আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারীর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দিয়ে অবিলম্বে প্রকাশনীকে একুশে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ দিতে বাংলা একাডেমিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন৷
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বাংলা একাডেমির করা আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার এ আদেশ দেন৷
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক গত রোববার আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন, যা গত সোমবার চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে৷ সেদিন চেম্বার আদালত আবেদনটি ১৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন৷ এর ধারাবাহিকতায় আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি হয়৷
আজ আদালতে বাংলা একাডেমির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী মিন্টু কুমার মন্ডল৷ অন্যদিকে রিট আবেদনকারী আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মো. মাহাবুবুর রহমানের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক৷
পরে মিন্টু কুমার মন্ডল আমাদের কনটেন্ট পার্টনার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দিতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হয়েছে৷ ফলে প্রকাশনীটি একুশে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ পাবে না৷ অর্থাৎ, আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দিতে বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্তই বহাল রইল৷'
একুশে বইমেলায়আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেছিলেন৷ রিটের শুনানিতে প্রকাশনীর তিনটি বই নিয়ে আপত্তি ওঠে৷ বই তিনটি হলো—ফাহাম আবদুস সালামের লেখা ‘মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে', জিয়া হাসানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম' ও ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা৷'
হাইকোর্ট তিনটি বই প্রদর্শন ও বিক্রি না করার বিষয়ে রিট আবেদনকারীপক্ষকে অঙ্গীকারনামা দিতে বলেছিলেন৷ অঙ্গীকারনামা দাখিলের পর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ স্টল বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, যা আজ আপিল বিভাগে স্থগিত হলো৷
এনএস/কে এম (প্রথম আলো)
বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলা চলছে ঢাকার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। শুধু বই কেনাবেচা নয়, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির নানান দিক উদ্ভাসিত হচ্ছে এই আয়োজনে। ছবিতে দেখুন বইমেলার নানান রঙ।
ছবি: Rajib Paul/DWবাঁশের বেড়া ও ছন দিয়ে বানানো গ্রামীণ ঘরের আকৃতিতে আকাশ প্রকাশনীর নান্দনিক প্যাভিলিয়ন জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাইরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ছোট ছোট হারিকেন। সেলফি ও ছবি তুলতে এখানে দিনভর পাঠক-দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে।
ছবি: Rajib Paul/DWইউরোপ ও মোগল স্থাপত্য রীতির দৃষ্টিনন্দন সংমিশ্রণে সাজানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক কার্জন হলের আদলে কালচে লাল রঙের প্যাভিলিয়ন বানিয়েছে অন্যপ্রকাশ। ওপরে বহির্ভাগের চারদিকে প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের কাটআউট রয়েছে।
ছবি: Rajib Paul/DWএবারের বইমেলায় বাঁশ দিয়ে বানানো বেশকিছু স্টল চোখে পড়ছে। বাঁশের বেড়া দিয়ে বানানো শ্রাবণ প্রকাশনীর স্টলে প্রবেশের জন্য রয়েছে একটি দরজা। দুই পাশে দুটি কাঁচের জানালা। ভোরের শিশির এবং কোয়ান্টাম স্টল দুটিতেও ব্যবহার হয়েছে বাঁশ ও বেত।
ছবি: Rajib Paul/DWনবান্ন প্রকাশনীর বাংলাদেশ রিকশা আর্ট সোসাইটির সৌজন্যে স্থান পেয়েছে বাংলা সিনেমা ও প্রকৃতির বিভিন্ন ধরনের ছবি। এছাড়া রয়েছে রিকশায় বসে একটি ছেলের বই পড়ার পেইন্টিং। লোকশিল্পকে তুলে ধরতেই এই আয়োজন।
ছবি: Rajib Paul/DWবেশ কিছু বইয়ের আদল দিয়ে সুন্দর প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করেছে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। দেখলে মনে হবে যেন কয়েকটি বইয়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এটি৷ ওপরে একপাশে কিছু বই দাঁড় করিয়ে রাখা। আরেক পাশে খোলা বইয়ে লেখা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিপাদ্য।
ছবি: Rajib Paul/DWপ্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল ১১টায় শুরু হয় বইমেলা। শেখ রাসেল চত্বরে এই দুই দিন থাকে শিশু প্রহর। এ সময় শিশু-কিশোরদের কলকাকলীতে মুখর হয়ে ওঠে মেলা। হাতেখড়ি মঞ্চে ছবি তুলতে দেখা যায় অনেককে। সপ্তাহের অন্যান্য দিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে অমর একুশে বইমেলা।
ছবি: Rajib Paul/DWমেলায় আসা দর্শনার্থীরা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বই অনুদান দিচ্ছেন। কেউ কেউ বই কিনে দান করছেন, কেউবা বই কেনার জন্য নগদ টাকা দিচ্ছেন। অনুদান হিসেবে পাওয়া বই বুকসেলফে সাজিয়ে রাখা হয়।
ছবি: Rajib Paul/DWমেলার বিভিন্ন স্থানে দর্শনার্থীদের স্কেচ এঁকে দিচ্ছেন বেশ কয়েকজন চিত্রশিল্পী। প্রতিটি স্কেচের জন্য নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা। দর্শনার্থীরা চাইলে নিজেদের মুখাবয়ব আঁকিয়ে নিতে পারেন। পুকুরপাড়ে দুই শিল্পীকে স্কেচ আঁকতে দেখা যায় প্রতিদিন।
ছবি: Rajib Paul/DWতরুণ কবি জাহিদ সোহাগ লেখালেখির পাশাপাশি ছবিও আঁকেন। কাগজ প্রকাশনের স্টলে নিজের আঁকা চিত্রকর্ম বিক্রির জন্য রেখেছেন তিনি। প্রতিটির মূল্য ৫ হাজার টাকা।
ছবি: Rajib Paul/DWসোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল ফটকের একপাশে হরেক রকম দেয়াল বোর্ড বিক্রি হচ্ছে। পিভিসি বোর্ডের ওপর বিখ্যাত তারকাদের মুখাবয়ব, সিনেমা ও ওয়েব সিরিজের পোস্টার, কবিতার লাইনসহ নানান বিষয় দিয়ে সাজানো হয়েছে এগুলো।
ছবি: Rajib Paul/DWপাঞ্জেরি পাবলিকেশন্সের স্টলের সাজে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা। এর মধ্যে রয়েছে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও অগ্নিঝরা মার্চসহ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ।
ছবি: Rajib Paul/DWবাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর প্যাভিলিয়ন একটি বাড়ির আদলে সাজানো হয়েছে। দেখলে মনে হবে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর সড়কের ৬৭৭ নম্বর বাড়িটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মেলায়! নীচে বেশ কিছু টবে গাদা ফুলের সমারোহ।
ছবি: Rajib Paul/DWশিশু সন্তান নিয়ে আসা মায়েদের সুবিধার্থে মেলায় রয়েছে মাতৃদুগ্ধ পান কেন্দ্র। এর দরজায় পর্দা টানানো। শ্রী শ্রী কালীমন্দির অংশে এটি রেখেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
ছবি: Rajib Paul/DWবইমেলায় দর্শনার্থীদের অনেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পুকুরপাড়ে বসে সময় কাটান। সামনে দাঁড়িয়ে আছে স্বাধীনতা স্তম্ভ। পুকুরে এর প্রতিবিম্ব বেশ মনোরম।
ছবি: Rajib Paul/DWসোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশমুখের পাশে এবং তথ্যকেন্দ্রের একপাশেসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বইমেলার স্টল বিন্যাস। এখান থেকে কোন স্টল কোথায় এবং পার্কিং, খাবারের দোকান, টয়লেটসহ কোথায় কী আছে সেসব জেনে নেওয়া যাচ্ছে।
ছবি: Rajib Paul/DWগতবারের মতোই ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তিতে আগুন নেভানোর গেমস দেখাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। বইমেলায় অস্থায়ী ফায়ার স্টেশন বসিয়েছে এই সংস্থা। তাদের বুক স্টলে অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কিত কয়েকটি বই রয়েছে। সেইসঙ্গে অগ্নিনির্বাপক গাড়িও রেখেছে ফায়ার সার্ভিস।
ছবি: Rajib Paul/DWমাথা ব্যথা, অল্প কাটা-ছেঁড়াসহ প্রাথমিক অসুস্থতা সারিয়ে তুলতে সিভিল সার্জন অফিস থেকে একজন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক আছেন। তিনি প্রথম ১৪ দিন থাকবেন। পরের ১৪ দিন অন্য আরেকজন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করবেন।
ছবি: Rajib Paul/DW