1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আদালতের নির্দেশে লাগাম পুজোর ভিড়ে

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৪ অক্টোবর ২০২০

হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দুর্গোৎসব পালিত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ জায়গায়৷ এবার ভিড় অনেকটাই কম৷ মণ্ডপ থেকে কিছুটা দূরে আটকে দেওয়া হচ্ছে দর্শনার্থীদের৷

কলকাতার একটি পূজা মণ্ডপে কয়েকজনকে পিপিই পরে নাঁচতে দেখা যাচ্ছে৷ ছবি: Rupak De Chowdhuri/Reuters

যে উদ্যোক্তারা নির্দেশ অমান্য করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হতে পারে৷

করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজো নিয়ে আইনি লড়াইয়ের পর কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, দর্শনার্থীদের মণ্ডপের ভিতর প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না৷ ছোট ও বড় মণ্ডপের ক্ষেত্রে ব্যারিকেডের বাইরে থাকছেন দর্শনার্থীরা৷ ষষ্ঠী-সপ্তমীর অনেক আগে থেকেই যেসব মণ্ডপ প্লাবিত হয় মানুষের স্রোতে, সেই জায়গায় অনেকটাই ফাঁকা-ফাঁকা৷

উত্তরের শ্রীভূমি স্পোর্টিং, দমদম পার্ক থেকে দক্ষিণে একডালিয়া এভারগ্রিন, মুদিয়ালি- সর্বত্রই প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে পুজো হচ্ছে৷

তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

This browser does not support the audio element.

রাজ্য সরকার আগেই বলেছিল, এবার খোলামেলা মণ্ডপ করতে হবে৷ যারা এ ধরনের মণ্ডপ তৈরি করেছে, তাদের বিশেষ সমস্যা নেই যদি না সংকীর্ণ পথের উপর পুজো হয়৷ নলিন সরকার স্ট্রিট, কুমোরটুলি সর্বজনীনের মতো পুজো সরু রাস্তার উপর হওয়ায় উদ্যোক্তারা বিপাকে পড়েছেন৷ যে কমিটিগুলি অন্যান্য বছরের মতো কারুকাজসহ মণ্ডপ করেছে, তাদের হতাশা বেশি৷মণ্ডপের ভিতর দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারছেন না, তার উপর দূর থেকে প্রতিমা নজরে আসছে না৷ এত দ্রুত মণ্ডপ খুলে বিকল্প ব্যবস্থা করারও সময় পেরিয়ে গিয়েছে৷ যোধপুর পার্কের মতো বারোয়ারি পুজো কমিটি অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তারা দুর্গার মূর্তি গাড়িতে চাপিয়ে এলাকা পরিক্রমা করাচ্ছে যাতে শুধু অনলাইনে নয়, বাড়ির বারান্দা থেকেই ঠাকুর দেখা হয়ে যায়৷

এরই মধ্যে নিম্নচাপ হানা দেওয়ায় আকাশের মুখ ভার৷ কোভিড সংক্রমণের আশঙ্কা, মণ্ডপে ঢুকে প্রতিমা দর্শনের অনুমতি না থাকা ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় রাস্তায় মানুষজনের সংখ্যা বেশ কম৷ শহরতলির ট্রেন পরিষেবা বন্ধ থাকায় দূরের জেলা থেকে দর্শনার্থীরা কলকাতায় আসতে পারছেন না৷ তাই কেউ মনে করতে পারছেন না, কবে শহরে এমন নিষ্প্রভ শারদোৎসব হয়েছে৷ খিদিরপুর ভেনাস ক্লাবের পুজোয় উদ্যোক্তারা ‘নো এন্ট্রি' বোর্ড লাগিয়ে দিয়েছেন৷ এই কমিটির সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকজন প্রতিমা দর্শন করতে আসছেন৷ ভিড় নেই বললেই চলে৷ প্রতিবার লম্বা লাইন পড়ে আমাদের মণ্ডপে প্রবেশের জন্য৷ রাত একটা পর্যন্ত আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে যান৷ কিন্তু এই ৭৫তম বছরটাই সাদামাটাভাবে চলে গেল৷’’ বাগবাজার, তেলেঙ্গাবাগান, বোসপুকুর, নাকতলা, বেহালা, ম্যাডক্স স্কোয়্যার-সহ যে সব স্থানে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় দেখা যায়, সেখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা এবার নগণ্য৷

করোনাকালে দুর্গা পূজা

02:37

This browser does not support the video element.

মণ্ডপের ভিতরে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ব্যারিকেডের ওধারে সামাজিক দূরত্বের বিধি সেভাবে মানা হচ্ছে না৷ সেখানে জটলা দেখা যাচ্ছে৷ গোল দাগ কাটা হলেও তার মধ্যে দাঁড়িয়ে প্রতিমা দেখার মতো সুশৃঙ্খল চেষ্টা নজরে পড়ছে না৷ জনতার একাংশ মাস্ক পড়ছে দায়সারাভাবে৷ স্যানিটাইজারের ব্যবহার নেই সর্বত্র৷ খাবার দোকানে ভিড় রয়েছে৷ তাই সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে৷ অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ভাইরাস কি শুধু মণ্ডপের ভিতরেই রয়েছে, বাইরে নেই? বৃহস্পতিবারের হিসেবেও যেখানে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজারের বেশি, সেখানে উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে৷চিকিৎসকদের বক্তব্য, কোভিড চিকিৎসার যে পরিকাঠামো রাজ্যে রয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার হয়ে গিয়েছে৷ সংক্রমণের হার আরো বাড়লে হাসপাতালে জায়গা দেওয়া সম্ভব হবে না৷

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য

This browser does not support the audio element.

সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে৷অনেকেই প্রতিমা দেখতে না পাওয়ায় হতাশ, তবে কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই আপস করতে তারা রাজি৷ নাকতলার বাসিন্দা ঐশী সরকার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সাজগোজ করার সুযোগ নেই৷ মাস্ক পরে পুজো দেখতে হচ্ছে৷ তা-ও প্রতিমাও ঠিক করে দেখতে পাচ্ছি না৷ ঘোরার ইচ্ছেটাই চলে গিয়েছে৷’’ কলকাতা ছাড়িয়ে জেলার বড় শহরগুলিতেও প্রশাসনিক কড়াকড়ি দেখা যাচ্ছে৷ কিন্তু বাংলার গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার মণ্ডপে আদালতের নির্দেশ সেভাবে মানা হচ্ছে না৷

যদিও সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পুজো নিয়ে আইনি লড়াইয়ে যুক্ত আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য৷তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় ভিড় অনেকটাই কম৷অধিকাংশ উদ্যোক্তাই আদালতের নির্দেশ মেনে চলছেন৷ যারা মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হতে পারে৷’’ প্রশাসনের কাজকর্মে অনেকটাই সন্তুষ্ট আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘এটাকে মডেল করে পরবর্তী পুজোগুলিতেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে৷ তা হলে আলাদা করে আদালতের নির্দেশ নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না৷’’

১৬ অক্টোবরের ছবিঘর দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ