খেলার সরঞ্জাম উৎপাদনকারী ব্র্যান্ড আডিডাসের তৈরি জার্সি নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে৷ জার্মান জাতীয় দলের জার্সিতে, যা সাধারণ মানুষও কিনতে পারে, বিশেষ আরএফআইডি ট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে৷ এই ট্যাগ দিয়ে নজরদারি সম্ভব৷
বিজ্ঞাপন
বিশ্বকাপ জয়ের পর জার্মান জাতীয় দলের জার্সির চাহিদা আরো বেড়েছে৷ এই কথা মাথায় রেখে দ্রুতই ‘চার তারকাবাহী' জার্সি বাজারে ছাড়ে আডিডাস৷ সবমিলিয়ে চলতি বছর জার্মান দলের দুই মিলিয়নের বেশি জার্সি বিক্রি করেছে আডিডাস৷
বিপত্তি ঘটেছে অন্যত্র৷ এসব জার্সিতে রয়েছে ‘রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন' বা আরএফআইডি চিপ৷ এই চিপ ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের মাধ্যমে তথ্য সরবরাহে সক্ষম৷ সাধারণত লজিস্টিক সেবাদাতারা তাদের কাজে এধরনের ট্যাগ ব্যবহার করে৷
বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের আগমন
লাখো ভক্তের অপেক্ষার অবসান হলো৷ দেশে ফিরেছে বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান দল৷ বার্লিনের টেগেল বিমানবন্দরে লুফৎহানসার বিমান অবতরণের পর থেকে চলছে বিজয়ী সম্ভাষণ৷
ছবি: Reuters
ওই আসছে....
টেগেল বিমানবন্দরে জনসমুদ্র৷ কারো কারো আর তর সইছিল না৷ বিমানের দেখা পাওয়া মাত্রই তারকা খেলোয়াড়দের দেখতে হাতে দুরবিন তুলেন নেন তাঁরা৷ এখানে বিমানবন্দরে দর্শনার্থীদের টেরাসেই দুরবিন হাতে ব্যস্ত একজন৷
ছবি: ADAM BERRY/AFP/Getty Images
লুফৎহানসা হয়ে গেল ফ্যানহানসা
স্থানীয় সময় সকাল সোয়া দশটায় অবতরণ করে লুফৎহানসার বোয়িং ৭৪৭ বিমান৷ বিশেষ দিনে লুফৎহানসাও বিশ্বকাপজয়ী জার্মান দলের ফ্যান, অর্থাৎ ভক্ত৷ তাই বিমানের নামের জায়গায় লুফৎহানসা নয়, লেখা ছিল ফ্যানহানসা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবার আগে অধিনায়ক
ফুটবলারদের বিমান থেকে নামিয়ে আনতে ব্যবহার করা হয় বিশেষ সিঁড়ি৷ বিশ্বকাপে জার্মানির চার সাফল্যের প্রতীক হিসেবে আঁকা ছিল চারটি তারকা৷ বিমানের গায়েও বড় বড় করে লেখা ১৯৫৪, ১৯৭৪, ১৯৯০ এবং ২০১৪৷ ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ের সুবাদে পাওয়া জুলে রিমে ট্রফির অনুরূপ ট্রফিটি নিয়ে বিমান থেকে প্রথমে নেমে আসেন অধিনায়ক ফিলিপ লাম, তাঁর পেছনেই জার্মানির পতাকা গায়ে সহ-অধিনায়ক বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার৷
ছবি: Matthias Kern/Bongarts/Getty Images
বিজয় মঞ্চের দিকে যাত্রা
বিমান থেকে বাসে৷ ছাদখোলা বাসটির গায়েও লেখা ১৯৫৪, ১৯৭৪, ১৯৯০ এবং ২০১৪৷ ব্রাজিল থেকে সদ্য ফেরা দলটির খেলোয়াড়রা একে একে উঠলেন বাসে৷ ওঠার আগে সবাইকে পরিয়ে দেয়া হয় কালো টি-শার্ট৷ বিশ্বকাপ জয়ের স্মারক এই টি-শার্টগুলোর গায়ে লেখা #১, অর্থাৎ সবাই এক নম্বর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ব্রান্ডেনবুর্গে অপেক্ষা
ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে বিশাল মঞ্চকে ঘিরে অপেক্ষা করছে কয়েক হাজার ফুটবলভক্ত৷ ছেলে-বুড়ো, তরুণী-বৃদ্ধা সবাই এসেছেন বিশ্বকাপ জয়ীদের অভিনন্দন জানাতে৷ এই তরুণীকে আলাদাভাবেই ধরেছে ফটোগ্রাফারের ক্যামেরা৷
ছবি: ADAM BERRY/AFP/Getty Images
ভক্তের বিশ্বকাপ
জার্মান দলের দুই ভক্তের হাতেও ছিল বিশ্বকাপ ট্রফি৷ নকল হলেও তাঁদের ট্রফিটি কিন্তু আসলের তুলনায় বিশাল!
ছবি: picture-alliance/dpa
সমর্থক পরিবার
বিশ্বকাপ জয়ীদের সংবর্ধনা জানাতে ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে ছিল ব্যাপক আয়োজন৷ নাচে-গানে মুখর চারপাশ৷ জার্মানির তারকা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে দেখতে এক সমর্থক এসেছিলেন দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে৷
ছবি: DW/B. Gräßler
তিন তরুণ
ব্রাজিল বিশ্বকাপে জার্মানির পুরো দলের পারফরম্যান্সই ছিল অসাধারণ৷ তবে শেষ হাসিটা ‘বিস্ময় বালক’ মারিও গ্যোটৎসের উপহার৷ তাঁর গোলেই আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ জিতেছে জার্মানি৷ এখানে গ্যোয়েটৎসের সঙ্গে টনি ক্রুস এবং শ্যুর্লে৷
ছবি: Reuters
ট্রফি হাতে বিশ্বজয়ীরা
হাজার হাজার সমর্থকের করতালি আর হর্ষধ্বনির মাঝে মঞ্চে উঠে আসেন জার্মান দলের খেলোয়াড়রা৷ শুরু হয় ট্রফি নিয়ে উল্লাস৷ জার্মানিতে আনন্দ-উল্লাস তো সবে শুরু৷ বিজয়ী বীরদের নিয়ে নানা আনুষ্ঠানিকতায় এ উল্লাস নিশ্চয়ই আরো কিছুদিন চলবে৷
ছবি: Reuters
9 ছবি1 | 9
চলতি বছরের শুরুতে জার্মান ইন্টারনেট ফ্রিডম গ্রুপ ‘ডিজিটালকারেজ' জানায়, আডিডাস জার্মান জাতীয় দলের জার্সিতে আরএফআইডি চিপ ব্যবহার করছে৷ এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়৷ পরবর্তীতে আডিডাস এক বিবৃতিতে জানায়, লজিস্টিক প্রকল্পের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো আরএফআইডি চিপ ব্যবহার করছে প্রতিষ্ঠানটি৷ তবে শুধুমাত্র ‘রিড-অনলি' এই চিপ তেমন বিশেষ কোনো তথ্য বহন করছে না বলেও জানিয়েছে আডিডাস৷ আর ক্রেতা চাইলে সেটি কেটে ফেলেও দিতে পারেন৷
এই বিবৃতিতে অবশ্য বিতর্ক কমেনি৷ বিশেষ করে ক্রেতাকে ভালোভাবে না জানিয়ে এভাবে ট্যাগ ব্যবহারকে নৈতিক মনে করছেন না অনেকে৷ জার্মানির স্লেশভিস হোলস্টাইন রাজ্যের তথ্য সুরক্ষা বিষয়ক কমিশনার থিও ভাইচার্ট এই বিষয়ে জানান, আরএফআইডি রিডার ব্যবহার করে খুব সহজেই একটি সুনির্দিষ্ট কাপড় শনাক্ত করা সম্ভব৷ আর সেই তথ্যের সঙ্গে ক্রেতার তথ্য জুড়ে দিয়ে একজন ব্যক্তির প্রোফাইলও তৈরি করা যেতে পারে৷
ভাইচার্ট বলেন, ‘‘আমি বলছি না আডিডাস বা অন্য কেউ এভাবে তথ্য সংগ্রহ করছে৷ তবে এই ফিচার সম্পর্কে ক্রেতাকে ভালোভাবে জানাতে হবে৷ শনাক্তকরণের এই ট্যাগ কিভাবে নষ্ট করা যায় সেটাও ক্রেতাকে অবগত করতে হবে৷''
উল্লেখ্য, আরএফআইডি ট্যাগ ব্যবহার সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে আডিডাস এবং জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷ তারা উভয়েই উপরে উল্লেখিত বিবৃতিটি ডয়চে ভেলেকে পাঠিয়েছে৷