আটকে পড়া চিলির খনি শ্রমিকদের ভিডিও প্রকাশ
২৭ আগস্ট ২০১০এই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে চিলির জাতীয় টেলিভিষণ৷ হালকা পাতলা গড়নের ঐ শ্রমিকদের প্রায় কারুর গায়েই শার্ট নেই এবং ছবি দেখে মনে হচ্ছে যে তাঁরা ঘামছিলেন৷ যোগোযোগের জন্য ড্রিল করা ছোট ফুটো দিয়ে ক্যামেরাটি নিচে পাঠানো হয়েছে চিলি সরকারের পক্ষ থেকে৷
বলাই বাহুল্য, ৩৩ জন শ্রমিকের সকলেই এখনও আটকে আছেন খনির ৭০০ মিটার গভীরে৷ এদিকে, চিলির খনিতে আটকে পড়া ঐ শ্রমিকদের উদ্ধার করতে আরো চার মাস সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার৷ যদিও পরিকল্পনা মতো মঙ্গলবারও তাঁদের উদ্ধার প্রচেষ্টা নেয়া হয়৷
সান জোসে গোল্ড অ্যান্ড কপার মাইন উদ্ধার মিশনের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী আন্দ্রে সৌগেরেত বলেছেন, শ্রমিকদের বড়দিন পর্যন্ত খনির ওই অন্ধকূপে থাকতে হতে পারে৷ তবে তিনি এই ব্যাপারটি গোপন রেখেছেন আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে৷ খনির ভেতরের এই গরম, আর ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এতদিন এতগুলো মানুষ থাকতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে৷
চিলির উত্তরাঞ্চলের এই খনির প্রবেশমুখটি গত ৫ই আগস্ট বন্ধ হয়ে যায়৷ আটকে পড়া শ্রমিকরা যে বেঁচে আছেন, তাই প্রথমে কেউ বুঝতে পারেনি৷ রবিবারে সামান্য ড্রিল করার পর, তাঁদের কাছে বার্তা পৌঁছানো গেছে৷ এবং তাঁদের কাছ থেকে শোনা গেছে যে তাঁরা বেঁচে আছেন এবং অপেক্ষা করছেন, তাঁদের উদ্ধার করা হবে বলে৷ তাঁদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য মাত্র তিন ইঞ্চি ড্রিল করা সম্ভব হয়েছে৷ সেখান দিয়েই তাঁদেরকে সোমবার পানি এবং বেঁচে থাকার জন্যে প্রয়োজনীয় কিছু খাবার পাঠানো হয়েছে৷ যোগাযোগের জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত একটি ইন্টারকম পদ্ধতিও কাজ করেছে৷
প্রকৌশলী সৌগেরেত বলেন, প্রকৌশলীরা নকশা তৈরি করবেন এবং তারপর ড্রিলের কাজ শুরু হবে৷ পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩৩ সেন্টিমিটারের হাইড্রলিক বোর দিয়ে ৬৬ সেন্টিমিটার চওড়া সুরঙ্গ তৈরি করা হবে, যেখান দিয়ে আটকে পড়া মানুষগুলো একে একে বের হয়ে আসতে পারবেন৷ তবে ড্রিল করার সময় খুবই সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে যাতে খনিটি ধসে না পড়ে৷
আটকে পড়া প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে যে খাবার ড্রিল করা তিন ইঞ্চি চওড়া গর্ত দিয়ে পাঠানো হচ্ছে, তাতে ৪৮ ঘণ্টায় প্রত্যেকে দুই টেবিল চামচ টুনা ফিশ এবং আধা কাপ দুধ পাচ্ছেন ভাগে৷ যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল৷ তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা খুবই ক্ষুধার্ত৷ চিলির খনিমন্ত্রী জানিয়েছেন, আটকে পড়া শ্রমিকরা খাবার, টুথব্রাশ এবং তাঁদের চোখে লাগানোর জন্য জিনিসপত্র চেয়েছেন৷
প্রতিবেদন: ফাহমিদা সুলতানা
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ