1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আটক ফরাসি নাগরিক জামিনে মুক্ত

সমীর কুমার দে, ঢাকা২ মার্চ ২০১৬

জামিনে মুক্তি পেলেন ফরাসি নাগরিক মুসা ইবনে ইয়াকুব৷ কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যাওয়ার পথে বিজিবি-র চেকপোস্টে ভুল নাম বলা আর রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ‘সন্দেহজনক' কাজ করার অভিযোগে পুলিশ তাঁকে আটক করে৷

Frankreich Trauer für die Opfer der Anschläge
ছবি: Reuters/C. Platiau

অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রাশেদ

This browser does not support the audio element.

পাসপোর্ট অনুযায়ী মুসার আসল নাম পুয়েমো চঁচুয়্যাঁ৷ কিন্তু বর্জার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি-র চেকপোষ্টে তিনি বলেছিলেন যে তাঁর নাম মুসা ইবনে ইয়াকুব এবং তিনি মুসলমান৷ তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না থাকলেও, মুসার দেয়া তথ্যের সঙ্গে তাঁর পাসপোর্টের মিল না থাকায় বিজিবি তাকে বাংলাদেশের দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় আটক করে৷ পরে প্রতারণার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ৷ কিন্তু রিমান্ডেও তাঁর কাছ থেকে তেমন তথ্য বের করতে পারেনি পুলিশ৷ তাই পুরো বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ আদালত মুসাকে জামিন দেয়৷ মঙ্গলবার কক্সবাজার কারাগার থেকে মুক্তি পান মুসা৷

মুসার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. রাশেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যে অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সেটা ফ্রান্সের আইনে কোনো অপরাধ নয়৷ বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত একটি এফিডেফিডের মাধ্যমে নিশ্চিত করেন যে, সেদেশের কোনো নাগরিক ধর্ম পরিবর্তন করলে পাসপোর্টে নাম পরিবর্তন বাধ্যতামূলক নয়৷ উচ্চ আদালতে এই বিষয়টি দেখানোর পর আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে জামিন দেয়৷''

মো. রাশেদ আরো বলেন, ‘‘আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) কক্ষবাজারের আদালতে হাজিরা দেবেন মুসা৷'' জানা যায়, উচ্চ আদালত এ মুহূর্তে তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷ ফলে বর্তমানে মুসা কক্সবাজারেই একটি হোটেলে অবস্থান করছেন৷''

টেকনাফ থানার সদ্য বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি আতাউর রহমান খান এর আগে ডয়চে ভেলেকে বলেন যে, আটক এই ফরাসি নাগরিক টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ফ্রান্স ভিত্তিক এনজিও বারাকা সিটি-র হয়ে কাজ করতেন৷ সেখানেও আসল নামের পরিবর্তে মুসা ইবনে ইয়াকুব হিসেবেই নিজের পরিচয় দিতেন তিনি৷ সেই নামেই তিনি ঐ এলাকায় পরিচিত ছিলেন৷

ওসি জানান, ‘‘গত ২২শে ডিসেম্বর আটক হন মুসা৷ টেকনাফ রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প এলাকায় সন্দেহজনক আচরণ এবং কাজকর্মের জন্যই তাঁকে আইনের আওতায় নেয়া হয়৷''

মুসার বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে ওসি দাবি করেন, ‘‘ফরাসি এই নাগরিক টুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা ধরণের তৎপরতা চালাচ্ছিলেন৷ এছাড়া তিনি মুসলিম না হয়েও মুসলিম পরিচয় এবং নাম ধারণ করেন৷'' কিন্তু মুসলমান নাম নেয়া কোনো অপরাধ নয়! তাই মুসা ঠিক কী ধরনের অপরাধ করেছেন জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘‘এ নিয়ে এখন তদন্ত হচ্ছে৷ তদন্তে অপরাধের ধরন জানা গেলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হবে৷''

মুসার মুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের জেল সুপার সাঈদ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আসার পর আমরা যাচাই-বাছাই করেছি৷ অ্যাটর্নি জেনারেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গেও কথা বলেছি৷ রাষ্ট্রপক্ষের কোনো অভিযোগ না থাকায় তাঁর আইনজীবী মো. রাশেদের জিম্মাতেই তাঁকে মুক্তি দেয়া হয়েছে৷''

অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ রাশেদ

This browser does not support the audio element.

এদিকে ফ্রান্স দূতাবাসের প্রেস অ্যাটাচে সাখাওয়াত হোসেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশত্যাগ করা যাবে না – এই শর্তে ৭০ দিন পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন মুসা৷''

ওদিকে এই ফরাসি নাগরিকের মুক্তির জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্যাম্পেইন কাজে লেগেছে বলে মনে করেন তাঁর আইনজীবী মো. রাশেদ৷ টুইটারে #FreeMoussa বা #ফ্রিমুসা নামে একটি হ্যাশট্যাগ চালু হয়৷ ফেসবুকেও প্রায় এক লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী মুসার মুক্তির জন্য একটি আবেদনে সই করেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ