আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল
৬ জানুয়ারি ২০০৯এরপরও ইসরায়েলকে সমর্থন করে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লু বুশ বলেন : নিজেদের রক্ষা করার জন্য ইসরায়েলীদের গাজা আক্রমণের যথার্থতা আমি উপলব্ধি করতে পারি৷ গাজা অঞ্চলে সংঘাত হামাস সৃষ্ট৷ তারা দিনের পর দিন রকেট হামলা অব্যাহত রেখে গাজার নিরহ মানুষকে হত্যা করে চলেছিল৷ ইসরায়েল তাই এবার তার বদলা নিতে চায়৷
প্রসঙ্গত, স্থল হামলা শুরুর পর গাজাকে কার্যত দুইভাগে ভাগ করে বিচ্ছিন্ন করে দেয় ইসলায়েলী সেনারা৷ ইতিমধ্যেই শহরের অধিকাংশ ঘেরাও এবং উত্তরাঞ্চল দখল করে ফেলেছে তারা৷ আর শহরের বাইরে চলছে তুলকালাম যুদ্ধ৷ শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার সকালে গাজার উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে বোমা-বিস্ফোরণের খবরও পাওয়া গেছে৷ শোনা যাচ্ছে, ইসরায়েলী সৈন্যরা এবার গাজার ঘণবসতিপূর্ণ এলাকার দিকে স্থলপথে হামলা চালাচ্ছে৷
তাই স্বাভাবিকভাবেই, চরম মানবিক সংকটে পড়েছে গাজাবাসী৷ সাহায্য কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় গাজায় খাবার, পানীয় জল এবং ওষুধপত্রের অভাব তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে৷ এমনকি নিহতদের দাফনের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবও দেখা দিচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক রেডক্রসসহ বিভিন্ন সাহায্যসংস্থা৷ এদিকে, হতাহতদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকায় হিমসিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলি৷ অন্যদিকে, এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৮০ জন হামাস জঙ্গি আটক হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলী সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র৷
এমতাবস্থায় ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ মালকি জানান : ফিলিস্তিনিরা, বিশেষ করে আরব বিশ্ব বিশ্বাস করুক আর না করুক, আমরা সত্যিই একটি যুদ্ধবিরোতি চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছি৷ এমন একটি চুক্তির জন্য – যা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ রক্ষাতেও সহায়ক হবে৷
কিন্তু, ফ্রান্স হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেলেও, এখনো পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি৷ বরং, সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসেবে এবং ইসরায়েলীদের নিরাপত্তার জন্য গাজায় হামলা চালানো হচ্ছে বলে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আবারো নাকচ করে দিয়েছেন ইসরায়েলী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিপি লিভনি৷
অপরদিকে, যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মতি আসতে এতো দেরী হতে থাকায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন৷ তাঁর কথায় : বিশ্ব নেতাদের প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের আরো বহু কিছু করতে হবে৷ গাজা সমস্যার একটি দ্রুত ও যথার্থ সমাধানসূত্র বের করাই হবে আমাদের প্রধান কাজ৷ তাই নিরাপত্তা পরিষদের উচিৎ যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন করা এবং এ অঞ্চলে চিরস্থায়ী শান্তির বন্দবস্ত করা৷ জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে আমি এ কাজে সর্বতভাবে সাহায্য করার অঙ্গীকার করছি৷
উল্লেখ্য, সেই উদ্দেশ্যে গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বান কি মুন মধ্যপ্রাচ্যে নিয়োজিত বিশেষ প্রতিনিধিদের একটি বৈঠকের জন্য ডেকে পাঠিয়েছেন বলে প্রকাশ৷