1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার আদিবাসী

২৫ জানুয়ারি ২০১৮

রাঙামাটির বিলাইছড়িতে ধর্ষণের ঘটনাটি ‘আর্মির পোশাক পরা' লোকজন ঘটিয়েছে বলে ঘটনার শিকারদের উদ্ধৃত করে অভিযোগ করেছেন চাকমা রানি ইয়েন ইয়েন৷ সেনাবাহিনী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে, আটক হয়েছে আনসারের এক সদস্য৷

Symbolbild Protest gegen Vergewaltigung
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/E. McGregor

বিলাইছড়িতে ২১ জানুয়ারি রাতে দুই মারমা সহোদরা ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হন৷ এঁদের একজন ১৮ বছরের তরুণী, যিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছে৷ আর তাঁর ১৪ বছরের কিশোরী বোন হয়েছেন যৌন নির্যাতনের শিকার৷ সেনাবাহিনীর সার্চিং অপারেশন চলাকালে এই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ৷ এই মুহূর্তে এঁরা দু'জন রাঙামাটি সদর হাসাপাতালে আছেন৷ হাসপাতাল ছাড়তে চাইলেও তাঁদের সেখানে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও জানা গেছে৷ হাসপাতালে তাঁদের দেখতে যাওয়া মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বঞ্চিতা চাকমা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তাদের একজন ধর্ষণের শিকার হয়েছে৷ অথচ এখনো কোনো মামলা হয়নি৷ তারা ভয়ের মধ্যে আছেন৷ জেলা প্রশাসক একটা প্রতিবেদন দেবেন৷ ঐ প্রতিবেদনের পরে আমরা পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেব৷’’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘দুই বোনের মধ্যে একজন বাংলায় কথা বলতে পারে না, চাকমাও পারে না৷ ছোট বোন কিছুটা বাংলা বলতে পারে৷ সে জানিয়েছে যে, আর্মিরা ছিল ওখানে৷ আর্মি করেছে বলে জানিয়েছে সে৷’’

বঞ্চিতা চাকমা

This browser does not support the audio element.

মেয়েটি পোশাকের কোনো বর্ণনা দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ওরা আর্মির পোশাকের কথা বলেছে৷’’

এদিকে রাঙামাটি সার্কেল প্রধান রাজা দেবাশীষ রায় রাঙামাটি সদর হাসপাতালে ঐ দুই বোনকে দেখতে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর একটি ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘‘তাঁদের ভাষ্য অনুসারে, যা আমি অনুবাদের মাধ্যমে জানলাম, তাঁদের একজন ধর্ষিত হয়েছেন দু'জন সেনাসদস্য দ্বারা (প্রাপ্ত বয়স্ক বড় বোন, যিনি কেবল মারমা ভাষায় কথা বলেন এবং অপরজন যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন, একই ব্যক্তিদের দ্বারা)৷’’

দেবাশীষ রায়ের সঙ্গে হাসপাতালে যান তাঁর স্ত্রী এবং চাকমা রানি ইয়েন ইয়েন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সদস্য বঞ্চিতা চাকমা৷ চাকমা রানি ইয়েন ইয়েন আলাদা আরেকটি ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘‘তারা বলেছে, আর্মিদের পোশাক পরা লোকরা চর্ট লাইট নিভিয়েছে, কথা বলতে দেয় নাই৷’’

রানি ইয়েন ইয়েনের দাবি, ‘‘অনেক বাধা পেরিয়ে তাদের রাঙামাটি সদর হাসপাতালে যেতে হয়৷ তারা সেখানে যাতে না যেতে পারেন, সেজন্য নানা ধরনের অজুহাত দেখানো হয়৷ এমনকি তাদের সঙ্গে মারমা ভাষায় কথা বলতেও বাধা দেয়া হয়৷ হাসপাতালে ওই দুই বোনকে সব সময় ঘিরে আছে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা৷’’

দেবাশীষ রায়

This browser does not support the audio element.

রাজা দেবাশীষ রায় ডয়চে ভেলেকে টেলিফোনে বলেন, ‘‘তাঁরা বলেছেন, ‘সেটা সেনা না খাকি কাপড় তা আমরা জানি না৷’ তবে তাদের ভাষায় তারা যে শব্দটা বলেছে বাংলায় অনুবাদ করলে সেনা দাঁড়ায়৷ আসলে সেটা সেনা, না বিজিবি, না পুলিশ, না আনসার, সেটা তো আমরা বলতে পারব না৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘ঐ দুই বোন এখন হাসপাতালে আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় আছেন৷ কোনো মামলা হয়নি৷ আমরা মানবাধিকার কমিশনকে অনুরোধ করেছি তাঁদের যেন আইনজীবী দেয়া হয়৷ মারমা ভাষা জানেন এমন আইনজীবীও আছেন৷’’

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের পরিচালক কর্ণেল রাশেদুল হাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সেনা সদস্যরা সেখানে সার্চ করছিল৷ কিন্তু যেখানে সার্চ করছিল, মেয়েরা সেই বাড়ির না৷ ওটা তার আশেপাশের একটা বাড়ি, যে বাড়িতে একজন আনসার সদস্য ঢুকেছিল৷ আনসার সদস্য যখন ওখানে ঢোকে, তখন মেয়েগুলো চিৎকার করে ওঠে৷ চিৎকার করার পর পরই আমাদের আর্মির পেট্রোলে যারা ওখানে ছিল, তারা ছুটে যায় এবং আনসার সদস্যকে আটক করে৷ তাকে আটক করে আনসার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং সেই আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷’’

আফজাল হোসেন

This browser does not support the audio element.

রাঙামাটির শিলছড়ি ১০ আনসার ব্যাটেলিয়নের কমান্ডিং অফিসার আফজাল হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সেবাহিনীর সার্চিং অভিযানে আনসার সদস্যরাও তাদের সহায়তায় যোগ দিয়েছিল৷ ঐ বাড়িতে পরনো সদস্য আছে কিনা তা দেখতে সার্চ চলছিল৷ আনসারের সুবেদার গিয়াস উদ্দিন তা দেখতে ঘরের মধ্যে লাইট মারে৷ সেখানেই মেয়ে দু'জন ছিল৷ ছিল তাদের ছোট ভাইও৷ তারা অস্ত্রবাহী লোকজন দেখে চিৎকার ও কান্নকাটি শুরু করে৷ আনসার সদস্য ঘরের ভিতরে ঢুকেছিলেন আর একজন সেনাসদস্য বাইরে গেটে দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ সার্চ করা ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য তাঁদের ছিল না৷ আমরা আনসার সদস্যকে ক্লোজড করেছি৷’’

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ভুক্তভোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে৷ কর্তব্যরত নার্সের সাথে কথা বলে যেটা জেনেছি, দুই বোনের মধ্যে একজনের অবস্থা খারাপ৷ তবে প্রকৃত ঘটনা কী ঘটেছে তা জানতে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হবে৷’’

চাকমা রানি ইয়েন ইয়েন রাঙামাটির সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমি তাদের সাথে কথা বলে জেনেছি যে, সন্ত্রাসীদের তল্লাশি চালানোর নামে ঐ ব্যক্তিরা ঘরে প্রবেশ করে৷ এ সময় ছোট বোনকে যৌন হয়রানি করা হয় এবং বড় বোনকে ধর্ষণ করা হয়৷’’ এ কথা তিনি ফেসবুক পোস্টেও বলেন৷

আপনার কী মনে হয়? এই ঘটনার পিছনে সত্যিই কি সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে? জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ