বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘‘চলমান সংকট সমাধানের চাবিকাঠি সরকারের হাতে৷'' ওদিকে আওয়ামী লীগের বক্তব্য, ‘‘বিএনপি এখন আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যায় নেমেছে''৷
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার বিকেলে খালেদা জিয়া তাঁর গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘যৌক্তিক পরিণতিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে৷ সাহসিকতার মাধ্যমে সবাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করলে আন্দোলন সফল হবে৷''
তিনি বলেন, ‘‘সংকট সমাধানের চাবিকাঠি ক্ষমতাসীনদের হাতে৷ তাই সংকট নিরসনের মাধ্যমে তারা সেই কাঙ্খিত জাতীয় ঐক্যের পথ খুলে দিতে পারে৷ তাহলেই আমরা সংকটমুক্ত হয়ে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে জাতির ৪৫তম স্বাধীনতা দিবস পালন করতে পারবো৷ আমি আশা করি, ক্ষমতাসীনদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে৷ তারা সমঝোতার পথে ফিরে আসবে৷ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যমান সংকট দ্রুত নিরসনের উদ্যাগ নেবে৷''
খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘দেশ আজ গভীর সংকটে৷ এই সংকট রাজনৈতিক৷ এর স্রষ্টা আওয়ামী লীগ, নির্দিষ্ট করে বললে শেখ হাসিনা৷ জনগণের সম্মতি ছাড়া রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়েছেন তিনি৷ আওয়ামী লীগ একতরফা সিদ্ধান্তে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাদ করে দেয়৷ সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সুযোগই তারা রাখেনি৷''
অবরোধ-হরতালে বিপর্যস্ত জনজীবন
বাংলাদেশে টানা অবরোধ ও হরতালের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা৷ ক্রেতার অভাবে বেচাকেনা প্রায় শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে৷ শুধু অর্থনীতি নয়, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় মুষড়ে পড়েছে পরিবহন ও শিক্ষা ব্যবস্থাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন
পুরনো ঢাকার বাবু বাজারে কাগজ বোঝাই একটি ট্রাকে জ্বলছে দুষ্কৃতিকারীদের দেয়া পেট্রোল বোমার আগুন৷ গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে চলছে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ৷ ডাকা হচ্ছে হরতালও৷ অবরোধ-হরতালে সবচেয়ে আলোচিত পেট্রোল বোমা৷ শুধু পেট্রোল বোমার আগুনেই পুড়ে মরেছে কমপক্ষে ৬৫ জন সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুলিশ প্রহরায় চলছে পরীক্ষা
ঢাকার মতিঝিল আইডিয়িাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পুলিশ প্রহরা৷ চলমান এ অবরোধ-হরতালে যাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তার মধ্যে শিক্ষার্থীরা অন্যতম৷ বর্তমানে সারা দেশে চলা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন তাই অনেকটাই অনিশ্চয়তার মুখে৷ টানা অবরোধের মধ্যে ছুটির দিনগুলোতে চলছে পরীক্ষা৷ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
দূরপাল্লার বাস নেই বললেই চলে
বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলির ডাকা অবরোধে বাংলাদেশের প্রধান সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিত্ত৷ দুপুর বেলায় তোলা এ ছবিতে মহাসড়কটি প্রায় যানবাহন শূন্য৷ কিন্তু সাধারণ সময়ে এ সড়কটি থাকে যানবাহনে ভরা৷ বাংলাদেশে চলমান অবরোধে দূর পাল্লার গাড়ি চলাচল কমে গেছে বহুলাংশে৷ একের পর এক পেট্রোল বোমার ঘটনায় ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাচ্ছেন না অনেক মালিকই৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিজিবি-র টহল পর্যাপ্ত নয়
অবরোধের মধ্যে বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোয়, মানে ঢাকার বাইরে বিজিবি-র টহল থাকলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য৷ এছাড়া সম্প্রতি রাত ন’টার পরে বাস চলাচলে সকলকে নিরুৎসাহ করার কারণে বাস মালিকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঢাকায় অস্বাভাবিক নয় যানজট
বাংলাদেশে চলমান এই অবরোধে ঢাকার ভেতরের সড়কের দৃশ্য অবশ্য আলাদা৷ যান চলাচল অন্যান্য সময়ের চেয়ে তুলনামূলক কম হলেও, অনেক জায়গাতেই যানজট দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসযাত্রীরা
ঢাকার ফার্মগেটে অফিস শেষে গাড়ির অপেক্ষায় বাড়িমুখী মানুষের ভিড়৷ টানা অবরোধে গণ পরিবহন ব্যবস্থা বেহাল হলেও, অর্থাৎ গাড়িঘোড়ার চলাচল কম থাকাতে দুর্ভোগ বেড়েছে অফিসমুখী ও অফিস ফেরত মানুষের৷ অফিসে যেতে বা অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে সাধারণ মানুষ তাই পড়ছেন দুর্ভোগে৷
ছবি: DW/M. Mamun
অবরোধে নদীপথের ভিন্ন চিত্র
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদীবন্দর ঢাকার সদরঘাটের চিত্র এটি৷ গত একমাসেরও বেশি সময়ের এই অবরোধে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উল্লেখযোগ্য বড় কোনো সহিংসতা ঘটেনি নদীপথে৷ তাই নদীপথে যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিকই আছে৷ ঢাকা থেকে প্রধানত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোয় নৌ-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি৷
ছবি: DW/M. Mamun
যাচ্ছে না দূরপাল্লার বাসগুলো
বিএনপি ও সমমনা দলের জোটসমূহের ডাকা হরতাল-অবরোধে ঢাকার অন্যতম প্রধান বাস স্টেশন গাবতলীর দৃশ্য এটি৷ বেশিরভাগ দূর পাল্লার রুটের বাসই এ স্টেশনে পার্ক করে রাখা৷ হরতাল-অবরোধে দূর পাল্লার বাস চলাচল অনেকাংশেই বন্ধ আছে বাংলাদেশে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খদ্দেরহীন এক রেস্তোরাঁ
ঢাকার গাবতলী বাস স্টেশনের খদ্দেরশূন্য মোহাম্মাদীয়া রেস্তোরাঁ৷ অবরোধের কারণে এ রেস্তোরাঁর লোকবল ১৬ জন থেকে ৮ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে৷ বাকি যে আটজন আছেন তাঁদেরও নিয়মিত বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না মালিক৷ গাবতলী স্টেশন থেকে দূর পাল্লার বাস চলাচল কম থাকায় এ রেস্তোরাঁটি দিনের বেশিরভাগ সময় খালি থাকছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাড়ি ফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষ
অবরোধ আর হরতালকারীদের প্রধান লক্ষ্য সড়কে চলাচলকারী বাস আর ট্রাক৷ বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো হামলার ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগেই যাত্রীবাহী বাস কিংবা ট্রাকে৷ এতে কমপক্ষে ৬০ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে পোড়ায় ক্ষত শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছেন আরো শতাধিক সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
কমলাপুর রেল স্টেশনে অপেক্ষায় যাত্রীরা
অবরোধে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল করলেও, সময়সূচি ঠিক রাখতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ৷ বিভিন্ন সময়ে অবরোধকারীদের রেল লাইনের ‘ফিশপ্লেট’ খুলে ফেলার কারণে কয়েকটি ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনায় ট্রেনের গতি কমিয়ে চালাতে হচ্ছে৷ তাই বেশিরভাগ ট্রেনই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন৷
ছবি: DW/M. Mamun
খেটে খাওয়া মানুষের দুর্দশা
টানা অবরোধ-হরতালে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ফুটপাথের ভ্রাম্যমাণ দোকানদাররা৷ স্বল্প পুঁজির এ সব ব্যবসায়ীদের বিক্রি কমে যাওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে অনেকেরই৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুঁজি ভেঙে চলছে যাঁর সংসার
ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকার ফুটপাথে কম্বলের ব্যবসা করেন গাজীরুল ইসলাম৷ দুপুরবেলা পর্যন্ত এ দিন তাঁর বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৭’শ টাকার একটি কম্বল৷ তাও তার কেনা দামের থেকে ৩০০ টাকা কম৷ লাভ তো দূরের কথা সংসার চালাতে এখন পুঁজি টুকুনিই ভরসা৷
ছবি: DW/M. Mamun
অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রই যখন ভরসা
ঢাকার নবাবপুর থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নিয়ে ফিরছেন এক গাড়ি চালক ও তাঁর সহকারী৷ টানা অবরোধ-হরতালে পেট্রোল বোমার ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা হিসেবে নিজেদের গাড়িতে এখন থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখবেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
14 ছবি1 | 14
সংবাদ সম্মেলনে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়াসহ চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে কিছু দাবি তুলে ধরেন বেগম জিয়া৷ তিনি বলেন, ‘‘গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি, গুম-খুন-অপহরণ ও পুলিশি হয়রানি বন্ধ, মামলা প্রত্যাহার, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি, সভা-সমাবেশের ওপর বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য দ্রুত সংলাপের আয়োজন করতে হবে৷''
বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা রাখা হয়নি৷ তাই আমরা আন্দোলনের পথই বেছে নিয়েছি৷'' তিনি নেতাক-র্মীদের নিজ নিজ এলাকায় আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘যাঁরা এখনো নিষ্ক্রিয় আছেন তাঁরা সক্রিয় হন৷''
দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের মুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘সালাহ উদ্দিন আহমেদকে মুক্তি দিন৷ অন্যথায় পরিণতি শুভ হবে না৷''
আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া
এদিকে খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পর পরই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ৷ তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি ২০১৪ সালে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে এখন আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যায় নেমেছে৷''
তিনি ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের সময় বিএনপির বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ায় সময়ে ১৪২ জন সাধারণ মানুষকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করেছে তারা৷ সহিংস কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল বিএনপি৷ এ অভিযোগে খালেদা জিয়াকে বিচারের মুখোমুখি করা যেতে পারে৷''
অস্থির বাংলাদেশ
বাংলাদেশে দশম সংসদীয় নির্বাচনের বছরপূর্তিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ এতে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে৷ ৫ই জানুয়ারি রাজনৈতিক অস্থিরতার কয়েকটি ছবি পাবেন এখানে৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com
অবরুদ্ধ খালেদা
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশান কার্যালয়ে আটকে রেখেছে পুলিশ৷ যদিও সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, তবে সোমবার তিনি বাইরে যেতে চাইলে পুলিশ তাঁর গেটে তালা লাগিয়ে দেয়৷ ফলে অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গেটের মধ্যেই৷
ছবি: AFP/Getty Images
অবরোধ ঘোষণা
অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন৷ গুলশানের কার্যালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আজ আমাদের কালো পতাকা কর্মসূচি ছিল৷ সমাবেশ করতে দেওয়া হয় নাই৷ পরবর্তী কর্মসূচি না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলবে৷’’
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
খালেদার কার্যালয় ঘিরে পুলিশ
প্রসঙ্গত, গত দু’দিন ধরে খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ৷ ছবিতে পুলিশে একটি গাড়ি রাস্তায় আড়াআড়িভাবে রেখে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এভাবে আরো কয়েকটি বালু এবং ইটভর্তি ট্রাকও রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/Landov
গাড়িতে আগুন
রবিবার থেকেই ঢাকায় সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছিল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও সমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অটল থাকে বিএনপিসহ বিশ দল৷ ঢাকায় একটি সিএনজি এবং মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ছবি এটি৷ বিএনপি সমর্থকরা এটা করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com
পার্ক করা গাড়িতে আগুন
পার্ক করে রাখা একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিচ্ছে বিএনপির সমর্থকরা৷ ছবিটি ঢাকা থেকে তোলা৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
রাজপথে সরব আওয়ামী লীগ
পুলিশ সভা, সমাবেশ নিষিদ্ধ করলেও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হন৷ বিষয়টি সমালোচনা করে ফেসবুকে সাংবাদিক প্রভাষ আমিন লিখেছেন, ‘‘...নিষেধাজ্ঞা কি শুধু বিএনপির জন্য? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তো দেখি শহরজুড়ে মিছিল করছে, উল্লাস করছে, গান শুনছে, গান গাইছে৷’’ ছবিতে ঢাকায় বিএনপির এক সমর্থককে পেটাচ্ছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
‘শান্তির পথে আসুন’
এদিকে সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বিএনপি নেত্রীকে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তবে মধ্যবর্তী নির্বাচনের যে দাবিতে বিএনপিসহ বিশদল আন্দোলন করেছে, সেই দাবির প্রতি কোন নমনীয়তা দেখাননি তিনি৷ হাসিনা মনে করেন, সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেয়াটা বিএনপির রাজনৈতিক ভুল ছিল৷
ছবি: Oli Scarff/Getty Images
‘একতরফা’ নির্বাচন
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ নেয়নি৷ সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোন ভোটাভুটি হয়নি৷ বাকি আসনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশ কম৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেটিকে ‘একতরফা’ নির্বাচন আখ্যা দিয়েছে৷
ছবি: DW
8 ছবি1 | 8
হানিফ অভিযোগ করেন, ‘‘জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলেই খালেদাও ভোটে আসেননি৷ কারণ বিএনপি-জামায়াত একে অপরের বন্ধু৷ বন্ধুকে ছাড়া খালেদা কীভাবে নির্বাচনে যাবেন?''
তিনি বলেন, ‘‘বন্ধুর মন রক্ষা করতে নির্বাচনে না গিয়ে এখন সহিংসতা চালিয়ে দেশের মানুষকে হত্যা করছে বিএনপি-জামায়াত৷ সরকার সহিংসতা আর জঙ্গিবাদের কাছে মাথা নত করবে না৷ যারা পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হতে পারে না৷''
প্রসঙ্গত, ৩রা জানুয়ারি থেকে গুলশান কার্যালয়ে আছেন খালেদা জিয়া৷ ৫ই জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের বছরপূর্তিতে নয়া পল্টনে প্রতিবাদ সমাবেশে যেতে না পেরে তিনি ৬ই জানুয়ারি থেকে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেন৷ এরপর যুক্ত হয় টানা হরতাল৷ টানা অবরোধ-হরতালের শুক্রবার ছিল ৬৭তম দিন৷
৬ই জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ-হরতাল শুরু হওয়ার পর এটি খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় সংবাদ সম্মেলন৷ তিনি সর্বশেষ ৫৩ দিন আগে ১৯শে জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে৷