ইরানে আশ্রয় নেয়া আফগানদের দেশে ফিরতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন৷ গতমাসের শেষ সপ্তাহে ২৮ হাজারের বেশি আফগানকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে ইরান৷
বিজ্ঞাপন
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম বলছে, এ বছর ১০ লাখের বেশি আফগানকে ইরান থেকে দেশে পাঠানো হয়েছে৷ অক্টোবরের ২১ থেকে ২৭ তারিখের মধ্যে ২৮ হাজার ১১৫ জন আফগান দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে তারা৷
চলছে আফগানদের আফগানিস্তান ত্যাগ
প্রায় পুরো আফগানিস্তানই এখন তালেবানের দখলে৷ ফলে সারা দেশে আর যুদ্ধ পরিস্থিতি নেই৷ তারপরও প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে সীমান্তের দিকে ছুটছে হাজার হাজার আফগান৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
সপরিবারে ‘বন্ধুত্ব ফটকে’
তালেবান শাসন থেকে নিজেদের দূরে রাখতে তল্পিতল্পা নিয়ে পাকিস্তান সীমান্তের ‘ফ্রেন্ডশিপ গেটে’ চলে এসেছে একটি আফগান পরিবার৷ চমন শহর লাগোয়া এই গেট পার হলেই পাকিস্তানে প্রবেশ করবেন তারা৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
তালেবানের পাহারা
গত ২ সেপ্টেম্বর সংবাদ মাধ্যমকে পাকিস্তানের তোর্কহাম শহর সংলগ্ন সীমান্তে নিয়ে যায় তালেবান৷ সীমান্তে তখন এভাবেই অস্ত্র হাতে পাহারা দিচ্ছিলেন এক তালেবান যোদ্ধা৷
ছবি: Gibran Peshimam/REUTERS
দেশ ছাড়তে মরিয়া
যানবাহনের অভাবে অনেক মানুষ হেঁটেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সীমান্তে পৌঁছাচ্ছেন৷ ছবির এই কয়েকজন সেই তুলনায় ভাগ্যবান৷ তাই একটা ভ্যানের ছাদে উঠে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রাতেও খুশি তারা৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
যাচাই-বাছাই
ফ্রেন্ডশিপ গেটের দৃশ্য৷ আফগানিস্তান থেকে আসা এক ব্যক্তির সব কাগজপত্র পরীক্ষা করছেন এক পাকিস্তানি সেনা৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
চিকিৎসার জন্য
আফগানদের পাকিস্তানে প্রবেশ অবশ্য নতুন কিছু নয়৷ অনেক আফগান চিকিৎসার জন্যও পাকিস্তানে যান৷ ছবির এই মেয়েটিও ফ্রেন্ডশিপ গেট দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করছে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হবার আশায়৷
ছবি: Gibran Peshimam/REUTERS
ইরান সীমান্তে...
অনেক আফগান আবার প্রতিবেশী দেশ ইরানেও যাচ্ছেন৷ ছবির এই নারী ইরানের রাজাভি খোরাসান প্রদেশের কাছের সীমান্তে পৌঁছে ক্লান্ত হয়ে রাস্তার মাঝেই বসে পড়েছেন৷
ছবি: Majid Asgaripour/WANA/REUTERS
তালেবান পাহারায় পাকিস্তানে প্রবেশ?
তোর্কহাম শহর সংলগ্ন সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশের অপেক্ষায় এক দল আফগান৷ সশস্ত্র এক তালেবান যোদ্ধাকেও দেখা যাচ্ছে ছবিতে৷
ছবি: Gibran Peshimam/REUTERS
শরণার্থীর জীবন শুরুর প্রস্তুতি
একটি পরিবার আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানের চমন শহরে এসে পৌঁছেছে৷ আপাতত নিশ্চিন্ত তারা৷ তাই চলছে তাঁবু বানিয়ে বসবাস শুরুর প্রস্তুতি৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
ইরান সীমান্তে পরিচয় পরীক্ষা
ইরানের রাজাভি খোরাসান প্রদেশের দোওকারুন শহর সংলগ্ন সীমান্তে আসা আফগানদের পাসপোর্ট পরীক্ষা করে দেখছেন এক ইরানি কর্মকর্তা৷
ছবি: Majid Asgaripour/WANA/REUTERS
অস্থায়ী শরণার্থী শিবির
পাকিস্তানের চমন শহরের নানা জায়গায় গড়ে উঠছে আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের ছোট ছোট শিবির৷ ওপরের ছবিতে তারই একটি৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
সপরিবারে ইরানে
রাজাভি খোরাসান প্রদেশের দোওকারুন সংলগ্ন সীমান্তে এসে ইরানে প্রবেশের অপেক্ষায় একটি আফগান পরিবার৷
ছবি: Majid Asgaripour/WANA/REUTERS
11 ছবি1 | 11
আগস্টের মাঝামাঝি তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সে দেশে ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না৷ ফলে আফগানিস্তানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এই অবস্থায় আরও আফগান দেশে ফেরায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ত্রাণকর্মীরা৷
জাতিসংঘে ইরানের দূত মজিদ তাখত গতমাসে বলেছিলেন, নতুন কোনো আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়াই তারা আফগান শরণার্থীদের দেখাশোনা করছেন৷ ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ভাহিদি গতমাসে ইরানে আর না যেতে আফগানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ কারণ হিসেবে তিনি ‘ধারণক্ষমতা সীমিত' বলে জানিয়েছিলেন৷
ইরানের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটে আছে৷ এই অবস্থায় আফগানদের দেখাশোনা করা ইরানের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে৷
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, ২০২০ সালে ইরান ৩৪ লাখের বেশি আফগানকে আশ্রয় দিয়েছে৷ এর মধ্যে শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় আট লাখ৷ এছাড়া ২০ লাখের বেশি আফগান অভিবাসী ছিল যাদের তথ্য নথিভুক্ত করা নেই৷
তালেবানের সাংবাদিক নির্যাতন
02:10
বার্তা সংস্থা এএফপি ইরান-আফগানিস্তান সীমান্ত ও নিকটবর্তী হেরাত শহরে ইরান থেকে ফেরা ২০ জন আফগান নাগরিকের সঙ্গে কথা বলেছে৷ তারা অভিযোগ করেছে, যাদের দেশে ফেরার টাকা নেই তাদের বিভিন্ন কেন্দ্রে আটক করে রাখে ইরানি কর্তৃপক্ষ৷ অনেকসময় মারধর করা হয় বলেও তারা অভিযোগ করেছে৷ এছাড়া আটক কেন্দ্রের খারাপ অবস্থার ছবি যেন কেউ তুলতে না পারে সেজন্য মোবাইলও নিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ৷ তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি এএফপি৷ জাতিসংঘের সংস্থাগুলোও এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চায়নি৷