1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুসলিম ফ্যাশনের প্রদর্শনী

২০ জুন ২০১৯

ফ্যাশন শো বা ব়্যাম্প ওয়াকের কথা শুনলে যে দৃশ্য মনের পর্দায় ভেসে ওঠে, বাস্তব জগতে তার ব্যতিক্রমও রয়েছে৷ জার্মানিতে এক অভিনব প্রদর্শনীতে মুসলিম ফ্যাশনের হাল হকিকত তুলে ধরে হচ্ছে৷

Deutschland Muslim Fashion in Frankfurt
ছবি: DW/A. Hakimi

জার্মানির একটি মিউজিয়ামে সমসাময়িক মুসলিম ফ্যাশনের একটি প্রদর্শনী চলছে৷ আধুনিক হলেও তাতে শালীনতার ছাপ রয়েছে৷ তবে এটি কোনো সাধারণ ফ্যাশন শো নয়৷ ফ্রাংকফুর্ট শহরের অ্যাপ্লায়েড মিউজিয়ামে এই ব্যতিক্রমী প্রদর্শনীর মাধ্যমে শালীন অথচ আধুনিক মুসলিম পোশাক তুলে ধরার চেষ্টা চলছে৷ ইউরোপের কোনো মিউজিয়ামে এখনো পর্যন্ত এমন কোনো অনুষ্ঠান দেখা যায় নি৷

ফ্রাংকফুর্টের অ্যাপ্লায়েড মিউজিয়ামের প্রধান মাটিয়াস ভাগনার কে এই প্রদর্শনীকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘এই প্রদর্শনীতে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া তো বটেই, সেইসঙ্গে ইউরোপের অনেক দেশ, অ্যামেরিকা, ইংল্যান্ডের মুসলিম ডিজাইনারদের কাজও তুলে ধরা হচ্ছে, যেখানে মুসলিমরা সংখ্যালঘু৷''

এই প্রদর্শনীতে ৮০ জনেরও বেশি ডিজাইনারের সৃষ্টি করা পোশাক শোভা পাচ্ছে৷ গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রানসিস্কো শহরে প্রথমবার এই প্রদর্শনী হয়েছিল৷ এই প্রদর্শনীতে মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পাকিস্তানের স্টাইলের প্রবণতারই সবচেয়ে বেশি প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে৷

জার্মানিতে মুসলিম ফ্যাশনের প্রদর্শনী

03:49

This browser does not support the video element.

তবে এর মধ্যে বেশ কিছু পোশাক ইউরোপীয় ও মার্কিন ফ্যাশান ডিজাইনারদের হাতে তৈরি৷ ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সি তরুণীরাই এমন পোশাকের সম্ভাব্য ক্রেতা হতে পারেন৷ ডিজাইনার হিসেবে নাওমি আফিয়া মনে করেন, পোশাক আশাকে শালীনতা প্রত্যেকের নিজস্ব রুচির পরিচয়মাত্র৷ নাওমি বলেন, ‘‘আমার মতে, ‘শালীনতা' অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয়৷ এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি মানুষের নিজস্ব সংজ্ঞা রয়েছে৷ কেউ কেউ পুরো শরীর ঢাকতে চান, কেউ বা শুধু হাঁটু পর্যন্ত আবরণ চান৷ আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বিষয়টি সত্যি অত্যন্ত ব্যক্তিগত৷''

আধুনিক ফ্যাশনের বাজারে কিছু লেবেল ‘শালীন অথবা শোভন পোশাক' হিসেবে পরিচিত৷ মুসলিম নারী মাথা ঢাকতে বেশ জটিলভাবে হিজাব পরেন৷ তবুও এটা মানতেই হবে, যে আজকের জগতে ‘শালীন অথবা শোভন পোশাক'-এর সংজ্ঞা ধর্ম, সংস্কৃতি ও সমাজ অনুযায়ী বদলে যায়৷ শালীন পোশাকের ধারার উদ্দেশ্য ক্রেতাদের জন্য এমন পোশাক সৃষ্টি করা, যা নারীর শরীর ঢাকে৷ তবে এমন সব পোশাকের প্রেরণা কিন্তু ধর্ম থেকে নয়, বরং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য থেকে আসে৷

মুসলিম নারীদের সাঁতারের পোশাক বুরকিনি এমন ধারার জোরালো বৈশিষ্ট্য৷ প্রদর্শনীতে ক্রীড়ার পোশাককেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ মার্কিন তরবারি চালক ইবতিহাজ মহম্মদের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নাইকি কোম্পানির ‘প্রো হিজাব' ধারা সম্প্রতি মুসলিম ক্রেতাদের কাছে বিশাল সাফল্য পেয়েছে৷

তবে শালীন ফ্যাশানের এই ধারাকে কেন্দ্র করে সমালোচনা ও বিতর্কও কম হচ্ছে না৷ নিষেধাজ্ঞা ও সমালোচনার ফলে নারীবাদী মোনা হায়দারের মতো এই প্রবণতার অনুগামীরা প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন৷ তাঁদের মতে, নারীর বেছে নেওয়ার অধিকারের মধ্যেই শালীনতা প্রকাশ পায়৷ একটি ভিডিওতে হায়দার হিজাব নিয়ে সেই বিতর্ক তুলে ধরেন৷

‘শালীন ফ্যাশন' শিল্পক্ষেত্র দ্রুত ফুলে ফেঁপে উঠছে৷ গোটা বিশ্ব জুড়ে মুসলিমদের ফ্যাশন নিয়ে কোটি কোটি ডলার মূল্যের ব্যবসা চলছে৷ অদূর ভবিষ্যতে এক্ষেত্রে আরও প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাষ রয়েছে৷ ‘সমসাময়িক মুসলিম ফ্যাশন' প্রদর্শনীর কিউরেটর জিল ডালেসান্দ্রো বলেন, নারীরা ফ্যাশনের পেছনে বছরে প্রায় ৪,৪০০ কোটি ডলার ব্যয় করেন৷ এই প্রবণতা নাকি বেড়েই চলেছে৷

ইউরোপ যে সহিষ্ণুতা ও জাতি-ধর্ম-বর্ণের সম্প্রীতির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, ‘সমসাময়িক মুসলিম ফ্যাশন' প্রদর্শনী তারই ইঙ্গিত৷

আতিফ বালোচ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ