মিয়ামির আদালতে গিয়ে ট্রাম্প জানালেন তিনি নির্দোষ। এবার গোপনীয় নথি রাখার অভিযোগে ট্রাম্পের বিচার শুরু হবে।
বিজ্ঞাপন
মিয়ামির হোটেল থেকে বেরিয়ে ট্রাম্পের গাড়ির কনভয় যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল, তখন দুই পাশে প্রচুর মানুষ দাঁড়িয়ে। কারও হাতে ধরা ব্যানার। কারো হাতে ধরা পতাকায় লেখা ট্রাম্প। কারো ব্যানারে ট্রাম্পের ছবি। ছিল বেশ কিছু স্লোগান লেখা ব্যানারও। আবার ট্রাম্পবিরোধী কিছু ব্যানারও ছিল।
আদালত চত্বরে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে কোর্টরুমে ঢুকলেন অ্য়ামেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট। বিচারকের কাছে বললেন, তিনি নির্দোষ। বিচারক জানালেন, ট্রাম্প যেতে পারেন। আবার সমর্থকদের মাঝখান দিয়ে ট্রাম্প বেরোলেন।
বুধবার তার জন্মদিন। ৭৭ বছরে পড়লেন ট্রাম্প। তারই পার্টিতে গেলেন তিনি। তারপর ট্রাম্প লেখা বিমানে করে মিয়ামি ছাড়লেন।
যৌন কেলেঙ্কারি মামলা : ট্রাম্প সমর্থক এবং বিরোধীরা মুখোমুখি
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট হতে পারেন ট্রাম্প৷ মামলার সেরকম রায় অনিবার্য ভেবে বিরোধীরা উৎফুল্ল, তবে ট্রাম্প সমর্থকরা মামলাটিকেই ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ আখ্যা দিয়ে নেমে পড়েছেন রাস্তায়৷
ছবি: Andrew Kelly/REUTERS
‘ট্রাম্পের সময় শেষ’
যৌন সম্পর্কের তথ্য গোপন রাখার জন্য সাবেক এক পর্ন তারকাকে টাকা দিয়েছিলেন- এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে গ্রেপ্তার হতে পারেন ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ম্যানহাটনের আদালতের সামনে যখন ট্রাম্প সমর্থকদের ভিড়, বিরোধীদেরও সরব উপস্থিতি দেখা গেছে তখন৷ অনেকের হাতেই ছিল ‘কংগ্রেসে বাধা’, টিক টক, সময় শেষ’ ইত্যাদি লেখা পোস্টার৷ তাদের প্রত্যেকেই মনে করেন এই মামলার মাধ্যমে ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হতে চলেছে৷
ছবি: Shannon Stapleton/REUTERS
আদালতে কঠোর নিরাপত্তা
যৌন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখার জন্য সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে টাকা দেয়ার অভিযোগের মামলাটির শুনানি শেষ হওয়ার আগেই ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে বাইডেন সরকারের ‘ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে’ রিপাবলিকানদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানান৷ আবার দু বছর আগের ক্যাপিটল হামলার মতো ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় আদালত প্রাঙ্গনে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ৷ ছবিতে আদালতের চারপাশে তল্লাশি চালাচ্ছেন এক পুলিশ সদস্য৷
ছবি: Amanda Perobelli/REUTERS
‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’
মঙ্গলবারের ছবি৷ নিউইয়র্কে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় ট্রাম্প-বিরোধীদের একজন চক দিয়ে লিখে দিয়েছেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ ৷ অর্থাৎ, বার্তাটা খুব সহজ আর তা হলো- অপরাধ করলে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও কারাগারে যেতে হবে, কারণ, আইনের চোখে সবাই সমান৷
ছবি: Shannon Stapleton/REUTERS
সাংবাদিকদের ভিড়
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হতে পারেন, রায়ের সমর্থনে এবং বিরোধিতায় বড় মিছিল হতে পারে- সব মিলিয়ে ম্যানহাটনের আদালত এখন সব সংবাদ মাধ্যমেরই আকর্ষণের কেন্দ্রে৷ আদালতের বাইরে তাই সাংবাদিকদের অধীর অপেক্ষা৷
ছবি: Andrew Kelly/REUTERS
আদালতের সামনে ব্যারিকেড
ম্যানহাটন আদালতের সামনে অস্থায়ী ব্যারিকেড দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা৷
ছবি: Vanessa Carvalho/ZUMA/picture alliance
‘ট্রাম্প বিজয়ী’
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের পরাজয় এবং জো বাইডেনের জয় সার্বিকভাবে মেনে নেননি ডনাল্ড ট্রাম্প৷ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে সমর্থকদের প্রতি বিক্ষোভ মিছিল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ ২০২১ সালে ক্যাপিটলে হামলা তারই পরিণাম৷ রিপাবলিকানদের অনেকে এখনো বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মানতে নারাজ৷ তাদেরই একজন ম্যানহাটনের আদালতের সামনে হাজির হয়েছেন ‘ট্রাম্প জিতেছিলেন’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে৷
ছবি: Mike Segar/REUTERS
‘ট্রাম্প শেষ’
আরেক ট্রাম্পবিরোধীর হাতের ব্যানারে লেখা, ‘ট্রাম্প শেষ’৷ মামলায় শেষ পর্যন্ত কি সত্যিই ট্রাম্প অভিযুক্ত হবেন? সর্বশেষ শুনানিতে আইনজীবী রবার্ট কস্তেলার বক্তব্য সে বিষয়ে কিছুটা সংশয় জাগিয়েছে৷ তিনি বলেছেন, সাবেক পর্ন তারকাকে টাকাটা দিয়েছিলেন ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন৷ কস্তেলার দাবি, মাইকেল কোহেন নিজেই টাকাটা দিতে গিয়েছিলেন, অর্থাৎ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্তটা ট্রাম্পের নয়৷
ছবি: David Dee Delgado/REUTERS
ট্রাম্পের তরুণ সমর্থকদের সমাবেশ
ম্যানহাটনের আদালতের বাইরে নিউ ইয়র্ক ইয়ং রিপাবলিকান ক্লাবের সদস্যদের বিক্ষোভ সমাবেশ৷ সমাবেশের এক পর্যায়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন তারা৷
ছবি: Andrew Kelly/REUTERS
‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ফিরিয়ে নিন, ট্রাম্প’
আদালতের সামনে আরো কয়েকজন ট্রাম্প সমর্থক৷ ২০২৪-এর নির্বাচনে অংশ নিয়ে ট্রাম্প আবার বিজয়ীর বেশে ক্ষমতায় ফিরবেন- এমনই প্রত্যাশা তাদের৷
ছবি: Andrew Kelly/REUTERS
9 ছবি1 | 9
কী অভিযোগ?
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিয়োগ হলো, তিনি হোয়াইট হাউস ছাড়ার সময় বেশ কিছু গোপনীয় নথি সঙ্গে করে নিয়ে গেছিলেন, যা তিনি আইনত করতে পারেন না। এই ফাইল ফাঁস হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিপদের কারণ হতো। এই অভিযোগ প্রমাণ হলে ট্রাম্পের বেশ কয়েক বছর জেল হতে পারে।
ট্রাম্প নিজেকে নিরপরাধ বলার পর এখন কয়েক মাসের মধ্যে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সেসময় ট্রাম্প আবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য প্রচার করবেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিচার শুরু হতে এক বছর লেগে যাবে।
তবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের এইভাবে আদালতে যাওয়ার ঘটনাও অভূতপূর্ব।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের দাবি তার ফ্লোরিডার পাম বিচের বাড়িতে অঘোষিত তল্লাশি চালায় এফবিআই৷ এরপরই ট্রাম্পের সমর্থকেরা তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। বিস্তারিত দেখুন ছবিঘরে
ছবি: David 'Dee' Delgado/REUTERS
উড়িয়ে ধ্বজা
ট্রাম্পের মার-আ-লাগোর বাড়ির সামনে পতাকা উড়িয়ে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন সমর্থকেরা। তাদের দাবি, ট্রাম্পকে ইচ্ছা করে হয়রানি করা হয়েছে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ!
এক সমর্থকের হাতে পোস্টার এবং পতাকা। তাতে এফবিআইকে কটাক্ষ করে লেখা ট্রাম্পই জয়ী হয়েছিলেন। আবার অ্যামেরিকাকে বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জায়গায় নিয়ে যেতে পারেন ট্রাম্পই।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
গাড়িতে পতাকা
মেয়াদ শেষের পরে ফ্লোরিডার বাড়িতে হোয়াইট হাউসের প্রচুর গোপন সরকারি নথি নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে তদন্ত করছে মার্কিন বিচার বিভাগ৷ এদিকে ট্রাম্প পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এফবিআই তল্লাশির প্রতিবাদে গাড়িতে করে ট্রাম্পের বাড়ির সামনে এসেছেন সমর্থকেরা। সেই গাড়িতে থাকা পোস্টারেও ২০২৪-এ ট্রাম্প, আমাকে মিস করছেন বলে ট্রাম্পের ছবি দেয়া পোস্টারও দেখা গিয়েছে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
রিপাবলিকানদের ভোট দিন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন, এফবিআইয়ের এই তল্লাশিতে ট্রাম্পের প্রতি সহানুভূতি বেড়ে গিয়েছে সমর্থকদের। ট্রাম্প ন্যাশনাল গল্ফ ক্লাবের সামনেও পোস্টার হাতে দেখা গিয়েছে এক সমর্থককে। পরবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের ভোট দিয়ে অ্যামেরিকাকে বাঁচান, এমন স্লোগান লেখা রয়েছে পোস্টারে।
ছবি: Eduardo Munoz/ REUTERS
এফবিআইকে কটাক্ষ
এফবিআই দুর্নীতিগ্রস্ত, পাল্টা অভিযোগ করেছেন ট্রাম্পের সমর্থকরা। প্রিয় নেতার বাড়িতে এ জাতীয় তল্লাশি তাদের মোটেও পছন্দ হয়নি। তারা ভাবতেই পারেন না ট্রাম্প কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
মোতায়েন পুলিশ
ট্রাম্পের বাড়ির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এফবিআই সদস্যদের তল্লাশির পর ট্রাম্পের সমর্থকেরা যাতে কোনোরকম বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারেন, সেদিকে নজর রেখেছে পুলিশ।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
লক্ষ্য ২০২৪
ট্রাম্পের দাবি, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে তাকে দূরে রাখতেই এই সব করা হয়েছে। ট্রাম্পের বাড়িতে এফবিআই তল্লাশির প্রতিবাদে সাবেক প্রেসিডেন্টের সমর্থকেরা জড়ো হয়েছিলেন ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে। প্রেসিডেন্ট পদে তাকে দেখতে চান, সমর্থকেরা এমন দাবি জানিয়েছেন।
ছবি: David 'Dee' Delgado/REUTERS
দিনভর প্রতিবাদ
ক্যাপিটলে তার সমর্থকদের উসকানি দেয়ার জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তার মাঝেই অ্যামেরিকাজুড়ে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন বাড়ছে। ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে যুক্তরাষ্ট্রের আরো উন্নতি হবে এমনটাই মনে করে রাতজুড়ে প্রতিবাদ করেন সমর্থকেরা।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
অগাধ আস্থা
ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা সূত্রে খবর, ফেডারেল এজেন্টরা অভিযান চালিয়েছে জরুরি নথির সন্ধানেই। এর অনেকগুলি ট্রাম্প ছিঁড়ে ফেলেছেন বলে অভিযোগ। ট্রাম্প বলছেন, সবটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সমর্থকেরা কিন্তু ট্রাম্পের উপরই আস্থা রাখছেন। ট্রাম্পকে বিশ্বাস করেন তারা, এমন একাধিক পোস্টার সমর্থকদের হাতে দেখা গিয়েছে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
সেলফিও রয়েছে
ট্রাম্পের সমর্থনে তার বাড়ির সামনে রীতিমতো ভিড় করেছেন সমর্থকেরা। হাতে মার্কিন মুলুকের পতাকা, বুকের মধ্যে আঁকড়ে রাখা ট্রাম্পের খবর সংক্রান্ত সংবাদপত্র নিয়ে এক সমর্থককে ছবি তুলতেও দেখা গিয়েছে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
10 ছবি1 | 10
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি নির্দোষ। তিনি যাতে আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াতে না পারেন, তার জন্য এই সব করা হচ্ছে। মামলায় যাই হোক না কেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন।