পাকিস্তানে সংকট
২৬ এপ্রিল ২০১২ রায়ের বিস্তারিত
গিলানির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল আদালত অবমাননার৷ ঘটনার শুরু ২০০৯ সালে, যখন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে থাকা দুর্নীতি মামলাগুলো পুনরায় শুরু করার জন্য সুইজারল্যান্ডের কাছে চিঠি লিখতে প্রধানমন্ত্রী গিলানিকে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট৷ কিন্তু তিনি সেটা করেন নি৷ ফলে গিলানির বিরুদ্ধে আজকের এই রায়৷ এর শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ ছয় মাস কারাদণ্ড ভোগ করার কথা গিলানির৷ এমনকি প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকার যোগ্যতাও হারানোর কথা৷ কেন না সংবিধান অনুযায়ী, কেউ যদি আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হন তাহলে তিনি ব্যক্তি সাংসদ হতে পারেন না৷ কিন্তু গিলানির ক্ষেত্রে সেটা হয়নি৷ এর পরিবর্তে তাঁকে প্রতীকী সাজা দেয়া হয়েছে৷ আদালতের কার্যক্রম মুলতবি হওয়া পর্যন্ত আদালতে থাকতে হয়েছে গিলানিকে৷ এরপর তিনি হাসিমুখে বের হয়ে আসেন৷
বিরোধী দলের প্রতিক্রিয়া
দোষী প্রমাণিত হওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রীর পদ না ছাড়ায় বিরোধী নেতারা গিলানির পদত্যাগ দাবি করেছেন৷ প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগের প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেছেন, আর কোনো সমস্যা তৈরি না করে প্রধানমন্ত্রীর এখনই পদ ছেড়ে দেয়া উচিত৷ সেটা না করে গিলানি যদি সংসদে যোগ দেন তাহলে মুসলিম লিগ তাদের পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে বলে জানান শরিফ৷
উত্তপ্ত রাজনীতি
এর ফলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে৷ কিন্তু এর ফলে অবশ্য সরকার পরিবর্তনের কোনো আশঙ্কা নেই৷ কেননা গিলানি যদি নাও থাকতে পারেন তাহলে তাঁর দল পাকিস্তান পিপলস পার্ট অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে পারবে৷ তবে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিলানি আপিল করবেন বলে জানা গেছে৷ এতে করে মামলাটি আরও অনেকদিন চলতে পারে৷ এদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল ইরফান কাদির বলেছেন, আদালতের রায় যাবে স্পিকারের কাছে৷ তিনি যদি মনে করেন রায়টা ঠিক আছে তাহলে সেটা পাঠিয়ে দেবেন নির্বাচন কমিশনের কাছে৷ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে স্পিকার আবার গিলানির নিজের দলেরই লোক৷ সেক্ষেত্রে রায়টা আদতে গিলানির প্রধানমন্ত্রীত্বের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা সেটা পরিষ্কার নয়৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক, (এএফপি, রয়টার্স)
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়