1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজআফগানিস্তান

আফগানদের সেমিফাইনাল: এ কি রূপকথা?

২৬ জুন ২০২৪

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইট পর্বে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে আফগানিস্তান৷ এটা একদিকে একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কিন্তু অন্যদিকে?

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ
সেমিফাইনালে ওঠার পথে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশকে হারিয়েছে আফগানিস্তানছবি: RANDY BROOKS/AFP

ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জনের এক দশকেরও কম সময়ের মধ্যে নিজেদের দলকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন আফগানরা৷ অধিনায়ক রশিদ খান সেখানে একটি নাম, যিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার৷ গুরবাজ, নাভিন, ফারুকীদের মতো এমন আরো অনেক খেলোয়াড় তৈরি করেছে তারা৷

সেমিফাইনালে ওঠার পর রশিদ বলেন, ‘‘অবিশ্বাস্য৷ অনুভূতি ব্যক্ত করার কোনো ভাষা নেই আমার৷ এ অর্জনে দেশে সবাই খুব খুশি৷''

অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশকে হারিয়ে ক্যারিয়ারের এমন অর্জন নিশ্চিত করতে গিয়ে তাকে অবশ্য তালেবানদের দখলে থাকা নিজ দেশ থেকে পরিবারসহ দূরে থাকতে হয়েছে৷ তাদের হোম ম্যাচ খেলতে হচ্ছে আরব আমিরাতে৷ ২০২১ সালে তালেবান ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে৷

এ অর্জন কতটা ইতিবাচক?

পুরুষদের খেলার ক্ষেত্রে এ অর্জন তো ইতিবাচকই বটে৷ খেলাধুলা নিয়ে একটা সাধারণ আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তালেবান সরকার তাদের আন্তর্জাতিক পরিসরে খেলার সুযোগ দিচ্ছে৷ কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন নয়৷ আগের তালেবান আমলের পর নারীদের ক্রিকেট দল এ খেলায় বেশ আগ্রহী হয়ে ওঠে৷ গত দুই দশকে তারা অনেকটাই এগিয়ে যায়৷ কিন্তু ২০২১ সালে সব শেষ হয়ে যায়৷ তখন নারীদের অনেক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়৷

২০২১ সালে তৎকালীন আফগান নারী ক্রিকেট পরিচালক টুবা সাঙ্গার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে কোনো ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি না৷ তারা আমাদের খেলতে দেবে না৷ তালেবান যেখানে নারীদের মৌলিক অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হচ্ছে, সেখানে ক্রিকেট খেলা অনেক দূরের বিষয়৷''

আইসিসি কী বলছে?

ক্রিকেটের পরিচালনা পর্ষদ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল বা আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, আফগানিস্তান তাদের সদস্য থাকতে পারে না৷ কারণ এক, সদস্য দেশগুলোতে অবাধ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে৷ কিন্তু এক্ষেত্রে সেটি প্রযোজ্য হচ্ছে না৷ কারণ তালেবানের প্রভাব স্পষ্ট এবং অনেক খেলোয়াড়কেও তালেবান সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবিতে দেখা গেছে৷

তারওপর আইসিসির নির্দেশনা হলো, দেশে নারীদের খেলারও সুব্যবস্থা ও সাংগঠনিক পরিস্থিতি থাকতে হবে৷ সেটি আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে একেবারেই প্রযোজ্য নয়৷

অন্য দেশগুলোর কী অবস্থা?

অন্য দেশগুলো কোনো উচ্চবাচ্য ছাড়াই আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলে যাচ্ছে৷ অবশ্য টুর্নামেন্ট ছাড়া আফগানরা বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলার সুযোগ কম পায়৷ অস্ট্রেলিয়া অবশ্য ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিয়েছে৷ তারা আফগানদের বিপক্ষে একটি সিরিজ না খেলার সিদ্ধান্ত জানায়৷ এর কারণ তালেবানরা নিজ দেশে নারীদের অধিকার হরণ করছে৷

মার্চে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া জানায়, ‘‘গত বারো মাসে আমরা অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সঙ্গে আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ করেছি৷ সরকার আমাদের জানিয়েছে, আফগানিস্তানে নারীদের অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে৷''

এর জবাবে রশিদ খান বলেছিলেন, তিনি খুবই ‘দুঃখ পেয়েছেন' এই ঘটনায়৷

তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা খেলেন জানিয়ে বলেন, ‘‘আপনি আমার সতীর্থদের সঙ্গে খেলতে চান না অথচ আমার সঙ্গে খেলতে চান৷ তাহলে সমস্যাটা কোথায়? এর অর্থ আমি আমার সতীর্থদের ছোট করছি, আমার দেশকে ছোট করছি৷''

ক্রিকেটের রাজনীতি কেমন?

আইসিসি এর আগেও এমন পরিস্থিতিতে পড়েছে৷ শ্রীলঙ্কাকে কিছুদিনের জন্য সরকারি হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে নিষিদ্ধ করেছিল৷ তার আগে জিম্বাবোয়েও ২০১৯ সালে এমন নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়৷

আইসিসি সবচেয়ে বড় অবস্থান সম্ভবত নিয়েছিল সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৯৭০ থেকে ১৯৯১ সালের মাঝামাঝি৷ সে সময় তাদের দেশে ‘অ্যাপারথাইড' বা বর্ণবাদের চূড়ান্ত রূপ বিরাজ করছিল৷

ম্যাট পিয়ারসন/জেডএ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ