণকেও কি সেই দলে ফেলা যাবে? জিমি কনর্সকে হঠাৎ কোচ করার পর মাত্র একটি ম্যাচ বাদেই তাঁকে বিদায়ই বা দিলেন কেন শারাপোভা?
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের একটি প্রতিবেদনে এই সব বেয়াড়া প্রশ্নই তুলেছেন ক্রীড়া সাংবাদিক এডি পেল্স৷ তাঁর বিবরণে আশ্চর্যসূচক চিহ্নের অভাব নেই: রজার ফেডারার ইউএস ওপেন জিতছেন পাঁচবার৷ তিনি এবার সেই প্রতিযোগিতাতেই সপ্তম বাছাই, এটা কি কেউ কখনো ভাবতে পেরেছিল?
ওদিকে যে রাফায়েল নাদাল বছর খানেক কি তার বেশি ধরে শুধু ইনজুরির কারণেই শিরোনামে ছিলেন, তিনি হঠাৎ হার্ডকোর্টে পর পর দশবার জিতে ফেললেন কি করে? এ কি খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন? সাত মাস আগেও নাকি নাদালের অতি কাছের মানুষরাও এরকম একটি কামব্যাকের কথা ভাবতে পারেননি৷
ভাববেনই বা কি করে৷ নাদাল গত বছরের ইউএস ওপেনে অংশই নিতে পারেননি হাঁটুর চোটের দরুণ৷ ২০১৩ সালের সূচনায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন বাদ দিতে বাধ্য হন পেটে ভাইরাস ইফেকশনের কারণে৷ পরে ফ্রেঞ্চ ওপেন জেতেন বটে যথারীতি, কিন্তু উইম্বলডন থেকে ফার্স্ট রাউন্ডেই বিদায় নিতে হয় তাঁকে৷ কাজেই ‘ফ্লাশিং মেডোজ'-এ রাফা-র কাছ থেকে তাঁর ফ্যানরা কি প্রত্যাশা করতে পারেন তা নিয়ে – বার্তোলির ভাষায় ‘‘খেলা শেষ হবার আগে'' – বেশি উচ্চবাচ্য না করাই ভালো৷
তবে ফলাফলের দিক থেকে পুরুষদের বিভাগে সিজনটায় যে খুব চমক দেবার মতো কিছু ছিল, এটা বলা যায়৷ শুধু এই সিজনই নয়, সুদূর ২০০৫ সাল থেকে ধরলে, সে যাবৎ ৩৪টি মেজর টুর্নামেন্টের মধ্যে ৩৩টিতে জিতেছেন ফেডারার, নাদাল, অ্যান্ডি মারে অথবা নোভাক জোকোভিচ৷ জোকোভিচ বিগত তিনটি ইউএস ওপেনের ফাইনালিস্ট এবং এবারেও টপ সিড৷ মারে দ্বিতীয়৷
বলতে কি, নাদালের ফর্ম, এবং ৩২ বছর বয়সি ফেডারার আরো একবার প্রতিপক্ষ ও টেনিস জগতকে মন্ত্রমুগ্ধ করার ক্ষমতা রাখেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় নেই৷ যদি না বার্তোলির সাবধানবাণী থাকত:
‘‘খেলা শেষ হবার আগে তার রিপোর্ট লেখা যায় না৷''
এসি/ডিজি (এপি)