আফগান-ক্যানাডিয়ান শিল্পী মোজদাহ জামালজেদাহ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তার নারীবাদী গানের কথা৷ তালেবান আবারো আফগানিস্তান দখল করে নেয়ায় হতাশও তিনি৷
বিজ্ঞাপন
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে তিন দশক আগে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন মোজদাহ জামালজেদাহ৷ পরিবারের সঙ্গে প্রথমে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন পাকিস্তানে৷ তারপর আশ্রয় পান ক্যানাডায়৷ বর্তমানে ভ্যাঙ্কুভারে থাকেন তিনি৷
সম্প্রতি ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘দ্য ওপরাহ অব আফগানিস্তান' হিসেবে পরিচিত জামালজেদাহ আফগানিস্তানে তার তারকাখ্যাতি এবং দেশটিতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে মতামত জানিয়েছেন৷
রাজনৈতিক বিভিন্ন ইস্যু এবং নারী অধিকার নিয়ে গান গেয়ে আফগানিস্তানে খ্যাতি অর্জন করেন জামালজেদাহ৷ এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার বক্তব্য সবাইকে জানাতে এবং নারীদের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সংগীত বেছে নেই৷ আমি আফগান জনতাকে জানাতে চেয়েছি যে নারীরা সমাজের একটি বড় অংশ এবং তারা সবসময়ই এরকম ছিল৷''
অতীতে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর পুরুষরা নারী এবং পরিবারের সদস্যদের উপর নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷
চলছে আফগানদের আফগানিস্তান ত্যাগ
প্রায় পুরো আফগানিস্তানই এখন তালেবানের দখলে৷ ফলে সারা দেশে আর যুদ্ধ পরিস্থিতি নেই৷ তারপরও প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিতে সীমান্তের দিকে ছুটছে হাজার হাজার আফগান৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
সপরিবারে ‘বন্ধুত্ব ফটকে’
তালেবান শাসন থেকে নিজেদের দূরে রাখতে তল্পিতল্পা নিয়ে পাকিস্তান সীমান্তের ‘ফ্রেন্ডশিপ গেটে’ চলে এসেছে একটি আফগান পরিবার৷ চমন শহর লাগোয়া এই গেট পার হলেই পাকিস্তানে প্রবেশ করবেন তারা৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
তালেবানের পাহারা
গত ২ সেপ্টেম্বর সংবাদ মাধ্যমকে পাকিস্তানের তোর্কহাম শহর সংলগ্ন সীমান্তে নিয়ে যায় তালেবান৷ সীমান্তে তখন এভাবেই অস্ত্র হাতে পাহারা দিচ্ছিলেন এক তালেবান যোদ্ধা৷
ছবি: Gibran Peshimam/REUTERS
দেশ ছাড়তে মরিয়া
যানবাহনের অভাবে অনেক মানুষ হেঁটেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সীমান্তে পৌঁছাচ্ছেন৷ ছবির এই কয়েকজন সেই তুলনায় ভাগ্যবান৷ তাই একটা ভ্যানের ছাদে উঠে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রাতেও খুশি তারা৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
যাচাই-বাছাই
ফ্রেন্ডশিপ গেটের দৃশ্য৷ আফগানিস্তান থেকে আসা এক ব্যক্তির সব কাগজপত্র পরীক্ষা করছেন এক পাকিস্তানি সেনা৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
চিকিৎসার জন্য
আফগানদের পাকিস্তানে প্রবেশ অবশ্য নতুন কিছু নয়৷ অনেক আফগান চিকিৎসার জন্যও পাকিস্তানে যান৷ ছবির এই মেয়েটিও ফ্রেন্ডশিপ গেট দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করছে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হবার আশায়৷
ছবি: Gibran Peshimam/REUTERS
ইরান সীমান্তে...
অনেক আফগান আবার প্রতিবেশী দেশ ইরানেও যাচ্ছেন৷ ছবির এই নারী ইরানের রাজাভি খোরাসান প্রদেশের কাছের সীমান্তে পৌঁছে ক্লান্ত হয়ে রাস্তার মাঝেই বসে পড়েছেন৷
ছবি: Majid Asgaripour/WANA/REUTERS
তালেবান পাহারায় পাকিস্তানে প্রবেশ?
তোর্কহাম শহর সংলগ্ন সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশের অপেক্ষায় এক দল আফগান৷ সশস্ত্র এক তালেবান যোদ্ধাকেও দেখা যাচ্ছে ছবিতে৷
ছবি: Gibran Peshimam/REUTERS
শরণার্থীর জীবন শুরুর প্রস্তুতি
একটি পরিবার আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানের চমন শহরে এসে পৌঁছেছে৷ আপাতত নিশ্চিন্ত তারা৷ তাই চলছে তাঁবু বানিয়ে বসবাস শুরুর প্রস্তুতি৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
ইরান সীমান্তে পরিচয় পরীক্ষা
ইরানের রাজাভি খোরাসান প্রদেশের দোওকারুন শহর সংলগ্ন সীমান্তে আসা আফগানদের পাসপোর্ট পরীক্ষা করে দেখছেন এক ইরানি কর্মকর্তা৷
ছবি: Majid Asgaripour/WANA/REUTERS
অস্থায়ী শরণার্থী শিবির
পাকিস্তানের চমন শহরের নানা জায়গায় গড়ে উঠছে আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের ছোট ছোট শিবির৷ ওপরের ছবিতে তারই একটি৷
ছবি: Saeed Ali Achakzai/REUTERS
সপরিবারে ইরানে
রাজাভি খোরাসান প্রদেশের দোওকারুন সংলগ্ন সীমান্তে এসে ইরানে প্রবেশের অপেক্ষায় একটি আফগান পরিবার৷
ছবি: Majid Asgaripour/WANA/REUTERS
11 ছবি1 | 11
বিদেশি বাহিনী আফগানিস্তানে থাকাকালে ২০০৯ সালে দেশটিতে ফিরে যান মোজদাহ জামালজেদাহ৷ বাবার লেখা গান গেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠলে এক সময় কাবুলের একটি টেলিভিশন চ্যানেল তাকে একটি শো হোস্ট করার জন্য নিয়োগ দেয়৷ নারীবাদ, শিশু অধিকারসহ নানা ইস্যু তুলে ধরা শোটি রাতারাতি জনপ্রিয়তা অর্জন করে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান তিনি৷
জামালজেদাহ বলেন, ‘‘অনুষ্ঠানটি জনপ্রিয় হয়ে উঠলে আমি অনেক হুমকিও পেতে শুরু করি৷ বিশেষ করে গৃহনির্যাতন এবং বিভিন্ন ট্যাবু টপিক নিয়ে কথা বললে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে৷ আমাকে হুমকি দেয়া হয়৷ কেউ কেউ আমাকে এসব বিষয় নিয়ে আর না আগাতে পরামর্শ দেন৷''
একপর্যায়ে গুজব রটে যে জামালজেদাহকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে৷ তিনি যে টেলিভিশন চ্যানেলে কাজ করতেন, সেখানে ফোন করে কেউ একজন এই তথ্য জানায়৷ অথচ তিনি তখন ক্যানাডায় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছিলেন৷ এধরনের গুজব ছড়ানোর পরও অবশ্য কাবুলে ফিরে যান তিনি৷ কিছুদিন কাজও করেন৷ তবে, একপর্যায়ে আর আগানো সম্ভব হয়নি৷
জামালজেদাহ বলেন, ‘‘২০১২ সালে আমি আফগানিস্তান ত্যাগ করি৷ আমার শোও শেষ হয়ে যায়৷ তার বলেছিল পরিস্থিতি শান্ত হলে আমি আবার ফিরে যেতে পারি৷''
আফগান নারীদের কণ্ঠস্বর যখন দেয়াল ফুটে ওঠে
শামসিয়া হাসানি আফগানিস্তানের প্রথম গ্রাফিতি ও স্ট্রিট আর্ট শিল্পী হিসাবে তুলে ধরছেন আফগান নারীদের কথা৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
ছবি: Shamsia Hassani
কে এই শিল্পী?
২০১৪ সালে ফরেন পলিসি পত্রিকার বিশ্বের ১০০ শীর্ষ চিন্তাবিদদের তালিকায় উঠে আসে আফগান এই খ্যাতনামা শিল্পীর নাম৷ শামসিয়া হাসানি উত্তর অ্যামেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বহু দেশে আমন্ত্রিত শিল্পী হিসাবে প্রশংসা কুড়োন তার আগেই৷ ১৯৮৮ সালে ইরানে আফগান শরণার্থীদের পরিবারে জন্মানো হাসানি ২০০৫ সালে দেশে ফিরে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিত্রকলা নিয়ে পড়াশোনা করেন৷
ছবি: Shah Marai/AFP/Getty Images
নতুন করে আলোচনায় হাসানি
আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা তালেবান গোষ্ঠীর হাতে উঠে আসার পর নতুন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সোচ্চার হন শামসিয়া হাসানি৷ অল্প সময়েই ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে শামসিয়ার দুটি দেওয়াল চিত্রের ছবি৷ সাথে, কাবুলের বাসিন্দা হাসানির নিরাপত্তার প্রার্থনা উঠে আসে ফেসবুক, টুইটারের মন্তব্যে৷
ছবি: Shah Marai/AFP/Getty Images
‘দুঃস্বপ্ন’
ছবিতে দেখা যাচ্ছে হাসানির ’নাইটমেয়ার’ বা দুঃস্বপ্ন শীর্ষক চিত্রটি৷ ৯ আগস্ট যখন আফগানিস্তান আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে তালেবানের হাতে, হাসানি সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন এক নারীর ছবি৷ ছবির নারীকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছে কয়েকজন পুরুষ৷ তার হাতে ধরা বাদ্যযন্ত্র, গায়ে বোরকা৷
ছবি: Shamsia Hassani
আফগান নারীদের অবস্থা
তালেবান সমর্থকদের বিধিনিষেধ বা আক্রমণের শঙ্কায় রাস্তাঘাটে দেখা যাচ্ছে না নারীদের৷ বহু শিল্পীও একই ভয়ে মুছে ফেলছেন তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপস্থিতি৷ হাসানি কিছু দিন নীরব থাকায় তার ভক্তদের মধ্যে প্রশ্ন ওঠে তার নিরাপত্তা নিয়ে৷ তবে ডয়চে ভেলেকে তার ম্যানেজার জানিয়েছেন যে তিনি নিরাপদে আছেন৷
ছবি: Shamsia Hassani
দ্বিগুণ ঝুঁকিতে নারী শিল্পীরা
নব্বইয়ের দশকের মতো আবার বাড়তি ঝুঁকিতে থাকবেন আফগান নারী শিল্পীরা, এমনই মত বহু বিশেষজ্ঞের৷ শরিয়া আইনের সাথে সাংঘর্ষিক শিল্পচর্চায় রত নারীদের জন্য রয়েছে ঝুঁকি৷ হাসানির শিল্পে বারবার উঠে এসেছে আফগান নারীদের সমাজের সাথে লড়াইয়ের আখ্যান৷
ছবি: Shamsia Hassani
কেন গ্রাফিতি
২০১০ সালে পড়াশোনা শেষ করার পর থেকেই গ্রাফিতিকে নিজের পছন্দের মাধ্যম হিসাবে বেছে নেন হাসানি৷ গণপরিসরে নারীদের লড়াই ও তাদের হার না মানা স্বভাবের কথা তুলে ধরতে চান তিনি৷ ফলে, তার পছন্দের ক্যানভাস রাস্তার বা যে কোনো গণপরিসরের দেওয়াল৷
ছবি: Shamsia Hassani
তালেবানের বিরুদ্ধে
২০২০ সালের নভেম্বেরের একটি চিত্রে হাসানি বলেন বিধ্বংসী হামলার পরের দৃশ্যের গল্প৷ কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে তালেবান হামলার ফলে যে হাহাকার সৃষ্টি হয় মানুষের মধ্যে, তা ফুটে উঠেছে হাসানির সাম্প্রতিক কাজে৷ ধারাবাহিক সিরিজের ছবিতে ছিল হামলায় মৃত এক সন্তানসম্ভবা মায়ের মৃত্যুর ছবি৷
ছবি: Shamsia Hassani
হাসানির নারীরা যেমন
শিল্পী জানান যে, তার ছবিতে নারী চরিত্রের মুখে সব সময় ফুটে ওঠে আশা, স্বাধীনতা, ভয়, প্রতিবাদ ও বিরহ৷ সব ছবিতেই মুখহীন থাকে এই নারী চরিত্ররা, যা আফগান সমাজে নারীদের মত প্রকাশের অভাব বা সিদ্ধান্তহীনতার প্রতীক৷ ‘‘আমার নারীদের চোখ বন্ধ থাকে, কারণ, সে ভবিষ্যৎ দেখতে অপারগ, কিন্তু সে অন্তর থেকে অন্ধ নয়’’, বলেন হাসানি৷
ছবি: Shamsia Hassani
হাসানির ভবিষ্যৎ
২০১৮ সালে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শামসিয়া বলেন, ‘‘আমি গণপরিসরকে ভয় পাই, কারণ, যে কোনো সময় হামলা হতে পারে৷ আমি সব সময় সতর্ক থাকি৷ আমার কাজের মাধ্যমে মানুষের কাছে ভাবনা পৌঁছাতে পারবো, তাদের চিন্তাধারা বদলাতে পারবো হয়তো৷’’ সোশাল মিডিয়ায় এখনো সোচ্চার হাসানি, সরে আসেননি ভার্চুয়াল দেয়াল থেকে৷
ছবি: Shah Marai/AFP/Getty Images
9 ছবি1 | 9
তারপরও মাঝে মাঝে আফগানিস্তানে গিয়ে বিভিন্ন শো এবং কনসার্ট করেছেন মোজদাহ জামালজেদাহ৷ কিন্তু স্থায়ীভাবে দীর্ঘসময় দেশটিতে আর থাকেননি তিনি৷
সোশ্যাল মিডিয়া জনপ্রিয় হয়ে উঠলে সেখানেও পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন তিনি৷ ইউটিউব এবং ফেসবুকে তার ভিডিও লাখ লাখ মানুষ দেখেন৷
জামালজেদাহ বিশ্বাস করেন, আফগানিস্তানে বিদেশি বাহিনীর অবস্থানকালে মানুষের মধ্যে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছিল, নারী অধিকার নিয়ে সচেতনতা বেড়েছিল৷ কিন্তু এখন তালেবান ক্ষমতায় ফেরায় পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে আবার৷
তিনি বলেন, ‘‘যে বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে ভীতসন্ত্রস্ত করে তাহচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারী অধিকার নিয়ে যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছিল তা আবার শূণ্যে ফেরত যাবে৷ কেননা, তালেবান আবারো সেসবের উপর প্রভাব বিস্তার করবে৷''
আফগান নারীদের সোনালি অতীত
তালেবান শাসনামলে মেয়েদের জন্য বোরকা বাধ্যতামূলক করা হয় আফগানিস্তানে৷ অথচ আফগানিস্তানে এমন একটা সময়ও ছিল, যখন সে দেশের মানুষ, বিশেষ করে নারীরা পশ্চিমা পোশাকে অভ্যস্ত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
উচ্চাকাঙ্খী চিকিৎসকরা
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দু’জন নারী মেডিসিন শিক্ষার্থীকে দেখা যাচ্ছে এক অধ্যাপকের সঙ্গে মানবদেহের একটি অংশ পরীক্ষা করতে৷ ছবিটি ১৯৬২ সালে তোলা৷ সে’সময় আফগান সমাজে নারীদের একটি সক্রিয় ভূমিকা ছিল৷ তখন তাঁদের শিক্ষার সুযোগ যেমন ছিল, তেমনই বাড়ির বাইরেও ছিল অবাধ বিচরণ৷
ছবি: Getty Images/AFP
পাশ্চাত্যের পোশাক কাবুলের রাস্তায়
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি রেডিও স্টেশনের বাইরে হাঁটছেন পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক পরা দুই নারী৷ ১৯৬২ সালে তোলা ছবি এটি৷ কিন্তু উগ্র ইসলামপন্থি তালেবান গত শতকের নব্বইয়ের দশকে ক্ষমতা গ্রহণের পর, সব কিছু বদলে যায়৷ আর সব কিছু ঢাকা যায়, এমন বোরকা পরে জনসমক্ষে যেতে বাধ্য করা হয় নারীদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবার জন্য সম অধিকার - সবসময় নয়
গত শতকের সত্তরের দশকে আফগান শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে মেয়েদের বিচরণ স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল৷ কিন্তু তার মাত্র ২০ বছর পর শিক্ষাকেন্দ্রে মেয়েদের যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়৷ ২০০১ সালে তালেবানের পতনের পর পরিস্থিতি আবার কিছুটা বদলেছে৷ ২০০৩ সালে আফগান সংবিধানে নারী ও পুরুষ উভয়ের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/Hulton Archive/Zh. Angelov
কম্পিউটার প্রশিক্ষণ
কাবুল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে আফগান শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন একজন সোভিয়েত প্রশিক্ষক৷ ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত – অর্থাৎ এই দশ বছর আফগানিস্তান সোভিয়েতদের দখলে ছিল৷ তাই সেই সময়টায় আফগান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বহু অধ্যাপক অধ্যাপনা করেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP
শিক্ষার্থীদের ঘোরাফেরা
১৯৮১ সালে তোলা এই ছবিটিতে আফগান ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে৷ ১৯৭৯ সালে সোভিয়েতরা আফগানিস্তানে হামলা চালালে যুদ্ধ শুরু হয় এবং তা দশ বছর ধরে চলে৷ পরবর্তীতে, ১৯৮৯ সালে, সোভিয়েতরা দেশটি ছেড়ে গেলে গৃহযুদ্ধ শুরু হয় আফগানিস্তানে৷ এই গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে ১৯৯৬ সালে, তালেবানের ক্ষমতাগ্রহণের মধ্য দিয়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP
সবার জন্য স্কুল
সোভিয়েতদের অধিকৃত আফগানিস্তানের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছবি এটি৷ তবে তালেবানের শাসনামল শুরু হওয়ার পর আফগান মেয়েদের স্কুলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়৷ এমনকি বাড়ির বাইরে কাজ করাও নিষিদ্ধ ছিল তাঁদের৷
ছবি: Getty Images/AFP
তেমন কিছু বদলায়নি
এই ছবিটি ১৯৮১ সালে তোলা৷ হিজাব, বোরকা ছাড়া এক মা তাঁর সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় হাঁটছেন৷ এমন দৃশ্য এখন আর আফগানিস্তানে দেখা যায় না৷ এমনকি তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১৫ বছর পরেও না!