1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আতঙ্ক সারাদেশে

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২২ জুলাই ২০১৬

গুলশান হামলার আতঙ্ক এখনো কাটেনি৷ আতঙ্কের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে৷ বিদেশিরা আছেন সবচেয়ে বেশি আতঙ্কে৷ গুলশান-বারিধারা এলাকার হোটেল-রেস্তোরাঁ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন প্রায় ক্রেতাশূন্য৷

মসজিদে বিশেষ প্রহরা
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/Z. Chowdhury

তবে এমন আতঙ্কের পিছনে পুলিশের কিছু অদক্ষ এবং অপেশাদার কার্যকলাপও ভূমিকা রাখছে৷

গুলাশান হামলার পর একটি গুজব ছড়িয়েছিল মোবাইল ফোনের এসএমএস-এর মাধ্যমে৷ জানানো হয়েছিল ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কোনো শপিংমলে হামলা হতে পারে৷ গত সপ্তাহের এই গুজবটি নগরবাসীকে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলে৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশ একে গুজব বলে উড়িয়ে দেয় এবং শেষ পর্যন্ত কোনো হামলার ঘটনা না ঘটায় তা গুজবই থেকে যায়৷

তবে বুধবার সত্যিই কোনো অঘটনের আশঙ্কা হয়তো ছিল৷ সে কারণে পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থাও চোখে পড়েছে৷ ঢাকায় অবস্থিত জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কর্মীরা বুধবার তাদের কর্মস্থলে যাননি৷ অনেকে বাসায় বসে অফিসের কাজ সেরেছেন৷ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধই ছিল৷

গুলশানে হামলার পর তাঁদের সতর্কভাবে চলাফেরা করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছিল৷ এর মধ্যে ১৯ জুলাই রাতে তাঁদের মুঠোফোনে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একটি বার্তা দেওয়া হয়৷ সেখানে বলা হয়, নিরাপত্তাজনিত কারণে ২০ জুলাই কর্মস্থলে আসার প্রয়োজন নেই৷ আরো বলা হয়, প্রয়োজন হলে তাঁরা বাসায় বসেই অফিসের কাজ করতে পারেন৷ ঢাকার ইংরেজি স্কুলগুলোও এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থার আওতায় ছিল৷

নূর খান

This browser does not support the audio element.

এদিকে ১৮ জুলাই হামলার আশঙ্কা জানিয়ে মন্ত্রীদের মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে সতর্ক করেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান৷ ডিএমপি কমিশনারের পাঠানো ওই বার্তায় বলা হয়, ‘‘গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী জঙ্গিরা যে কোনো সময় মন্ত্রিসভার যে কোনো সদস্যের ওপর হামলা চালাতে পারে৷ এ জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে৷''

এর আগে গত ১১ জুলাই মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিজে সতর্ক থাকা এবং অন্যকে সতর্ক করার পরামর্শ দেন৷

আসেম সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গোলিয়া যাওয়ার আগের দিন প্রধানমন্ত্রী আরো হামলার আশঙ্কা করে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলাই শেষ নয়৷'' এ সময় জনপ্রতিনিধি, মন্ত্রী, পুলিশ, ব়্যাব, বিজিবি, সশস্ত্র বাহিনী, সাংবাদিক, বিদেশি নাগরিকদের ওপর হামলা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি৷

পুলিশের পক্ষ থেকেও আরো হামলার আশঙ্কা জানিয়ে গত সপ্তাহে বিভিন্ন ব্যবসা এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে নিজ উদ্যোগে নিরপত্তা বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়৷এক চিঠিতে বলা হয়, পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে৷

আর এরই মধ্যে সংসদে কয়েকজন এমপি অধিবেশনে বক্তব্য দিতে গিয়ে নিরাপত্তার জন্য গানম্যান দেয়ার দাবি তোলেন৷

এ পরিস্থিতিতে সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ রয়েছে বলে মনে করেন মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক নূর খান৷ তিনি বলেন, ‘‘গুলশান হামলার পর পুলিশের দৃশ্যমান নিরপত্তা তত্‍পরতা সাধারণ মানুষকে নিশ্চিন্ত করতে পারেনি৷ আর মন্ত্রীদের এসএমএস পাঠিয়ে পুলিশ কমিশানর হামলার আশঙ্কার কথা জানালে তা যদি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, তাহলে সাধারণ মানুষতো আতঙ্কিত হবেই৷''

তিনি বলেন, ‘‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সতর্কবার্তা দেয়ার কিছু কৌশল আছে৷ আমার মনে হয়, পুলিশ সেখানে ভুল করছে৷ ফলে উল্টো আতঙ্ক ছড়াচ্ছে৷''

এদিকে পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান বলেছেন, ‘‘কোনো মাধ্যমে হামলার কোনো গুজব ছড়ালে যারা ছড়াবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে৷''

তবে নূর খান মনে করেন, ‘‘কোনটা আসল হুমকি আর কোনটা গুজব তা পুলিশকেই নিশ্চিত করতে হবে৷''

নতুন করে হামলার আশঙ্কায় সাধারণ মানুষও সতর্কভাবে চলাফেরা করছেন৷ বিনোদন কেন্দ্র, শপিংমল, সিনেমা হল বা পাবলিক প্লেসে এখন ভীড় কম৷ পাশাপাশি বেড়ে গেছে নিরপত্তা সরঞ্জামের বিক্রি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ