1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আনিস ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করা হোক'

১ ডিসেম্বর ২০১৭

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)-র মেয়র আনিসুল হক বৃহস্পতিবার রাতে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন৷ তাঁর মৃত্যুতে দেশের প্রতিটি অঙ্গণের মানুষ শোক জানিয়েছেন৷

আনিসুল হক
ছবি: bdnews24.com/Asif Mahmud Ove

পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, মরদেহ শনিবার ঢাকায় নিয়ে এসে আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজা শেষে তাঁকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে৷ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিলের মেয়র নির্বাচনে তিনি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন৷ তবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবেও তিনি বিপুল জনপ্রিয় ছিলেন৷

আশির দশকে আনিসুল হক বাংলাদেশ টেলিভিশনে জনপ্রিয় উপস্থাপক হিসেবে পরিচিতি পান৷ তাঁর উপস্থাপনায় বিটিভির ঈদের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান আনন্দমেলা, রাজনীতিবিষয়ক অনুষ্ঠান ‘মুখোমুখি'সহ বেশ কিছু অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন৷ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎকার নিয়ে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি৷ তাঁর মৃত্যুতে তাই প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা ও শোক জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে৷

লেখক ও সাংবাদিক আনিসুল হক ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘আনিসুল হককে আমার মনে হতো, এই শহরের সবচেয়ে সুন্দর মানুষ৷ নামের মিল নিয়ে কত মজা আমরা করেছি৷ আনিস ভাই আমাদের চারপাশটাকে সুন্দর করার সংগ্রামে শহিদ হয়ে গেলেন৷''

রহমান রাশেদ লিখেছেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, যে কাজই করছেন, সেই কাজে, সেই পদে সবার আগে ব্যক্তিকে মানানসই হতে হবে৷ মেয়র আনিসুল হককে মানাতো৷ মানলো না কেবল ভাগ্য! সাজানো হলো না এই অগোছালো শহর৷''

বিবিসি বাংলার সাংবাদিক আফরোজা নীলা লিখেছেন, ‘‘ছোটবেলায় যে দু-তিনজন মানুষের উপস্থাপনা দেখে চোখ আটকে যেত৷ অনেক মানুষের দোয়া আছে আপনার সঙ্গে, যেখানেই থাকুন ভালো থাকুন, প্রিয় উপস্থাপক৷''

রফিকুল্লাহ রোমেল জানিয়েছেন, তাঁর স্বপ্ন ছিল আনিসুল হকের মতো হবেন৷ লিখেছেন, ‘‘আমাদের প্রজন্ম বড় বিরুদ্ধ সময়ে শৈশব পার করেছে৷ তখনকার পাঠ্যপুস্তকে বঙ্গবন্ধুর নাম ছিল অনুচ্চারিত৷ টিভির পর্দায় দেখা যায় এমন ক'জনের মধ্যে তিনি ছিলেন অনন্য....দুর্ভাগ্যবশত এবং দুর্ঘটনাক্রমে বাংলাদেশের মিডিয়ায় এক দিনের জন্য হলেও সবচেয়ে বড় সেলিব্রিটি হওয়ার অভিজ্ঞতা আমার আছে৷ সেই রাতে একবার মনে হয়েছিল, সত্যি সত্যি সেলিব্রিটি হতে হলে একজন আনিসুল হক হতে হবে বড় হয়ে৷''

সাংবাদিক বুলবুল আহসান লিখেছেন, ‘‘অনেক প্ল্যান, অনেক সাহসী ভাবনা, কিছুই শেষ হলো না আনিস ভাই, শেষ হলো আপনার পথ চলা !!! থমকে দাঁড়ালাম, কিন্তু আবার পথ হাঁটবো – নিশ্চয়ই পাশে থাকবেন৷''

ক্রীড়া সাংবাদিক ও কবি রুহুল মাহফুজ জয়ও একই কথা লিখেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘আনিসুল হক খুব অল্প সময়ে দেখিয়েছিলেন, অন্যরা যা ভাবতেও পারে না, ঢাকায় সেসব বাস্তব করা সম্ভব৷ এই নগরবাসীর আপনাকে অন্তত দশ বছর দরকার ছিল৷ ঢাকাবাসী সত্যিই হতভাগা৷ ঢাকা আপনাকে মিস করবে৷ পরপারে ভালো থাকুন৷''

চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছেন, তাঁর ভীষণ মন খারাপ লাগছে৷ লিখেছেন, ‘‘আনিস ভাই, কত কিছু লিখে কেটে দিলাম৷ মনে হচ্ছিলো কোনোটাতেই যা বলতে চাই, বলা হচ্ছে না৷ ভালো থাকবেন আপনি৷''

ওয়ালী উল্লাহ বদরুল সবাইকে আনিসুল হকের মতো করে বাঁচার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন এই ব্যক্তিটি আজ আমাদের মাঝে আর নেই৷ কিন্তু ওনার কাজকর্মের মাধ্যমে তিনি আজীবন আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন৷ আসুন, চেষ্টা করি তাঁর মতো করে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকার৷''

সাংবাদিক সুপ্রীতি ধর লিখেছেন মেয়র আনিসুল হকের স্বপ্নের কথা৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘ইতর, বর্বর, অসভ্য রাজনীতির এই দেশে অনেকটা স্বপ্নই দেখিয়েছিলেন মেয়র আনিসুল হক৷ তিনি বলেছিলেন, মানুষ সংঘবদ্ধ হলে অনেক কিছুই পাল্টে দেয়া সম্ভব৷ শুনে ভাবছি, কী বোকাই না ছিলেন তিনি! এখানে সৎ মানুষেরা কখনও সংঘবদ্ধ হয়? অসৎদের মাঝ থেকে তাই তো বিদায় নিতে হলো তাঁকে৷''

সংগীত শিল্পী বাপ্পা মজুমদার লিখেছেন, ‘‘প্রিয় আনিসুল হক এর অপ্রত্যাশিত মৃত্যুতে আমি ও আমরা শোকাহত৷''

সংগীত শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু লিখেছেন, ‘‘শুধু হারিয়ে ফেলছি একে একে  আপন বলতে যাঁরা ছিলেন আমাদের চারপাশে ছায়া হয়ে৷ এমন ভীষণ শ্রদ্ধার আরো একজন আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন৷''

সাংবাদিক সুলতানা রহমান লিখেছেন, ‘‘ঢাকার মানুষকে আকাশ দেখাতে চেয়েছিলেন আনিস ভাই৷ ক্ষমতাধরদের বিলবোর্ড সরিয়ে আকাশ কিছুটা উন্মুক্ত করেছিলেন৷ তাঁর ইচ্ছে ছিল বিজয় সরণিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উল্টোদিকের দেয়ালঘেরা পার্কটি উন্মুক্ত করার, যেন ঢাকার মানুষ সবুজ দেখতে পায়৷ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে থাকা ওই পার্কের দেয়াল সরিয়ে আনিস ভাইয়ের ছোট্ট একটি স্বপ্নপূরণ করা হোক৷''

নোয়াম রহমান দীর্ঘদিন মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত৷ তিনি লিখেছেন, মেয়র সাহেবকে তিনি খুব কাছে থেকে দেখেছেন৷ লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের আরও অনেক কিছু পাওয়ার ছিল মেয়র আনিসুল হকের কাছ থেকে৷ একজন বিবেকবান, অসাধারণ মানুষ ছিলেন তিনি৷ খুব কাছ থেকে দেখে শিখেছি, স্বপ্ন কীভাবে দেখতে হয়, স্বপ্নগুলোকে কীভাবে বাস্তবে রূপ দিতে হয়, কীভাবে লালন করতে হয়, অদম্য ইচ্ছা শক্তি দিয়ে জীবনকে জয় করা মানুষটা সত্যিই একটা সার্থক মানুষ৷ বাংলাদেশের মানুষের মনে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে তাঁর অনিন্দ্য সুন্দর মুখচ্ছবি৷ আপনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মতো সাধারণ মানুষের মনে,জনম জনম৷''

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ