1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাঁচতে পারলেন না রেহানা!

১৮ জুন ২০১৮

ময়মনসিংহে গুলিতে নিহত রেহানা বেগমের লাশ পাওয়ার ১৭ ঘন্টা আগে ডিবি তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বলে তার পরিবার ও প্রতিবেশিরা দাবি করেছেন৷ কিন্তু ডিবি তা অস্বীকার করছে৷ পুলিশ বলছে, রেহানা ছিলেন মাদক ব্যবসায়ী৷

ছবি: Bangla Tribune

কিন্তু প্রশ্ন হলো, রেহানাকে কারা হত্যা করেছে? জেলা পুলিশ সুপার বলেছেন, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে কারা রেহানাকে হত্যা করেছে৷ ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানার ওসিরও একই কথা৷ রেহানা গুলিতে নিহত হয়েছেন৷ তার বুকে গুলির চিহ্ন আছে৷

বাংলাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কেনো ‘মাদক ব্যবসায়ী' নারী নিহত হলেন৷

দু:খজনক হল তাদের অনেকেই আসলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেনি: সৈয়দ নুরুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

কিন্তু এই রেহানা বেগম ২০১৭ সালের জুলাই মাসে পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিলেন বলে তার প্রতিবেশী সোনিয়া বেগমের দাবি৷ তিনি জানান, রেহানা তখন একটি সেলাই মেশিন পেয়েছিলেন, তা দিয়ে কাজ করেই আয়-উপার্জন করতেন৷

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘২০১৭ সালে তিন দফায় মাদকব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করেছিলেন৷ প্রথম আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও উপস্থিত ছিলেন৷ আমরা আত্মসমর্পণকারী নারীদের সেলাই মেশিন এবং পুরুষদের রিকশা দেই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য৷ তাদের মধ্যে নিহত রেহানা বেগমও ছিলেন৷ দুঃখজনক হলো তাদের অনকেই আসলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেনি৷ পুরোদমে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলো৷''

মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে এসেও রেহানা বাঁচতে পারলনা: সোনিয়া বেগম

This browser does not support the audio element.

রবিবার (১৭ জুন) সকাল ৯টার দিকে ময়মনসিংহ সদরের গন্ধ্রপা এলাকার রাস্তার পাশের একটি খড়ের ঢিবি থেকে পুলিশ রেহানা বেগম (৪৫)-এর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে৷  রেহানা থাকতেন সানকিপাড়া বাইলেন এলাকার নিজের বাসায়৷

তার স্বামী আজিজুল হক দু'বছর আগে ক্যান্সারে মারা যান৷ রেহানা বেগম একমাত্র মেয়ে আজেদা বেগমকে নিয়ে থাকতেন৷  লাশ উদ্ধারের পর আজেদা বেগম সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ‘‘সাদা পোশাকে ডিবি'র লোকজন শনিবার (১৬ জুন) ঈদের দিন বিকাল ৩টার দিকে সানকিপাড়া বাইলেন এলাকার বাসার সামনের সড়ক থেকে মা-কে তুলে নিয়ে যায়৷ এর ১৭ ঘণ্টার পর রবিবার সকাল ৯টার দিকে তার লাশ পাওয়া যায়৷ কিন্তু নিয়ে যাওয়ার পর ডিবি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেও আমরা তার খোঁজ পাইনি৷''

তবে এখন আজেদা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে৷ কথা হয় রেহানা বেগমকে নিয়ে যাওয়ার সময়ের প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী সোনিয়া বেগমের সঙ্গে৷ তিনি ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, ‘‘ডিবি' ওসি আশিকুর রহমানসহ ডিবির একটি দল রেহানা বেগমকে বাসার সামনে থেকে নিয়ে যায়৷ রেহানা বেগম বাসার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ আমরাও সেখানে ছিলাম৷ রেহানা বেগমের কাছে তার নাম জানতে চাইলে সে ডিবির সদস্যদের নিজের নাম বলে৷ আমরাও তার নাম বলি৷ তারা গাড়িতে করে আসে৷ রেহানা বেগমকে অটোতে করে নিয়ে যায়৷ দুই মিনিটের মধ্যে তাকে নিয়ে যায়৷ নিয়ে যাওয়ার সময় কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকতে বলে৷ রেহানা বেগম তখন বলে, কেন আমি মুখ ঢাকব? তখন তারা বলে, যাতে কেউ চিনতে না পারে৷''

রেহানা বেগমকে আমরা তুলে আনিনি: আশিকুর রহমান

This browser does not support the audio element.

তিনি দাবি করেন, ‘‘ডিবি'র ওসি আশিকুর রহমান পাঞ্জাবি পরা ছিলেন৷  তাকে নিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর আত্মীয়-স্বজন তার খোঁজে ডিবি'র সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা নিয়ে যাওয়ার কথা অস্বীকার করে৷''

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে এসেও রেহানা বাঁচতে পারলো না৷ তাকে তুলে নিয়ে কোনো পক্ষের ইন্ধনে হত্যা করা হয়েছে৷ এর বিচার চাই৷''

রেহানা বেগমের বিরুদ্ধে আমাদের থানায় এপর্যন্ত দু’টি মাদকের মামলা পেয়েছি: মাহমুদুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

তবে ডিবির ওসি আশিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রেহানা বেগমকে আমরা তুলে আনিনি৷ ওই দিন ছিল ঈদের দিন৷ আমাদের অনেকেই ছুটিতে ছিলেন৷ তার ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই৷ আমি অফিসেই ছিলাম৷''

ময়মনসিংহের কোতোয়ালী মডেল থানায় এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে পুলিশ৷ কাউকে আসামি করা হয়নি৷  মডেল থানার ওসি মাহমুদুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রেহানা বেগমের বিরুদ্ধে আমাদের থানায় এ পর্যন্দ দু'টি মাদকের মামলা পেয়েছি৷ আরো মামলা আছে কিনা জানি না৷ তিনি গুলিতে নিহত হয়েছেন৷ কিন্তু কয়টা গুলি লেগেছে তা বলতে পারবো না৷ আমরা খবর পেয়ে গিয়ে লাশ উদ্ধার করি৷''

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘তাকে কারা হত্যা করেছে তার তদন্ত করছি৷ তাকে যে ডিবি'র লোকজন তুলে নিয়ে গিয়েছিল এমন কোনো অভিযোগ তার পরিবার করেনি৷'' ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার দাবি করেছেন, ‘‘ডিবি যে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল এই অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ